প্রতিবাদ-আন্দোলন জারি আরজি করে! রাজ্য জুড়ে কতটা দুর্ভোগের মুখে রোগীরা?
RG Kar Medical College: শুধু কলকাতা নয়, সেই প্রতিবাদের ঝড় ছড়িয়ে গিয়েছে জেলা হাসপাতালগুলোতেও। শনিবার সকাল থেকেই জেলা হাসপাতালগুলিতেও চলেছে দফায় দফায় বিক্ষোভ।
আরজি কর হাসপাতালে ধর্ষণ করে খুন চিকিৎসককে। যে ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা। শুধু আরজি করেই নয়, সেই আন্দোলনের জোয়ার ছড়িয়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। আর তার প্রভাব পড়েছে স্বাস্থ্য পরিষেবায়। শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালের ইমারজেন্সি ওয়ার্ডের সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয় এক পোস্ট গ্র্যাডুয়েট ট্রেনি চিকিৎসকের ক্ষতবিক্ষত দেহ। ময়নাতদন্তের পরে জানা যায়, শুধু খুন নয়, একই সঙ্গে শারীরিক নির্যাতনও করা হয় তাঁকে। ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতিক ডাক দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তার, ইনটার্ন ও পিজিটি-রা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে আরজিকর চত্বর। শুধু আরজি কর নয়, আশপাশের সরকারি কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তার, ইনটার্নরাও যোগ দেন সেই আন্দোলনে।
শুধু কলকাতা নয়, সেই প্রতিবাদের ঝড় ছড়িয়ে গিয়েছে জেলা হাসপাতালগুলোতেও। শনিবার সকাল থেকেই জেলা হাসপাতালগুলিতেও চলেছে দফায় দফায় বিক্ষোভ। কর্মবিরতির ডাক দেওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ, পুরুলিয়ার দেবেন মাহাতো মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। বহু হাসপাতালেই জরুরি বিভাগ ছাড়া অন্যত্র পরিবেষা ব্যাহত। কোনও মতো হাসপাতালের গুটিকয়েক সিনিয়র চিকিৎসক দিয়েই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চলছে। রবিবার বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা হাতে কালো ব্যান্ড বেঁধে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। প্রত্যেকেই নিরাপত্তার দাবি করেছেন। এক জুনিয়র ডাক্তারের কথায়, ‘আমরা নিরাপত্তা চাই। যে ঘটনা আরজি কর হাসপাতালে হয়েছে তা আমাদের এখানেও হতে পারে। শুধু চিকিৎসক নয়, হাসপাতালে বিভিন্ন পরিষেবার কাজে জড়িত মহিলাদের নিরাপত্তার দাবিতে আমাদের এই বিক্ষোভ।’ আর এক জুনিয়র চিকিৎসকের কথায়,‘কর্মবিরতি না, জরুরি পরিষেবা চালু রয়েছে। তবে নিম্ন মানসিকতার আর কত নিদর্শন দেখব? এক জন অন কল ডাক্তারের সঙ্গে যা হয়েছে তার পরেও আমাদের এই বিক্ষোভ কি যুক্তিসঙ্গত নয়? মোদ্দা কথা, আমরা নিরাপদ নই। সমাজ আর কত নীচে নামবে? কাল আমার বা আমার কোনও সহকর্মীর সঙ্গেও এই ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা ন্যায়বিচারের দাবিতেই এই বিক্ষোভ করছি।’
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ড: ভেতরে অনেকে আছে, মেনে নিলেন মমতাও
শুক্রবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার রুমে। তার পর থেকেই প্রতিবাদ-আন্দোলনে নেমেছে কলকাতার সমস্ত সরকারি হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসকেরা। রবিবার থেকে খাতায় কলমে আপৎকালীন বিভাগের পরিষেবাও বন্ধ করেছেন তাঁরা। আরজি করের পাশাপাশি এনআরএস, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও ছড়িয়ে গিয়েছে সেই বিক্ষোভের আগুন। সোমবারও সকালেও পরিস্থিতি কিন্তু বদলায়নি। চিকিৎসকদের সাফ কথা, তাঁরা নিরাপদ বোধ করছে না বলেই কাজে যোগ দিচ্ছেন না। একই সঙ্গে তাঁরা জানিয়েছেন জোর করে কোনও পরিষেবা বন্ধ করা হয়নি। তবে আন্দোলনকারী ডাক্তারেরা কাজে যোগ দেননি। তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের চার দফা দাবি না মানা হলে আন্দোলন চলবে। যে আন্দোলনে দেশ এবং রাজ্যের চিকিৎসকদেরও শামিল হওয়ার ডাকও দিয়েছেন তাঁরা।
সোমবার সপ্তাহের শুরুর দিন সকাল থেকে জেলায় জেলায় মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালগুলিতে শুরু হয়েছে জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিবাদ কর্মসূচি। যার জেরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ রোগীদের। মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শুরু হয়েছে এন্ট্রান্স জুনিয়র ডাক্তারদের ‘পেন ডাউন’ কর্মসূচি। তবে জুনিয়র চিকিৎসকেরা জানিয়ে দিয়েছেন, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, মাতৃমা বিভাগের কাজ এবং জরুরি পরিষেবা ছাড়া অন্যান্য জায়গায় তাঁরা কর্মবিরতি পালন করবেন। এদিকে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে এক হৃদ্রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। রবিবার দুপুর বারোটার সময় মালদহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন নজরুল মোমিন (৫৫) নামে ওই ব্যক্তি। সোমবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। আত্মীয়দের অভিযোগ, বিকেল চারটের পর থেকে কোনও ডাক্তারও তাঁকে দেখতে আসেননি। চিকিৎসার অভাবেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
কর্মবিরতি চলছে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ইনটার্ন, পিজিটি, হাউসস্টাফ ও সিনিয়র রেসিডেন্ট মিলিয়ে ওই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন প্রায় ৬০০ জন। আরজি করের ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব হয়ে আন্দোলনে নামেন তাঁরা। এদিন সকালে প্রথমে মেডিক্যালের জরুরি বিভাগের সামনে এক দফা বিক্ষোভ চলে। পরে সেখান থেকে তাঁরা যান হাসপাতালের লোকপুর ক্যাম্পাসে। সেখানে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তাজনিত একাধিক দাবিদাওয়া পেশ করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। মেডিক্যাল ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা, ওয়ার্ডে নিরাপত্তা, রেসিডেন্ট ডক্টরস রুমের দাবি জানানো হয়েছে। শনিবার আসানসোল জেলা হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনিরা কালো ব্যাজ পরে ডিউটি করেন। হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে বৈঠক চলে। বৈঠকে সুপার নিখিলচন্দ্র দাস, ডেপুটি সুপার কঙ্কণ রায়, চিকিৎসক প্রতিনিধি সঞ্জিত চট্টোপাধ্যায়-সহ হাসপাতালের নার্সিং সুপার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বিক্ষোভ ব্লক হাসপাতালেওএদিন বিক্ষোভ চলে জামালপুর, ভাতার, গলসি, মেমারি ব্লক প্রাথমিক হাসপাতালে। সর্বত্রই নিরাপত্তার দাবি জানানোর পাশাপাশি রাতে মহিলা চিকিৎসক, নার্সদের সুরক্ষা, পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরার দাবি তোলা হয়েছে। আরজি করের ঘটনার প্রেক্ষিতে কালনা হাসপাতালের সুপার চন্দ্রশেখর মাইতি সিকিউরিটি লিয়াজঁ বৈঠকের জন্য চিঠি লেখেন কালনার এসডিপিওকে। সুপার বলেন, ‘এসডিপিওকে ওই বৈঠকে থাকার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি লিখেছি। ১৭ অগস্ট ওই বৈঠক হবে হাসপাতালে।’
বারুইপুর ও সোনারপুরেও বিক্ষোভের ছবি। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতাল এবং সোনারপুর গ্রামীণ হাসপাতালেও বন্ধ বহির্বিভাগ বা আউটপেশেন্ট ডিপার্টমেন্টের চিকিৎসা পরিষেবা। মহকুমা হাসপাতালেও জরুরি বিভাগ সামলানোর দায়িত্বে রয়েছেন একজন মাত্র চিকিৎসক। রোগীর ভিড় সামলাতে হিমসিম খাচ্ছেন তিনি। ফলে যথাযথ পরিষেবা পাচ্ছেন না সঙ্কটাপন্ন রোগীরাও। উত্তর ২৪ পরগনার সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও কর্মবিরতি পালন করছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। ওই হাসপাতালেও বহির্বিভাগ সম্পূর্ণ বন্ধ। জরুরি বিভাগে রয়েছেন কেবল এক জন সিনিয়র চিকিৎসক। সেখানে কোনও জুনিয়র চিকিৎসককে দেখা যায়নি এ কদিন। তেমনটাই অভিযোগ করেছে রোগীদের পরিবার।
তবে হুগলির ইমামবারা জেলা হাসপাতাল এবং আরামবাগ মেডিক্যাল কলেজে পরিষেবা এদিন স্বাভাবিক ছিল। আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার ওই দুই হাসপাতালের চিকিৎসক এবং চিকিৎসা কর্মীরা কালো ব্যাজ পরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সোমবার বিকেল ৫টায় হাওড়া এবং হুগলির চিকিৎসকেরা মিলিত ভাবে একটি অরাজনৈতিক মিছিল করার কথা রয়েছে। উত্তরপাড়ার শখের বাজারে মহামায়া হাসপাতালের সামনে থেকে শুরু করে জিটি রোড দিয়ে এই পদযাত্রা গিয়ে শেষ হবে বালি শ্রীকৃষ্ণ সিনেমার সামনে। এ ছাড়া ভদ্রেশ্বর বাবুবাজার থেকে চন্দননগর স্ট্যান্ড পর্যন্ত মোমবাতি নিয়ে একটি মিছিল হবে। আরামবাগেও একটি প্রতিবাদ মিছিল করবে যুব ফেডারেশন। অন্য দিকে, আর জি করের ঘটনার প্রতিবাদে হাওড়ার মহেশ ভট্টাচার্য হোমিওপ্যাথি কলেজে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলছে সোমবার সকাল থেকে। বন্ধ করা হয়েছে বহির্বিভাগের পরিষেবা। ডাক্তাররা কলেজের গেটের সামনে অবস্থান করলেও জরুরি পরিষেবা চলছে বলেই সূত্রের খবর। বসিরহাট সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেও অবশ্য আরজি করের আন্দোলনের কোনও প্রভাব পড়েনি। জরুরি বিভাগে রোগীরা যথাযথ পরিষেবা পাচ্ছেন, বহির্বিভাগেও চিকিৎসকেরা সময় মতো রোগী দেখছেন। হাসপাতালে যাঁরা ভর্তি রয়েছেন, তাঁদেরও স্বাভাবিক নিয়মে চিকিৎসা চলছে বলে জানিয়েছে রোগীদের পরিবার। একই ছবি পূর্ব মেদিনীপুরের তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজেও। কাঁথি, এগরা, হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালেও কাজকর্ম স্বাভাবিক রয়েছে বলেই জানিয়েছেন রোগীরা।
তবে আন্দোলনের ঝড় ছড়িয়ে পড়েছে উত্তরবঙ্গেও। শনি ও রবিবারের পরে সোমবারও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তারেরা বিক্ষোভ অবস্থান চালিয়ে গিয়েছেন। সোমবার মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের সামনে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন তাঁরা। বহির্বিভাগ বন্ধ না থাকলেও সেখানে রোগী পরিষেবায় কিছুটা সমস্যা রয়েছে। সিনিয়র চিকিৎসকেরাই বহির্বিভাগ এবং জরুরিবিভাগ সামলাচ্ছেন। তবে জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান করলেও রোগীদের যাতে সমস্যা না হয়, সে দিকে নজর রেখেছেন প্রতিবাদী চিকিৎসকেরা। কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজেও বন্ধ রয়েছে বহির্বিভাগ। কলেজের ছাত্রছাত্রীরা বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টারের গ্রিল আটকে রেখেছেন। ফলে চিকিৎসার জন্য এসেও ফিরে যেতে হচ্ছে হাজার হাজার রোগীকে।
শুক্রবারের ঘটনার পর রবিবারই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল আরজি কর হাসপাতালের সুপারকে। সোমবার সকালেই ইস্তফা দেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। এদিন সকালেই স্বাস্থ্যভবনে গিয়ে পদত্যাগ করেন তিনি। তবে তার পরেও আন্দোলনের জের একই রকম রয়েছে। অধ্যক্ষ পদ থেকে সোমবার সন্দীপের ইস্তফার পরেও আন্দোলনকারীরা জানিয়েছিলেন, লিখিত পদত্যাগ চান তাঁরা। সাংবাদিক বৈঠকেও তা জানানো হল। সোমবার দুপুরে নিহত চিকিৎসকের বাড়িতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, আগামী রবিবারের মধ্যে পুলিশ এই ঘটনার কিনারা করতে না পারলে তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এরই মধ্যে সোমবার দুপুরে একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন বিক্ষোভরত জুনিয়র চিকিৎসকেরা। সেখানেই জানান, তাঁদের ছয় দফা দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চলবে।
যুবতী চিকিৎসক খুনের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। দোষীদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। সিসিটিভি ফুটেজ এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্ট-সহ তদন্ত সংক্রান্ত যাবতীয় নথি আন্দোলনকারীদের প্রতিনিধিকে দেখাতে হবে বলে দাবি করা হয়েছে তাঁদের তরফে। দ্বিতীয়ত, উচ্চ পদস্থ আধিকারিককে (অধ্যক্ষ, এমএসভিপি, ডিন অফ স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার, রেসপিরেটরি মেডিসিনের বিভাগীয় প্রধান) লিখিত ভাবে পদত্যাগ বা অপসারণ করতে হবে। তাঁদের লিখিত ভাবে ক্ষমাও চাইতে হবে। ভবিষ্যতে আর কখনও যাতে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক পদে তাঁদের দায়িত্ব না দেওয়া হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিহত চিকিৎসকের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে বলেও দাবি তুলেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:মৃতকেই দুষেছিলেন, আরজি করের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ আসলে কে?
এখানেই শেষ নয়। জুনিয়র চিকিৎসকদের দাবি, রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ২৪ ঘণ্টা সিসি ক্যামেরার নজরদারির বন্দোবস্ত করতে হবে। মহিলা এবং পুরুষ নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করতে হবে। হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ পিকেটিং এবং পুলিশের টহলদারির ব্যবস্থা করতে হবে। কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জন্য উপযুক্ত ঘরের বন্দোবস্ত করতে হবে, যাতে কাউকে আর সেমিনার হলে বিশ্রাম নিতে না হয়। একই সঙ্গে, আন্দোলনরত ডাক্তারি পড়ুয়া এবং জুনিয়র চিকিৎসকদের উপর অত্যাচারের জন্য কলকাতা পুলিশকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। সমাজমাধ্যমে যে মানহানি করা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে পদক্ষেপ করতে হবে।
আর এই সমস্ত দাবি না মেনে নেওয়া পর্যন্ত রাজ্যের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজে জরুরি বিভাগ-সহ সর্বত্র কর্মবিরতি চলবে বলেই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আরজি করের আন্দোলনকারীদের আন্দোলনকে সংহতি জানিয়েছেন গোটা রাজ্যের একাধিক সরকারি কলেজ ও হাসপাতাল। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও শুক্রবারের ঘটনার সুবিচার না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন থেকে সরে আসছেন না বিক্ষোভকারীরা। আর ততদিন যে রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবায় প্রভাব পড়তে চলেছে, তাতেও সংশয় নেই।