আমও হতে পারে প্রাণঘাতী! সর্বোচ্চ আম খাওয়ার যে পরিমাণ বেঁধে দিলেন চিকিৎসকরা

Mango Health Hazards: যেহেতু আম ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ, তাই এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।

বাংলায় আম পড়া, আম কুড়নো আর আম খাওয়া তিন মরসুমই সমাগত। একটামাত্র ফলকে যে কত বিবিধ উপায়ে খাওয়া যায় খাদ্যপ্রেমী মাত্রই জানেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে উৎপাদিত প্রতিটি জাতের আমের নিজস্ব পৃথক স্বাদ রয়েছে। আসলে আম কেবল সুস্বাদু ফল নয়, এতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরকে হাইড্রেট করে এবং গরমের এই সময়ে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে বাঁচিয়েও রাখে। তবে আমের প্রতি এই প্রেম বিপজ্জনকও হতে পারে। অত্যধিক পরিমাণে আম খাওয়া শরীরের জন্য বেশ ক্ষতিকারক। পেটের ভয়াবহ সংক্রমণের কারণও হতে পারে আম। চিকিত্সক ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি পরিমাণে আম খেলে ফোলাভাব, ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, আলসার এবং বদহজম হতে পারে।

আম ফাইটোনিউট্রিয়েন্টে সমৃদ্ধ যা শরীরের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এগুলি স্বাস্থ্যকর ঠিকই কিন্তু আমের উৎপাদনের গোড়াতেই রয়েছে গলদ। আমের মধ্যে কীটনাশকের ব্যবহার এবং কৃত্রিমভাবে ফল পাকানোর প্রক্রিয়ার কারণে আমের মধ্যে বিবিধ রাসায়নিকের প্রবেশ ঘটে। তাই আম কমপক্ষে ২ ঘণ্টা জলে ভিজিয়ে রাখার পরেই খাওয়া উচিত। আম ভালোভাবে না ধুয়ে খেলে বিপদ অবশ্যম্ভাবী।

আমে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি এবং প্রয়োজনীয় ভিটামিন থাকে, এতে ফ্রুক্টোজ নামক কার্বোহাইড্রেটও থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে। সমস্যাটা হচ্ছে আম এনে কেটে খেয়ে ফেলা হয়। ভালোভাবে তা যত্ন করে ধুয়ে, দূষকমুক্ত করার ধৈর্য ধরেন না মানুষ, তাই সামান্য নিরীহ আমও স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। অনেকেরই আম থেকে অ্যালার্জি হয়, আমের কারণেই গলায় প্রদাহও হয়। আম ভালোবাসলেই যে সবাই ঠিকমতো হজম করতে পারবে এমন নয়।

আরও পড়ুন- টকজলের বদলে পাকা আমের কাথ! অভিনব আম-ফুচকার বহরে চোখ কপালে উঠবে আপনারও

পাশাপাশি, আমের বিপুল চাহিদা মেটাতে কৃত্রিমভাবে ফল পাকানো এবং কীটনাশক ব্যবহারের ফলে রাসায়নিকের কারণে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রার ভারসাম্যহীনতা দেখা দিতে পারে। আম কেন, যে কোনও ফলই সবসময় পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

দিনে ক'টা আম খাওয়া যেতে পারে?

আম খাব, তাও গুণে গুণে? হ্যাঁ, আম খেতে হবে সংযম ধরেই। একবারে একটা গোটা আম খাওয়ার চেয়ে অর্ধেক আম নিয়ে এটিকে দু'টি ভাগে ভাগ করে দিনে দু'বার খাওয়া ভালো। আম দুপুরের খাবারের সঙ্গে বা রাতের খাবারের সঙ্গে খাওয়ার চেয়ে প্রাতঃরাশে খাওয়া ভালো। যেহেতু আম ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ, তাই এটি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে।

ভালোবাসা আর লোভের চোটে অনেক বেশি আম খেয়ে যদি প্রাণ হাঁকুপাঁকু করে, যদি পেটে প্রবল ব্যথা শুরু হয় বা অন্য শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বেশি প্রোবায়োটিক খাবার যেমন দই, বাটার মিল্ক এবং প্রচুর জল খাওয়া উচিত। ডায়রিয়া এবং পাকস্থলীর সংক্রমণ কমাতে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন এবং বেশি ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত। ফল সেক্ষেত্রে খেতে হবে সীমিত পরিমাণে।

More Articles