গঙ্গার নীচের মেট্রোয় চাপেননি এখনও? জানেন, কত যাত্রীর সময় বাঁচাচ্ছে হাওড়া মেট্রো?

Howrah Esplanade Metro: গ্রিন লাইন ২ বা গঙ্গার নীচ দিয়ে মেট্রো চলাচল শুরু হয়েছিল ১৫ মার্চ।

অপেক্ষা ছিল দীর্ঘদিনের। লোকসভা ভোটের ঠিক আগে দেশের প্রথম জলের তলা দিয়ে মেট্রোর উদ্বোধনের সাক্ষী হয়েছিল কলকাতা। চালু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২৯ লক্ষ যাত্রী গঙ্গার নীচ দিয়ে চলা মেট্রো ব্যবহার করেছেন বলে জানিয়েছে সরকারি এক বিবৃতি। জলের নীচ দিয়ে এই মেট্রো লাইনের নাম দেওয়া হয়েছে গ্রিন লাইন ২। ব্লু লাইন হচ্ছে যে মেট্রোপথ ইতিমধ্যেই কলকাতা শহরকে উত্তর থেকে দক্ষিণে জুড়েছে। অর্থাৎ দক্ষিণেশ্বর থেকে নিউ গড়িয়া পর্যন্ত লাইনটি ব্লু লাইন। আর হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত কলকাতা মেট্রোর গ্রিন লাইন।

এই গ্রিন লাইন ২ বা গঙ্গার নীচ দিয়ে মেট্রো চলাচল শুরু হয়েছিল ১৫ মার্চ। গত শুক্রবার কলকাতা মেট্রোর এক বিবৃতিতে বলা হয়, চালু হওয়ার পর থেকে ৩০ জুন অবধি গ্রিন লাইন-২ অর্থাৎ নদীর নীচ দিয়ে মেট্রোর বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ২৯ লক্ষ যাত্রী এই করিডোরের বিভিন্ন স্টেশন থেকে ব্লু লাইনের স্টেশনগুলিতে ভ্রমণ করেছেন।

কলকাতা মেট্রোর ব্লু লাইন থেকে গ্রিন লাইনে যাওয়ার স্টেশন বা দুই করিডোরের ইন্টারচেঞ্জিং পয়েন্ট হচ্ছে এসপ্ল্যানেড স্টেশন বা ধর্মতলা মেট্রো। এসপ্ল্যানেড মেট্রোতে নেমেই ওই একই টিকিটে গ্রিন লাইন মেট্রোতে ঢুকে পড়া যায়। ধর্মতলা থেকে হাওড়া ময়দান অবধি মেট্রো অবশ্য এখনও প্রয়োজনের তুলনায় সংখ্যায় কম।

আরও পড়ুন- কল্পতরু রেল! বন্দে ভারত মেট্রো কবে আসছে?

পুরনো এসপ্ল্যানেড স্টেশন (ব্লু লাইন) এবং নতুন এসপ্ল্যানেড স্টেশনের (গ্রিন লাইন) মধ্যে যাত্রীদের যাতায়াত নিরবচ্ছিন্ন করতে এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশনে কিউ ম্যানেজারও স্থাপন করা হয়েছে। ধর্মতলা, মহাকরণ, হাওড়া স্টেশন এবং হাওড়া ময়দান অবধিই যাত্রীরা যেতে পারবেন।

হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড মেট্রো শুরু হওয়ার প্রথম দুই মাসেই ৮.২ লক্ষেরও বেশি যাত্রী উত্তর-দক্ষিণের ব্লু লাইন থেকে পূর্ব-পশ্চিমের গ্রিন লাইনে যাতায়াত করেছিলেন বলে জানিয়েছিল মেট্রো রেল। পূর্ব-পশ্চিম মেট্রোর এই পথটি আপাতত ৪.৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। মূল কলকাতাকে হুগলি হয়ে হাওড়ার সঙ্গে সংযুক্ত করছে এই লাইন।

১৫ মার্চ থেকে ৩০ মার্চের মধ্যে প্রথম দুই সপ্তাহে ৪.৫ লক্ষ যাত্রী এই মেট্রো ব্যবহার করলেও, তারপরের ছয় সপ্তাহে যাত্রীর সংখ্যা নেমে দাঁড়ায় ৩.৭ লাখ। যাত্রীদের প্রাথমিক উত্সাহ দেখে দিলেও পরের কিছু দিনে কমে যায় যাত্রী সংখ্যা। দেশের প্রথম নদীর নীচের মেট্রোতে বহু মানুষ শুধু অভিজ্ঞতা পেতেই সওয়ার হয়েছেন। এই মুহূর্তে যারা এই মেট্রো ব্যবহার করছেন তারা প্রতিদিনের যাত্রী। এই বছরের শেষের দিকে শিয়ালদহ-এসপ্ল্যানেড বিভাগের মেট্রো চালু হয়ে গেলে যাত্রী সংখ্যা আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

পূর্ব-পশ্চিম মেট্রো বর্তমানে দু'টি বিচ্ছিন্ন অংশ হিসেবে চলছে। সেক্টর ৫ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত একটি ৯.৪ কিলোমিটার মেট্রো লাইন এবং হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত ৪.৮ কিলোমিটারের মেট্রো লাইন৷ ১৫ মার্চ থেকে ১৫ মে পর্যন্তর হিসেব বলছে, গ্রিন লাইন ২ স্টেশন থেকে ৪৬,০০০ এরও বেশি যাত্রী দমদমের দিকে গেছেন এবং প্রায় ৩৯,০০০ যাত্রী কালীঘাটের দিকে গেছেন। ২৬,০০০-এরও বেশি যাত্রী নিউ গড়িয়ায় স্টেশন অর্থাৎ কবি সুভাষ অবধি গেছেন হাওড়া ময়দান, হাওড়া এবং মহাকরণ মেট্রো স্টেশন থেকে। গ্রিন লাইন স্টেশন থেকে ১৩,০০০-এরও বেশি যাত্রী দক্ষিণেশ্বর এবং প্রায় ৩৬,০০০ যাত্রী রবীন্দ্র সদন স্টেশনে গেছেন।

More Articles