যে চড় ভুলবেন না কোনওদিনও! কঙ্গনাকে থাপ্পড় মারা সিআইএসএফ কনস্টেবল আসলে কে?
Kangana Ranaut Slapped: ৩৫ বছর বয়সি এই মহিলা কনস্টেবল পঞ্জাবের সুলতানপুর লোধির বাসিন্দা। গত দুই বছর ধরে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কর্মরত তিনি।
শিরোনামে থাকতে তিনি ভালোইবাসেন। অভিনয়ে থাকাকালীনও বিতর্ক বাঁধিয়েছেন, রাজনীতিতে আসা ইস্তক তো একাধিক চড়াদাগের মন্তব্য করে সংবাদমাধ্যমের আলো টেনেছেন। সদ্য লোকসভা নির্বাচনে জিতে সাংসদ হয়েছেন তিনি। ফল ঘোষণার দু'দিনের মধ্যেই সপাটে থাপ্পড় খেলেন সিআইএসএফ কনস্টেবলের হাতে। বৃহস্পতিবার চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে একজন মহিলা সিআইএসএফ কনস্টেবল বলিউড অভিনেত্রী এবং হিমাচল প্রদেশের মান্ডি থেকে বিজেপির সদ্য নির্বাচিত সাংসদ কঙ্গনা রানাউতকে থাপ্পড় মারেন বলে অভিযোগ। কে এই কনস্টেবল?
শোনা যাচ্ছে, চড় মারার ঘটনার পিছনে রয়েছে কৃষকদের প্রতি কঙ্গনার উস্কানিমূলক বার্তা। পঞ্জাবের কৃষকদের আন্দোলন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে জোরালো ধাক্কা দিয়েছিল। কৃষকদের আন্দোলনের জেরে বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছিল বিজেপি সরকার। কৃষকদের আন্দোলনের জেরেই পঞ্জাবে এবার একটি আসনও জিততে পারেনি বিজেপি। এই বিপুল প্রতিবাদের অংশ হওয়া পঞ্জাবি মহিলাদের সম্পর্কে কঙ্গনা কিছু বিতর্কিত মন্তব্য বলেন বলে জানা গেছে, যার পরেই ওই মহিলা কনস্টেবল তাঁকে সজোরে থাপ্পড় মারেন। সিআইএসএফের ওই মহিলা কনস্টেবলের নাম কুলবিন্দর কৌর। ঘটনার পরে তাঁকে একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, তাঁর মা নিজে কৃষকদের ওই আন্দোলনে শামিল ছিলেন।
কুলবিন্দর কৌরকে সঙ্গে সঙ্গেই সাসপেন্ড করা হয়েছে। ৩৫ বছর বয়সি এই মহিলা কনস্টেবল পঞ্জাবের সুলতানপুর লোধির বাসিন্দা। গত দুই বছর ধরে চণ্ডীগড় বিমানবন্দরে কর্মরত তিনি। কুলবিন্দরের স্বামীও সিআইএসএফ-এর কর্মী। আর তাঁর ভাই শের সিং একজন কৃষক নেতা এবং কিষাণ মজদুর সংগ্রাম কমিটির সংগঠন সম্পাদক। কুলবিন্দর কৌরের দুই সন্তানও রয়েছে। কুলবিন্দরকে আটক করা হয়েছে এবং এই ঘটনার তদন্তের জন্য সিআইএসএফ একটি প্যানেলও গঠন করেছে।
আরও পড়ুন- ভোটে জিতেও মিলল না ছাড়! মহিলা জওয়ানের হাতে সপাটে চড় খেলেন কঙ্গনা
কঙ্গনা রানাউতের অভিযোগ, তিনি যখন সিকিউরিটি চেকিংয়ের জন্য সিআইএসএফ অফিসারের কাছে যান, তখন অফিসার তার কাছে এসে থাপ্পড় মারে। কঙ্গনা রানাউত একটি ভিডিও বার্তায় বলছেন, "যখন আমার সিকিউরিটি চেকিং শেষ হয়ে যায়, আমি অপেক্ষা করছিলাম ওই মহিলা সিকিউরিটি অফিসার আমাকে কখন বেরোতে বলবেন। তিনি আমার দিকে আসেন, আমাকে মারেন এবং আমাকে গালাগালি দিতে থাকেন। যখন আমি জিজ্ঞেস করি, এমন কেন করলেন, তিনি জানান তিনি কৃষকদের সমর্থন করেন।”
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে হইহই পড়ে যায়। বিজেপি শিবির বাদ দিয়ে একটা বড় অংশের মানুষ কুলবিন্দরের এই পদক্ষেপ সমর্থন করেছেন। অনেকেই বলেছেন, হিংসার সমর্থন না করলেও কঙ্গনার এমন যোগ্য জবাব পাওয়া উচিত ছিল। বিজেপির টিকিট পাওয়ার কোনও কসুর করেননি কঙ্গনা। সেই ২০২০ সাল থেকেই কৃষক আন্দোলন নিয়ে মন্তব্য করে আসছেন তিনি। রাম মন্দিরের উদ্বোধনের সময় তাঁর গলা চিরে চিৎকার করে জয় শ্রীরাম বলা দেখে বোঝা গেছিল বিজেপির টিকিট এবার তিনি পেয়েই ছাড়বেন। পেলেনও, জিতলেনও। তবে জয়ই যে সব নয়, তা সামান্য এক কনস্টেবল তাঁকে বুঝিয়ে দিলেন।
নরেন্দ্র মোদি সরকারের তিনটি কৃষিআইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত কৃষকদের খালিস্তানি সমর্থক হিসাবে দাগিয়ে দিয়েছিল বিজেপি। কঙ্গনাও বলেছিলেন শাহিনবাগের সিএএ বিরোধী আন্দোলনের মহিলাদের ১০০ টাকায় কেনার কথা। পঞ্জাবি গায়ক-অভিনেতা দিলজিৎ দোসাঞ্জের সঙ্গে X-এ চরম তর্কও জোড়েন কঙ্গনা।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, আন্তর্জাতিক পপ তারকা রিহানা প্রতিবাদের সমর্থনে প্রতিক্রিয়া জানালে কঙ্গনা রানাউত আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাসবাদীও বলেন। কৃষি আইন বাতিলের কয়েকদিন পরে, কৃষকদের বিরুদ্ধে তাঁর বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে বিক্ষোভকারীরা পঞ্জাবের কিরাতপুর সাহেবে কঙ্গনার গাড়ি থামিয়ে দেন, কয়েক জন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলার পর তাঁকে যেতে দেওয়া হয়।