Karim's vs Kareem's: এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায়! পুজোয় কোথায় কোন বিরিয়ানি সেরা?

Kolkata Biriyani: মুম্বইয়ের করিম ধনানির হাতে তৈরি করিমস রেঁস্তোরার সঙ্গে অনেকেই দিল্লির জামা মসজিদ এলাকার করিমসকে গুলিয়ে ফেললেও দু’টি কিন্তু একবারে আলাদা রেঁস্তোরা।

আর মাত্র কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। তারপরেই বাংলার সবচেয়ে বড় উৎসব। বাঙালির সবচেয়ে হুজুগে মাতার সময়। কোনওদিকে কোনও খামতি রাখা চলবে না। তাই শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। কোটি কোটি বাঙালি সারা বছর ধরেই দুর্গাপুজোর কাউন্টডাউন করেন। চারটে দিনের এই উৎসবই বাঙালিকে পুরো এক বছর অক্সিজেন যোগায়। আর উৎসবের দিনগুলিতে জমজমাট আড্ডা বা প্রতিমা দর্শন সবকিছুর সঙ্গেই চাই যোগ্য খানাপিনার ব্যবস্থা। ভালো খাবারের স্বাদেই বদলে যায় উৎসবের মেজাজ। পুজো মানেই তো মেনুতে বিরিয়ানি থাকা মাস্ট। শুধু দুর্গাপুজো বলে নয় এখন বাঙালির যে কোনও অনুষ্ঠানেই হিট বিরিয়ানি। জনপ্রিয় ও সুস্বাদু এই পদের জন্ম মুঘলদের হাতে হলেও ভোজনরসিক বাঙালির বিরিয়ানি প্রীতি চিরকালীন চর্চিত এক অধ্যায়। তবে বিরিয়ানির ব্যাপারে বাঙালি বেশ নাক উঁচু। বিরিয়ানিতে আলু আর ডিম ছাড়া ঠিক মন ভরে না এই জাতির। পছন্দমতো দোকান থেকে ভালো মানের বিরিয়ানি খেতে গাঁটের কড়ি খরচ করতেও পিছপা হয়না বাঙালি।

কলকাতার বুকে এখন হাজারটা বিরিয়ানির দোকান রয়েছে, প্রতি গলিতেই প্রায় বিরিয়ানির ঠেক। তবে রসনা তৃপ্তির জন্য অন্যতম সেরা ঠিকানা করিমস। এবার নিশ্চয়ই ভাবছেন কোন করিমসের কথা বলছি? দু’টি রেস্তোরাঁর নামের উচ্চারণ হবহু এক হলেও কিন্তু এরা সম্পূর্ণ আলাদা দু’টি রেস্তোরাঁ। এমনকি তাদের প্রতিষ্ঠাও হয়েছে সম্পূর্ণ ভিন্ন দু’টি শহরে। কোন করিমস কোথাকার আর পুজোতে কী কী অবশ্যই খাবেন সেখানে সব খুঁটিনাটি রইল এই প্রতিবেদনে।

Karim's

দেশের প্রাচীনতম রেস্তোরাঁগুলির মধ্যে একটি হল Karim's। দিল্লির জামা মসজিদের কাছে ১৯১১ সালে হাজি করিমুদ্দিন এই রেস্তোরাঁ খোলেন। করিমুদ্দিনের পিতা মুঘল সম্রাটদের হেঁসেলে রান্না করতেন। তাঁর থেকেই রন্ধন কৌশল শেখেন করিমুদ্দিন। দিল্লিতে ছোট একটি খাবারের দোকান খোলার কয়েক বছরের মধ্যেই বড় রেস্তোরাঁ চালু করেন তিনি। খাঁটি জামা মসজিদ আউটলেটটি নাহারি, কাবাব, কোরমার জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয়। কলকাতাতেও এই রেস্তোরাঁর একাধিক আউটলেট রয়েছে। তবে প্রথম আউটলেট চালু হয় হাতিবাগান চত্বরে।

আরও পড়ুন- কোথা থেকে বিরিয়ানি এল এই শহরে? কেন কলকাত্তাইয়া বিরিয়ানিতে আলু ‘মাস্ট’

উত্তর কলকাতার ঠাকুর দেখার পথে দুপুরের লাঞ্চ বা রাতের ডিনার যে কোনও সময়েই পুজোর ভুরিভোজ সারার জন্য আদর্শ জায়গা এটি। বিরিয়ানির পাশাপাশি কাবাব, রুটি, মাংসের নানা জিভে জল আনা পদে পুজোর দিনগুলিতে মেতে উঠতে ডেস্টিনেশন হাতিবাগান করিমস। মহালয়ার ঠিক পরের দিন অর্থাৎ ২৬ সেপ্টেম্বর থেকেই পুজোর ভুরিভোজ পর্ব শুরু হবে। চলবে দশমী পর্যন্ত। দুপুর ১২ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত রকমারি পদ নিয়ে করিমস খোলা থাকবে খাদ্যরসিকদের জন্য।

যে পদগুলি অবশ্যই খেতে হবে

কলকাতাবাসীকে একেবারে ভিন্ন স্বাদের বিরিয়ানি উপহার দিয়েছে জামা মসজিদের করিমস। কলকাতা বিরিয়ানির সঙ্গে উপরি পাওনা চিকেন জাহাঙ্গিরি, মটন রারা মশলা, মটন চাপ, চিকেন চাপ, মটন ও চিকেন কোরমা, চিকেন হান্ডি লাজিজ, মটন ও চিকেনের কষা, মটন বারার মতো পদগুলি।

খরচ- ট্যাক্স ছাড়া দু’জনের পেট ভরাতে খরচ হবে ১০০০ টাকা। পুজোর সময় অতুলনীয় স্বাদ ও পকেট দুই’ই বজায় রেখে ভালো খাবারের আয়োজন রয়েছে করিমসে।

Kareem's

মুম্বইয়ের করিম ধনানির হাতে তৈরি এই রেঁস্তোরার সঙ্গে অনেকেই দিল্লির জামা মসজিদ এলাকার করিমসকে গুলিয়ে ফেললেও দু’টি কিন্তু একবারে আলাদা রেঁস্তোরা। নাম নিয়ে দুই রেঁস্তোরার মালিক পক্ষের সঙ্গে খানিক আইনি বিবাদ চললেও এই রেস্তোরাঁর বিরিয়ানিরও কিন্তু যথেষ্ট সুখ্যাতি রয়েছে কলকাতায়। শহরজুড়ে বেশ কয়েকটি আউটলেট রয়েছে এদের, তাই সুবিধামতো হাতের নাগালে kareem's খুঁজে নেওয়া খুব কষ্টের নয়। সল্টলেক সেক্টর ফাইভের জিপি ব্লকে পিএস সৃজন কর্পোরেট পার্কে রয়েছে প্রথম আউটলেটটি। দ্বিতীয়টি রয়েছে এসপ্ল্যানেড তালতলা মির্জা গালিব স্ট্রিটে, পাটাকা হাউসের খুব কাছেই। আর অন্যটি ২/২ চিনার পার্ক, চিনার পার্ক ক্রসিংয়ের কাছে। স্টার্টার থেকে শুরু করে মেন কোর্স বা ডেজার্টের একাধিক পদ রয়েছে যা চেখে না দেখলে পুজোর ভূরিভোজটাই মাটি। দুর্গাপুজো স্পেশাল একাধিক পদ রয়েছে এই রেস্তোরাঁর বিভিন্ন আউটলেটে। তাই বন্ধু বান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে পেটপুজো সারতে যাওয়া যেতেই পারে এও করিমসে।

আরও পড়ুন- বিরিয়ানির হাঁড়িতে লাল শালু বাঁধা থাকে কেন জানেন ?

যে পদগুলি অবশ্যই খেতে হবে

পুজোর দিনগুলিতে যাঁরা নিরামিষ খান তাঁদের জন্য রয়েছে বাটার গার্লিক মাশরুম, পনির মালাই টিক্কা, ভেজ দম বিরিয়ানি। আর যাঁরা আমিষ খান তাঁদের জন্য থাকবে ঢালাও আয়োজন। চিকেন বিরিয়ানি, মটন বিরিয়ানি, করিমসের স্পেশাল রান বিরিয়ানির পাশাপাশি রয়েছে মুখে জল আনা নানা ধরনের কাবাব। চিকেন পেশোয়ারি টিক্কা, চিকেন পোটলি কাবাব, মটন বারা চাপ, ফিশ তন্দুরি, চিকেন আকবরি, বাটার চিকেন, মটন করাচি থাকছে মেনুতে। খাবার শেষে ডেজার্ট খেতে অর্ডার করতে পারেন মালাই ফিরনি বা ক্যারামেল কাস্টার্ড।

খরচ- জিএসটি বাদে এই রেস্তোরাঁয় পেটপুজো করতে দু’জনের জন্য খরচ পড়বে প্রায় ১০০০ টাকা।

তবে আর অপেক্ষা কীসের নিজের পছন্দমতো করিমস খুঁজে পুজোর দিনগুলিতে জমজমাট পেট পুজোর প্ল্যান করে ফেলুন আজই।

More Articles