আস্থাভোটে সহজ জয়! কুর্সি দখল করে ফের ঝাড়খণ্ডের মন্ত্রিসভা গড়লেন হেমন্তই

Hemant Soren: সোমবার বিধানসভায় সেই আস্থা ভোটে জিতে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি। মোট ৭৬ সদস্যের বিধানসভায় ৪৫টি ভোট পেয়েছেন হেমন্ত।

জমি দুর্নীতি সংক্রান্ত আর্থিক লেনদেনের মামলায় অবশেষে জামিন পেয়েছেন হেমন্ত সোরেন। ইতিমধ্য়েই ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন চম্পাই সোরেন। গত বৃহস্পতিবারই সরকার গড়ার জন্য রাজ্যপালের অনুমতি চেয়েছিলেন হেমন্ত। সূত্রের খবর, সেই অনুমতিও দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সোমবার আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার ছিল হেমন্তের।

গত ৪ জুলাই রাঁচির রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন হেমন্ত। তার পরে বিধানসভার একটি বিশেষ অধিবেশন ফ্লোর টেস্ট হয় হেমন্ত সোরেনের। রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে মহাগাঠবন্ধনে রয়েছে হেমন্ত সোরেনের পার্টি জেএমএম। এর আগেও রাজ্যের দখল বিজেপির হাতে চলে যাওয়ার পরিস্থিতি হয়েছে। সে সময় কোনও মতে বিজেপির হাত থেকে রাজ্যকে বাঁচিয়েছিলেন হেমন্ত।

আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা, হেমন্ত ফিরতেই সরে দাঁড়ালেন চম্পাই

গত জানুয়ারি মাসে জমি দুর্নীতি মামলায় ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন হেমন্ত। তার পর থেকে তিনি বন্দি ছিলেন রাঁচির বিরসা মুন্ডা জেলে। সম্প্রতি হাইকোর্টে সেই মামলায় জামিনে মুক্তি পান হেমন্ত। ভয় ছিল, ইডি যে কোনও মুহূর্তে ইডি সুপ্রিম কোর্টে সেই জামিনের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে। তবে তেমন কিছু হয়নি। বরং জেল থেকে বেরোতে না বেরোতেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন চম্পাই। জায়গা ছেড়ে দিয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে। ওই দিনই ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার পরিষদীয় নেতাও নির্বাচিত হন হেমন্ত।

সোমবার বিধানসভায় সেই আস্থা ভোটে জিতে পুনরায় মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছিনিয়ে নিয়েছেন তিনি। মোট ৭৬ সদস্যের বিধানসভায় ৪৫টি ভোট পেয়েছেন হেমন্ত। তার আগেই ভাষণে হেমন্ত বিজেপিকে আক্রমণ করে জানান, ক্ষমতার নেশায় মত্ত অহংকারীরা তাঁর কণ্ঠরোধের চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জনগণের সমর্থনে তিনি জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

এদিন আস্থা ভোট শুরু হতেই হট্টগোল বাধে বিধানসভায়। সেই শোরগোলের মধ্যে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে যান বিরোধী শিবিরের লোকজন। ফলে আস্থা ভোটে সহজ জয় পেতে কোবও অসুবিধাই হয়নি হেমন্তের। বিধানসভায় ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার ২৭ জন বিধায়কের পাশাপাশি কংগ্রেসের ১৭টি এবং আরজেডির একজন বিধায়ক মিলে সোরেনের হাতে রয়েছে ৪৫ জনের সমর্থন। অন্যদিকে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোটে মোটৎো ৩০ জন রয়েছেন। লোকসভা নির্বাচনের কারণে কক্ষের সদস্য সংখ্যা কমে যাওয়ায় ৩৮টি ভোটই যথেষ্ট ছিল আস্থা ভোটে জয়ী হতে। আস্থাভোট শুরু হতেই সোরেনের পক্ষে ভোট পড়ে ৪৫টি। বিরোধী শিবির ওয়াক আউট করলেও সংসদে ছিলেন নির্দল বিধায়ক সূর্য রায়। তিনি অবশ্য ভোট প্রক্রিয়ায় অংশ নেননি। আস্থা ভোটে নিজের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে ঝাড়খণ্ডের কুর্সিতে পুনর্বহাল হলেন হেমন্ত সোরেন।

আরও পড়ুন: হাইকোর্টে মঞ্জুর জামিন! জমি-দুর্নীতি মামলায় তার পরেও জেলমুক্ত হতে পারবেন হেমন্ত?

আস্থা ভোট জিতে সোমবারই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণে মন দেন হেমন্ত। রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণের কাছে সোমবার জেএমএম-কংগ্রেস-আরজেডি জোট সরকারের ১১ জন মন্ত্রী শপথ নিয়েছেন। কংগ্রেসের রামেশ্বর ওরাওঁ, ইরফান আনসারি, বান্না গুপ্তা, দীপিকা পাণ্ডে সিংহ এবং আরজেডির বিধায়ক সত্যানন্দ ভক্তা রয়েছেন এই তালিকায়। হেমন্তের মন্ত্রিসভায় রয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চম্পাই সোরেনও। তিনি ছাড়াও রয়েছেন জেএমএমের বৈদ্যনাথ রাম, মিথিলেশ কুমার ঠাকুর, হাফিজুল হাসান, দীপক বিরুয়া, বেবি দেবীরাও। তাঁরাও এদিন শপথ নিয়েছেন ঝাড়খণ্ডের মন্ত্রীপদে।

More Articles