মিনারেল ওয়াটার আসলে জলহস্তীর প্রস্রাব! জলের এই অদ্ভুত তথ্য চমকে দেবে বিশ্বকে

Funny Facts of Water: পৃথিবীতে থাকা জলের সমস্তটা পৃথিবীর মাটিতে এসেছে বরফ রূপে। কিন্তু পৃথিবীর মাটিতে এই বরফ এল কোথা থেকে?

জল, অক্সিজেনের পরে একমাত্র অপরিহার্য্য জিনিস যা বেঁচে থাকার জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়। জলের ডাকনাম জীবন এইজন্যই এত আক্ষরিক! জলের রাসায়নিক সংকেত প্রায় প্রত্যেকেরই জানা। H2O, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন মিলে তৈরি হয় জল। পৃথিবীর যে কোনও প্রাণের বেঁচে থাকার জন্য জলের উপস্থিতি আবশ্যক। এসবই অতি জানা তথ্য কিন্তু আপনি কি জানেন যাকে আপনি জীবন বলেন, তার কিছু কিছু এমন চারিত্রিক গুণ আছে যা শুনলে রীতিমতো আঁতকে উঠতে হয়? 

■ জল আসলে একটি এলিয়েন। হ্যাঁ, ঠিকই পড়ছেন। পৃথিবীতে থাকা জলের সমস্তটা পৃথিবীর মাটিতে এসেছে বরফ রূপে। কিন্তু পৃথিবীর মাটিতে এই বরফ এল কোথা থেকে? এই বরফ এসেছে ছোট ছোট গ্রহাণু এবং ধূমকেতু থেকে। লক্ষ কোটি বছর ধরে এই বরফ গলতে গলতে পৃথিবীতে সৃষ্টি হয়েছে জল। সুতরাং জল এই গ্রহেরই নয়। মহাকাশ থেকে ছিটকে আসা এক এলিয়েন মাত্র।

■ পৃথিবীর সমস্ত পানীয় জল কখনও না কখনও রিসাইকেল হয়েছে বিভিন্ন জন্তু জানোয়ার-মানুষ-কীটপতঙ্গ-গাছ-মেঘ-সমুদ্র-পাথরের মধ্যে দিয়ে। অর্থাৎ যে জল আমরা পান করি সেই জল কখনও না কখনও কেউ না কেউ পান করেছে বা নিজের জীবনস্বার্থে ব্যবহার করেছে এবং ত্যাগও করেছে। অন্যভাষায় বলতে গেলে, যে এক লিটার মিনারেল ওয়াটার আপনি একটু আগেই কিনলেন ২০ টাকা দিয়ে, তা হয়তো কোনও জলহস্তীর প্রস্রাব।

■ জল রসায়ন বিদ্যার কোনও নিয়মই মেনে চলে না। জল যে দুটো জিনিস দিয়ে তৈরি, মানে অক্সিজেন এবং হাইড্রোজেন সে দুটোই  ওজনে ভীষণ হাল্কা। তাই রসায়ন বিদ্যার নিয়ম অনুযায়ী জলের কোনও তরল রূপ থাকতেই পারে না। এই পৃথিবীতে জল শুধু বাষ্পরূপে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু জল, যে কিনা আদপে এলিয়েন, সে পৃথিবীর নিয়ম মানবে কেন? তাই সে থাকে তার নিজের মর্জি অনুযায়ী। কখনও তরল, কখনও বাষ্প, কখনও বরফ আবার কখনও মেঘ।

■ জল এই পৃথিবীর একমাত্র রাসায়নিক পদার্থ যা আকারে এবং আয়তনে বৃদ্ধি পায় যখন তাকে তরল থেকে শক্ত আকারে রূপান্তরিত করা হয়। কারণ বরফের ঘনত্ব জলের তরল রূপের থেকে কম, এই কারণেই বরফ জলের উপর ভেসে থাকে।

■ বাড়িতে ফ্রিজ আছে নিশ্চয়ই? চলুন একটা পরীক্ষা করা যাক। ডিপ ফ্রিজের মধ্যে একটা পাত্রে গরম জল আর অন্য একটা পাত্র ঠান্ডা জল নিয়ে রেখে দেবেন। এবং খেয়াল করার চেষ্টা করবেন কোন পাত্রের জল আগে জমে বরফে রূপান্তরিত হচ্ছে। দেখবেন আগে গরম জলের পাত্রটা জমে বরফ হয়ে গ্যাছে, ঠান্ডা জলের পাত্রটা নয়। জলের এইরূপ অদ্ভুত আচরণের কারণ বিজ্ঞানীদের কাছে আজও অজানা।

■ জলের অণু বা মলিকিউলরা নিজেদের মধ্যে এত গায়ে লেগে লেগে থাকে যে তারা মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকেও অগ্রাহ্য করতে পারে। বায়োলজি বা জীবনবিদ্যায় জলের এরূপ ধর্মকে ক্যাপিলারি অ্যাকশন বলে থাকে। যার উদাহরণ হচ্ছে গাছের শিকড় মাটির নিচ থেকে জল সংগ্রহ করে তা পৌঁছে দেয় প্রতিটা পাতায় পাতায়। যা একেবারেই মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীতে গিয়ে করতে হয়। ঠিক একইভাবে মানুসের মস্তিষ্কেও জল পৌঁছে যায়।

■ বিশ্বের সবথেকে বেশি খুঁজে পাওয়া অণুগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় স্থানেই আছে জল। প্রথম স্থানাধিকারী হাইড্রোজেনের পর। জল চাঁদ, মঙ্গল থেকে শুরু করে  আমাদের সূর্য মণ্ডলের প্রায় প্রত্যেক গ্রহতেই আছে।

■ জল হচ্ছে সর্বজনীন দ্রাবক। জল যে কোনও রাসায়নিক পদার্থের সঙ্গেই মিশে যেতে সক্ষম। যে কারণে বিশুদ্ধ জল তৈরি করা খুব কঠিন কাজ, কারণ ল্যাবরোটোরির বেশিরভাগ রাসায়নিক যৌগ জলে দ্রবীভূত হয়ে যায়।

জল, আমাদের তেষ্টা মেটানোর একমাত্র উপায়, যা না পেলে ঝিমিয়ে পড়ে গাছ, শস্য ফলে না যার অভাবে, মাটি ফেটে চৌচির হয়ে যায় , খরা ডেকে আনে যে, যা এই পৃথিবীর বুকে প্রাণ সৃষ্টির প্রধান কারণ, যা পৃথিবীর বুক থেকে উধাও হয়ে গেলে প্রাণের বিনাশ অবশ্যম্ভাবী- তার অপচয় বন্ধ করতে হবে। জলের পূর্ণ উপযোগিতা করতে হবে। জল নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। পৃথিবীর বুক থেকে ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে পানীয় জলের স্তর। জল আমরা এখনও অবধি বিনামূল্যে পাই বলে, জলের কদর বুঝি না। জলের কদর বুঝতে হবে, জল সংরক্ষণ করতে হবে। আজ থেকেই।

সূত্র:

  • https://www.water-plus.co.uk/fresh-thinking-hub/amazing-facts-about-water
  • https://climatekids.nasa.gov/10-things-water/
 

More Articles