নবান্ন অভিযানে ইটের আঘাত! একচোখের দৃষ্টি চিরতরে হারালেন এই পুলিশকর্মী?

Kolkata Police Attacked in Nabanna Abhijan: ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকা নবান্ন অভিযানে ইটের আঘাতে দৃষ্টি হারাতে বসেছেন তিনি।

নবান্ন অভিযানে 'ডিউটি' করছিলেন তিনি। অশান্তির আশঙ্কা তো ছিলই। তবে সেই অশান্তি যে আজীবনের মতো ক্ষত দিয়ে চলে যাবে, ভাবেননি দেবাশিস। কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক সার্জেন্ট দেবাশিস চক্রবর্তী। ‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ’-এর ডাকা নবান্ন অভিযানে ইটের আঘাতে দৃষ্টি হারাতে বসেছেন তিনি। বাঁ চোখে আর কোনওদিনই কি দেখতে পাবেন না এই পুলিশকর্মী? চিকিৎসকরা সংশয়ে। রাজ্য সরকার চিকিৎসার জন্য হায়দরাবাদে পাঠানর ব্যবস্থা করেছে তাঁকে। তবে নবান্ন অভিযানের ইটের আঘাতের সেই মুহূর্ত ভুলতে পারছেন না দেবাশিস। এত কম বয়সেই দৃষ্টি হারানোর আশঙ্কা গিলে খাচ্ছে তাঁকে।

মাত্র ৩৭ বছর বয়স দেবাশিস চক্রবর্তীর। কলকাতা পুলিশের পূর্ব বিভাগের সাইবার সেলের ইনচার্জ তিনি। তাঁর স্ত্রী-ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে যুক্ত। পাঁচ বছরের এক সন্তানও রয়েছে তাঁদের। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজের ডাকা নবান্ন অভিযানে তাঁর ডিউটি পড়েছিল স্ট্র্যান্ড রোডের দিকে। পুলিশের গাড়িতেই রেড রোড থেকে স্ট্র্যান্ড রোডের দিকে যাচ্ছিলেন তিনি ও তাঁর সহকর্মীরা। আচমকাই একদল বিক্ষোভকারী তাঁদের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট ছুড়তে শুরু করে। গাড়ির ভিতর বসেই বুঝতে পারেন তীব্র গতিতে ধেয়ে আসছে একের পর এক ইট! তখনও এভাবে তাঁকে আক্রান্ত হতে হবে, ভাবেননি।

আরও পড়ুন- ২০ দিন পর প্রথম মুখ খুললেন রাষ্ট্রপতি! আরজি কর প্রসঙ্গে কী বলছেন দ্রৌপদী মুর্মু?

দেবাশিস জানিয়েছেন, নবান্ন অভিযানের মাঝে বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে তাঁদের গাড়ির উইন্ডস্ক্রিন ফেটে যায়। এরপরের ইটটাই তাঁর চোখে এসে লাগে! মুহুর্মূহূ ইটবৃষ্টি চলতে থাকে। কোনও রকমে গাড়িচালক ওই বিক্ষোভের মধ্যে থেকে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে আসেন কিন্তু ততক্ষণে যা হওয়ার হয়ে গিয়েছে। দেখা যায় দেবাশিসের চোখ থেকে অঝোরে রক্ত পড়ছে। কালবিলম্ব না করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাঁ চোখে কিছুই দেখতে পাচ্ছেন না তিনি। ভবিষ্যতে দৃষ্টি ফিরবে কিনা সংশয় রয়েছে। এই মুহূর্তে কলকাতারই একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দেবাশিস।

দেবাশিস চক্রবর্তীর সঙ্গেই ওই গাড়িতে থাকা আরও তিন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। সার্জেন্ট অতনু রায়চৌধুরী এবং ডেভিড টপনোয় ছাড়াও আহত হয়েছেন হোমগার্ড দেবাশিস কুণ্ডু। পুলিশ জানিয়েছে, নবান্ন অভিযানে কাজ করতে গিয়ে মোট ১৫ জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দেবাশিস চক্রবর্তীর আঘাতই সবচেয়ে গুরুতর। এই মুহূ্র্তে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন কনস্টেবল নবকুমার মণ্ডল। তাঁর মাথায় আঘাত লেগেছে। সার্জেন্ট সৌরভ সাহা হোমগার্ড ও চালক দেবাশিস কুণ্ডুরও চোখে আঘাত লেগেছে। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার কনস্টেবল উজ্জ্বল দে সরকারের মাথা এবং চোখ দুই আহত হয়েছে।

More Articles