'এ রোমাঞ্চের জন্য বাঁচা চলে', বাংলা কবিতায় বারবার যেভাবে উঠে এসেছে ক্রিকেট

ক্রিকেট নিয়ে ইংরেজ কবিরা যে কবিতা লিখবেন, তাতে আশ্চর্যের কিছু নেই, কারণ খেলাটির সৃষ্টিই হয়েছে ইংল্যান্ডে। যদিও অনেক তাত্ত্বিক পণ্ডিত নাকি মহাভারতেও ক্রিকেটজাতীয় খেলার উল্লেখ পেয়েছেন। তবে আধুনিক চেহারার ক্রিকেট যে ইংরেজদেরই অবদান, সে-বিষয়ে সন্দেহের লেশমাত্র নেই। বাংলা সাহিত্যে ক্রিকেট নিয়ে কবিতা প্রথম কে লিখেছিলেন, তা নিয়ে কোনও দ্বিমত থাকার কথা নয়। কল্লোল যুগের সাহিত্যিক অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত এ-ব্যাপারে পথিকৃৎ।

মনে পড়ে, '৭১-এর ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে ভারতের সিরিজ জেতা ভীষণ সাড়া ফেলেছিল ক্রীড়ামোদীমহলে। সেই প্রথম বিদেশ সফরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে জয় ভারতের। ওভাল মাঠে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে অজিত ওয়াদেকারের নেতৃত্বে ভারত চার উইকেটে জেতে। তিন টেস্টের সিরিজে আগের দু'টি টেস্ট ড্র হয়েছিল। ভাগবত চন্দ্রশেখরের জাদুকরী স্পিন বোলিংয়ে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস মাত্র ১০১ রানে শেষ হয়। চন্দ্রশেখর ৩৮ রানে ৬ উইকেট পান। ১৭৩ রান দরকার ছিল জেতার জন্য। ভারত দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১৭৪ রান তুলে নেয়। ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার ২৮ রানে আর আবিদ আলি ৪ রানে নটআউট থাকে। ইংল্যান্ডের মাটিতে এই সিরিজ জয় ভারতের সংবাদপত্রগুলিতে ব্যাপকভাবে বন্দিত হয়েছিল।

অচিন্ত্যকুমার তখন সম্ভবত কলকাতার 'যুগান্তর' পত্রিকায় লেখেন। ওই খেলার নির্যাসটুকু তিনি ধরেছিলেন একটি কবিতার মাধ্যমে। তখন আমি স্কুলবালক, মফসসলের স্কুলে ক্লাস সিক্সের ছাত্র। '৭১-এ ওভাল টেস্ট জেতার পর কাগজে প্রকাশিত ছড়াটি পরে কোনও জায়গায় লিখিত আকারে পাইনি। এটি অগ্রন্থিত একটি ছড়া বা কবিতা। তবে স্মৃতিতে ছড়াটির কয়েকটি প‌ংক্তি পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নিয়েছে। প্রাসঙ্গিক অংশটুকু লিখছি–

কিন্তু হঠাৎ তিনের মাথায়
একি দারুণ বজ্রপাত
নটের হাতে কট হল যে বিশ্বনাথ।
...
তবে আছে ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার
...
ভীষণ জেদি বিষাণ বেদি
...
সবশেষে থাক সাবাস কার
সে-ই তো সুনীল গাভাসকার।

আরও পড়ুন: ক্রিকেটার কবিগুরু! যে রবীন্দ্রনাথকে আজও চেনেই না বাঙালি

বাহান্ন বছর পরে এর চেয়ে বেশি কিছু স্মৃতি থেকে উদ্ধার করা গেল না। স্মৃতিতে জল মিশেছে কি না, তাও জানি না। তবে ওই খেলায় ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে গুণ্ডাপ্পা বিশ্বনাথ যে ৩৩ রান করে ইংল্যান্ডের ব্রায়ান লাকহার্স্টের বলে উইকেটরক্ষক অ্যালান নটে-র হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছিলেন, তা উইকিপিডিয়া-র দৌলতে সবাই দেখতে পারেন। তিনের মাথায় বলতে তিনি তিনের কোঠার তিনের মাথায় (৩৩) বুঝিয়েছেন।

বলা বাহুল্য বিশ্বনাথই খেলাটা শেষ করে আসবেন, সেটাই সকলে ভেবেছিল। আমরাও বাড়ির বড়দের সঙ্গে রেডিওয় ধারাবিবরণী শুনছিলাম। বিশ্বনাথের আউটটা ছিল মারাত্মক ঝটকাবিশেষ।

সুনীল গাভাসকার এই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে জন স্নো-র বলে মাত্র ৬ রান করে আউট হন। দ্বিতীয় ইনিংসে খাতা খুলতে পারেননি তিনি। জন স্নো-র বলেই আবার আউট হন। তবুও তাঁর নামে জয়ধ্বনি কেন? এর পিছনেও একটি সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। ইংল্যান্ডে আসার আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজে চার টেস্টের সিরিজ জিতে এসেছিল ভারত। মূলত সুনীল গাভাসকার ও দিলীপ সরদেশাইয়ের (সিরিজে যথাক্রমে ৭৭৪ ও ৬৪২) ব্যাটিংয়ের দাপটে সিরিজ জয় সম্ভব হয়েছিল। সুনীল তখন জাতীয় হিরোর মর্যাদা পাচ্ছেন। ভারতীয় ক্রিকেট দলকে আত্মবিশ্বাসটা তিনিই জুগিয়েছিলেন। সেই অটুট মনোবলই যে ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জয়ে দলকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তুলেছিল, তা একেবারে নিশ্চিত। তাই সবশেষে অচিন্ত্যকুমার সুনীল গাভাসকারকে সাবাস জানিয়েছেন, ওই নির্ণায়ক টেস্টে তাঁর আপাতব্যর্থতা সত্ত্বেও।

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত লেখক হিসেবে সব্যসাচী ছিলেন। কবিতায় যেমন মুনশিয়ানা দেখিয়েছিলেন, গল্প-উপন্যাসও সমানতালে লিখেছেন। তাঁর 'ইন্দ্রাণী' উপন্যাস পড়ে এক সময় বাঙালি যুবকযুবতীর মনে আলোড়ন উঠেছিল। এছাড়া 'বেদে', 'কাকজ্যোৎস্না', 'প্রথম কদম ফুল' ইত্যাদি উপন্যাস লিখে গেছেন। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থের নাম 'অমাবস্যা'। 'প্রিয়া ও পৃথিবী' আর 'উত্তরায়ণ'-ও তাঁর নামকরা কবিতাগ্রন্থ। কল্লোল যুগের আরও দুই নামী সাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্র ও বুদ্ধদেব বসুর সঙ্গে জোট বেঁধেও উপন্যাস লিখেছেন তিনি। প্রবোধকুমার সান্যালও মাঝে মাঝে এসে জুটেছেন।

সে যাই হোক, ক্রিকেটপ্রেমই তাঁকে তাড়িত করেছিল কাগজে ক্রিকেটের প্রতিবেদন লিখতে, রেডিওয় ক্রিকেটের কমেন্ট্রি করতে। তিনি ক্রিকেট নিয়ে গোটা একটি বইই লিখে ফেললেন। 'মৃগ নেই মৃগয়া' নামে বইটিতে আদ্যোপান্ত ক্রিকেটের ঘটনা সরস ভঙ্গিতে তিনি তুলে ধরেছেন। ভারতীয় ক্রিকেটাররা তো আছেনই, বিদেশি ক্রিকেটারদের ব্যক্তিচরিত্র ও খেলার নৈপুণ্য, দু'টিই সমান পারদর্শিতায় তুলে ধরেছেন তিনি। হাটনের টুপি, বেনোর শার্ট, ম্যাকের বুট-এর মাহাত্ম্য তিনিই লক্ষ্য করেছিলেন। বিজয় মঞ্জরেকর, চান্দু বোরদে, পলি উমরিগড়, নরি কন্ট্রাক্টর, পতৌদিরা যেমন জায়গা পেয়েছেন, তেমনই বিল লরি, ববি সিম্পসন, রেডপাথ, কনোলি, গ্লিসন, ম্যাকেঞ্জিও উল্লিখিত হয়েছেন তাঁর বইয়ে। থ্রি ডব্লিউ ওরেল, উইকস, ওয়ালকটের কথা যেমন তিনি রসসিক্ত কলমে রাঙিয়ে তুলেছেন, তেমনি থ্রিএইচ, জ্যাক হবস, ওয়ালি হ্যামন্ড, লেন হাটনও আছেন স্বমহিমায়। কেন ব্যারিংটন, পিটার মে, কলিন কাউড্রেরাও আছেন। বডিলাইন সিরিজের ব্র্যাডম্যান, লারউড ও ডগলাস জার্ডিনকে নিয়েও আখ্যান আছে। ১৯৬২-র ইডেনে ইংল্যান্ড-ভারত দ্বৈরথের কথা কী মুনশিয়ানার সঙ্গে যে তিনি লিখে গেছেন! সেই টেস্টে মাঠে হাজির ছিলেন তিনি। ভারতে জয় তিনি তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছিলেন। ১৯৬৬-তে বইটি বেরিয়েছিল এক অনামী প্রকাশনী থেকে।

এই 'মৃগ নেই মৃগয়া' বইটি শেষ করেছেন তিনি একটি কবিতা দিয়ে। কবিতার নাম ক্রিকেট। এখানে পুরোটা দিচ্ছি তার–

ক্রিকেট

একাসনে যোগারূঢ় কিছুক্ষণ হয়ে থাকি স্থির
চক্ষুরে শিক্ষিত করি আগ্রহেরে একাগ্র নিবিড়,
তারপরে দুর্বার, দুর্জয় ব্যাটে তুলে দেব মার—
ঝাঁঝালো সবুজ রোদে মাঠময় প্রাণের ঝঙ্কার,
বাহুর বিস্তারে বীর্যে দুঃসাহসী দৃপ্ত উচ্চারণে
রানে-রানে হয়রান, গাব গান নিঃশঙ্ক মরণে,
দিকে দিকে ছোটাব রকেট
খেলে যাব খেলে যাব মুখর ক্রিকেট।।

কালস্রোতে কোনোক্ষণে করতেই হবে কোনও ভুল
আম্পায়ার তুলে দেবে নির্বিকার নিষ্ঠুর আঙুল।
নিয়তিরে মেনে নেব, রাখব না কোনো অভিমান,
সুখে-দুঃখে উদাসীন, গুনব না কত মোট রান—
খেলা শেষ হল যদি, প্যাভিলনে চলে যাব ফিরে
মৃত্যুর মার্জনা নিয়ে বিস্মৃতির শূন্যের তিমিরে,
করব না কভু মাথা হেঁট
খেলে যাব খেলে যাব রঙিন ক্রিকেট।।

তারপর ডাকো যদি করে যাব ক্লান্তিহীন বল,
দেখাব প্রত্যেক ক্ষেপে কাকে বলে দুরাত্মার ছল,
তীক্ষ্ণ বক্র শ্লথ মৃদু–দৃঢ়মুষ্ঠে কত ঘোর প্যাঁচ—
কিন্তু হায় সতীর্থেরা ফেলে দেবে কত সোজা ক্যাচ,
ছেড়ে দেবে বাউন্ডারি, বোর্ড হবে কালো হতে কালো,
তবু জানি ব্যর্থ নই জ্বেলে যাব আশ্চর্যের আলো,
এভারেজ থাক ক্লিন শ্লেট
খেলে যাব খেলে যাব নিখুঁত ক্রিকেট'।।

বস্তুত কবিতায় ক্রিকেটের সবদিক নিয়ে এমন চুলচেরা বিশ্লেষণ আগে বাংলা সাহিত্যে কেউ করেননি।

এই বইটির এক একটি অধ্যায় তিনি শেষ করেছেন দু'-তিন লাইনের কবিতা দিয়ে। প্রাককবিতা গদ্যটুকুও দিচ্ছি–

তবু বোরদে যে শমীশাখার বক্ষ থেকে আগুন ডেকে এনেছে তার জন্যে তাকে বাহবা দিই। সবুজের উপর তার সোনার স্বাক্ষর নতুন করে আবার প্রমাণ করছে পলকের মাঝখানেই অনন্তের বাসা।

যতই দেখাও ভয় ছুঁড়ে মারো বিদ্যুৎ-রকেট
করব না কভু মাথা হেঁট,
খেলে যাব খেলে যাব রঙিন ক্রিকেট।

আবার একটি অধ্যায়ের শেষে লিখেছেন,


একটা ওভার বাউন্ডারি। একটা স্টাম্পকে বিশহাত দূরে ছিটকে দেওয়া। এ রোমাঞ্চের জন্যে বাঁচা চলে।
নিরাশী নির্মমো ভূত্বা যুধ্যস্ব বিগতজ্বরঃ।
স্টাম্পস ড্রন হল। তার মানে খেলা শেষ হল।
'স্টাম্পস ড্রন'-এর উপর একটা কবিতা শুনুনঃ
দ্রুত বল ছুটে লাগল যে দাঁতে
মাঠভরা ছিল বাম্প
হাঁ করিয়ে মুখ ডেন্টিস্ট এসে
তুলে নিল তিন স্টাম্প।।

আসলে বিদেশি ও স্বদেশি সাহিত্য গুলে খেয়েছিলেন অচিন্ত্যকুমার। তাঁর আধুনিক মানসিকতা তাঁকে লিখতে প্ররোচিত করেছিল ক্রিকেট নিয়ে। লেখায় যে কোনওকিছুই উপেক্ষণীয় নয়! ন্যুট হামসুন, হেলেন কেলার, বরিস পস্তারনাক-এর বইয়ের অনুবাদও করেছিলেন এই বহুমুখী লেখক।

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তর পরে আমরা ক্রিকেটের কবিতা-ঝলক দেখি কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর কবিতায়। তাঁর কয়েকটি কবিতায় ক্রিকেটের অনুষঙ্গ আছে। সবগুলি মনে পড়ছে না, তবে 'খেলোয়াড়ের টুপি' কবিতায় লিখেছেন,

অন্ধকার থেকে দৃশ্যগুলি একে-একে
আলোর বৃত্তে নেমে এসেছিল।
যে যেমন দেখতে চায়,
দিনভর
সে তেমন দেখেছে।
কিন্তু আর নয়,
হাওয়ায় উড়িয়ে দেওয়া যাবতীয় টুপি যেভাবে
খেলোয়াড়ের মাথায় ফিরে আসে,
ঠিক তেমনিভাবে সব দৃশ্য এখন আবার
মিছিল বেঁধে
অন্ধকারের মধ্যে ফিরবে।

অনেক লেখক কবিতা সরাসরি হয়তো লেখেননি, তবে তাঁদের গদ্যভাষ্যও অনেক সময় কবিতার কাছাকাছি।

মতি নন্দী ইডেন টেস্ট কভার করতে গিয়ে আনন্দবাজারে লিখলেন, 'কিরমানির টাকের মতো মসৃণ ইডেনের পিচ।' এক লহমায় পাঠক বুঝে যান পিচের চরিত্র। তার জন্যে হাজারখানেক শব্দ ব্যবহার করতে হয় না। এ কি কবিতা নয়?

অজয় বসুও কাব্যিক ভাষায় লিখতেন, বলতেন। হয়তো সেটা তাঁর নিজস্ব ঢং, কিন্তু কাব্যময়তা অবশ্যই ছিল তাতে। মাঠের আউটফিল্ডে সবুজ ঘাসের গালিচা, গগনবিহারী ক্রিকেটীয় শট, এসব তাঁরই ডিকশন। সুইপকে ঝাড়ু শট, কেতাবি ঢংয়ে ব্যাটিং করা, তিনিই বলতেন, লিখতেন। কয়েনেজ-এ তিনি মাস্টার ছিলেন।

ক্রিকেট নিয়ে অধ্যাপক শঙ্করীপ্রসাদ বসু অনেক লেখা লিখেছেন। কিন্তু কবিতা তিনি লিখেছেন কি না, জানা নেই।

শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ও ক্রিকেট নিয়ে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। সৌরভের ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়ার সময় অনেক মনোজ্ঞ আলোচনা করেছিলেন ক্রিকেটীয় বিশ্লেষণ-সহকারে। তারপর থেকে ক্রিকেট নিয়ে অনেক কিছুই লিখেছেন। তবে কবিতা লেখেননি, যেহেতু তিনি কবি নন। যদিও তিনি 'দেশ'-এ একবার একটি কবিতাও লিখেছিলেন। তবে তারও গল্প আছে। তাঁর একটি সংক্ষিপ্ত গদ্যরচনাই ভুলক্রমে কবিতা হিসেবে ছাপা হয়ে গিয়েছিল।

জয় গোস্বামী কবি হিসেবে অত্যন্ত উচ্চকোটিতে বিরাজ করেন। ঔপন্যাসিক হিসেবেও উঁচুদরের। ক্রিকেট নিয়ে তাঁর লেখাগুলি আমাদের মুগ্ধ করে। পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষণ সমানভাবে উপস্থিত তাঁর লেখায়। তবে তাঁকেও ক্রিকেট নিয়ে কোনও ছড়া বা কবিতা লিখতে দেখিনি। যদিও 'টিউটোরিয়াল' কবিতায় ক্রিকেটের আভাস পাচ্ছি। একটু প্রাসঙ্গিক অংশ উদ্ধৃত করছি,

না বাপী না, আমি মেয়েদের সঙ্গে মিশতে যাই না কখনো
যেতে আসতে দেখতে পাই কাদা মেখে কত ছেলে বল খেলছে মাঠে
কত সব দুষ্টু ছেলে পার্কে প্রজাপতি ধরছে
চাকা বা ডাঙ্গুলি খেলছে কত ছোটোছেলে
না আমি খেলতে যাই না কখনো, খেলতে যাইনি।

চাকা খেলাটিতে ক্রিকেটের অনুষঙ্গ থাকলেও থাকতে পারে। অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত একদা কৌতুক করে লিখে গেছেন, 'বলকে চাকার মতো ছোঁড়ে বলেই সে চাকার!' জয় গোস্বামী-র ক্রীড়াপ্রেমী মনন 'টিউটোরিয়াল' কবিতার ছত্রে ছত্রে পরিস্ফুট।

শারদীয় 'খেলা' পত্রিকায় ফি বছর অনেক নামী কবির খেলা বিষয়ক কবিতা বা ছড়া পড়েছি। নিজেও লিখেছি। তার মধ্যে শৈলেন দত্ত, মৃদুল দাশগুপ্ত, একরাম আলি-র নাম উল্লেখযোগ্য। কবিরা যে উৎকৃষ্ট মানের খেলার কবিতা বা ছড়া লিখতে পারেন, তা তাঁদের দেখেই শিখেছি।

অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত যে-ধারার সৃষ্টি করেছিলেন, বর্তমান কবি ও ছড়াকাররা তার ব্যাটন বয়ে নিয়ে চলেছেন। যথেষ্ট যোগ্য হাতেই সে ব্যাটন আছে।

More Articles