‘কেসটাকে জলে ফেলে দিল!’ টিএমসিপি-র সভা থেকে সিবিআইকেই কটাক্ষ মমতা-অভিষেকের

TMCP Foundation Day: মমতার পাশাপাশি সিবিআই তদন্ত নিয়ে এদিন টিএমসিপি-র সভা থেকে প্রশ্ন তোলের দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও।

একদিন আগেই আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজ। ছাত্রদের নামে অভিযান হলেও তেমন ভাবে ছাত্রদের দেখা যায়নি বিক্ষোভকারীদের ভিড়ে। কার্যত শহর অচল করে দেওয়ার ডাক দিয়েছিলেন বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই নবান্ন অভিযানকে ঘিরে অশান্ত হয়ে ওঠে শহরের একাধিক জায়গা। অভিযানে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষের অভিযোগ ওঠে। পুলিশের উপর হামলার অভিযোগও উঠেছে। পাল্টা জলকামান, কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। এই ঘটনায় ধরপাকড়ও চলে। সেই ঘটনার প্রতিবাদে বিজেপি বুধবার বারো ঘণ্টা বাংলা বনধের ডাক দেয়। এদিকে বুধবারই ছিল শাসকদলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর প্রতিষ্ঠা দিবস। প্রতিবছরই এই দিন সমাবেশ আয়োজন করা হয় ধর্মতলার মেয়ো রোডে। ফলে বিজেপির তরফ থেকে যেভাবে বনধ সর্বান্তকরণে সফল করার উদগ্র প্রয়াস ছিল, শাসকদলের তরফেও সব রকম ভাবে চেষ্টা করা হয়েছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার।

আরজি কর কাণ্ডের পর বুধবার এই প্রথম একই মঞ্চে একসঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রজি কর-কাণ্ডের আবহে রাজ্যের যে পরিস্থিতি, তাতে মমতা এবং অভিষেক ছাত্র সংগঠনের মঞ্চ থেকে কী সাংগঠনিক, রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক বার্তা দেন, তার দিকে তাকিয়ে ছিল গোটা বঙ্গ। আরজি করের ঘটনার পর বারবার মুখ্যমন্ত্রীর পদত্য়াগের দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। এই মামলায় হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্ট, বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে রাজ্য়। এমনকী আরজি কর কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছে তৃণমূল, এমন অভিযোগেও বারবার বিদ্ধ হয়েছে শাসক দল। এই পরিস্থিতিতে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ধর্ষণ রুখতে কেন্দ্রীয় আইনের কড়াকড়ি দাবি করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দেরি না করে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে ফেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতাও। আরজি কর কাণ্ডে সেই প্রথম সুর মিলেছিল মমতা-অভিষেকের। তার পর এই প্রথম কোনও সভায় এক সঙ্গে দেখা গেল দলের দুই স্তম্ভকে। স্বাভাবিক ভাবেই বিষয়টি নিয়ে ঘিরে জল্পনা ছিল তুঙ্গে।

আরও পড়ুন: কলাপাতা ফেলে প্রতিবাদ! বিজেপির বনধে রাজ্যজুড়ে কোথায় কোথায় বিপর্যস্ত ট্রেন পরিষেবা?

সেই কর্মসূচী অনুযায়ী, বুধবার ছাত্রদিবসের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে মেয়ো রোডের অনুষ্ঠানে যোগ দেন মমতা ও অভিষেক। ওই মঞ্চ থেকে বক্তৃতা দিতে দেখা গেল দু'জনকেই। মমতা সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছিল, তখন তাঁদের অন্যতম স্লোগান ছিল 'বদলা নয়, বদল চাই'। প্রায় ১৩ বছর পর এদিন মঞ্চ থেকে সেদিনের সেই স্লোগানকেই যেন উস্কে দিলেন মমতা। বুধবার মেয়ো রোডের জমায়েতের মঞ্চ থেকে মমতা বলেন, ‘‘আমায় অনেক গালাগালি দিয়েছেন। অনেক অসম্মান করেছেন। আমি অনেক ভেবেছি। আমি ভেবে দেখলাম, এদের বিরুদ্ধে কোনও দিনও বদলা নিইনি। আমরা বলেছিলাম বদলা নয়, বদল চাই। আজ বলছি, ওই কথা নয়। আজ বলছি, যেটা করার দরকার, সেটা আপনারা ভাল বুঝে করবেন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি অশান্তি চাই না। কিন্তু কুৎসা, অপপ্রচার এবং চক্রান্ত করে যে আপনাকে রোজ কামড়াচ্ছে, তাকে আপনি কামড়াবেন না ঠিকই। কিন্তু ফোঁস তো করতে পারেন।’’

অন্য রাজ্যের যাঁরা বাংলায় রয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশেও বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘বাইরের যাঁরা বাংলায় আছেন, তাঁরা নিজের মনে করে থাকুন। বিজেপির সঙ্গে মিশে গিয়ে পুলিশকে পেটালেন! মনে রাখবেন, আপনাকেও কিন্তু কেউ গায়ে হাত দিতে পারে। আমি সেটা চাই না। আমি মৃত্যু চাই না। কিন্তু বাংলায় থাকতে গেলে ভালবেসে থাকতে হবে। এত দুর্বল ভাবার কোনও কারণ নেই।’’ যে বক্তব্য নিয়ে তৃণমূলের এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘মঙ্গলবার বিজেপির ইন্ধনে নবান্ন অভিযানের নামে যে হিংসা হয়েছে, সেখানে অবাঙালি অংশের আধিক্য ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মূলত তাঁদের উদ্দেশেই বার্তা দিতে চেয়েছেন।’’ বিরোধী বিজেপির উদ্দেশে তিনি যে ‘হুঁশিয়ারি’ দিচ্ছেন, তা মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রীর বক্তব্যে গোপন থাকেনি। মমতা জানিয়েছেন, ‘ধৈর্য্যচ্যুতি’ হলে তিনি যে কী করতে পারেন, সে ব্যাপারেও কারও ধারণা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এখনও সহ্য করছি। ধৈর্য ধরে আছি। সহ্যের সীমা পার করে গেলে আমি যে কী করতে পারি, তা কারও জানা নেই। কারণ, আই অ্যাম দ্য প্রোডাক্ট অফ মুভমেন্ট। আন্দোলনে আমার জন্ম। আন্দোলনেই আমার মৃত্যু হবে।’’

Mamata Banerjee and Abhishek Banerjee both questions CBI for not arresting Sandip Ghosh in RG Kar incident on TMCP Foundation Day

সেই মঞ্চ থেকেই এদিন সিবিআই তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন মমতা। প্রসঙ্গত, রাজ্য পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার কার্যত ছিনিয়ে নিয়েই সিবিআইয়ের হাতে দায়িত্ব দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। যদিও নির্যাতিতার সোদপুরের বাড়ি থেকে ঘুরে এসে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই সময় বেঁধে দিয়ে জানিয়েছিলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্তকাজ শেষ না হলে নিজেই সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দেবেন। সেই সময়েও সিবিআইয়ের কর্মপদ্ধতি ও ফলাফল নিয়ে একগুচ্ছ সংশয় প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন মঞ্চ থেকেও সেই অনাস্থার সুরই প্রকট হয়ে উঠল মমতার সিবিআইয়ের প্রতি। এদিন মমতাকে বলতে শোনা যায়, "আমি বলেছিলাম, শনিবার পর্যন্ত শুধু সময় দিন আমাকে। পাঁচ দিন সময় চেয়েছিলাম। মঙ্গলের মধ্যেই সিবিআই হয়ে গেল। ওরা বিচার চায় না। কেসটাকে জলে ফেলে দিল। আজ ক'দিন হল? ১৬ দিন হল মামলা হাতে পেয়েছে সিবিআই। কোথায় গেল বিচার? বিচার চাইতে হবে। বলতে হবে, বিচার চাই, বিচার চাই, জবাব দাও সিবিআই। ফাঁসি চাই, জবাব দাও সিবিআই।"

সিবিআই তদন্ত নিয়ে এদিন প্রশ্ন তোলের দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ও। তিনি জানান, ১৪ অগাস্ট 'মেয়েদের রাত দখলের' ডাকে সমর্থন ছিল তাঁদের। সেই লড়াইকে তাঁরা সম্মান জানিয়েছিলেন। যাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন, বাড়িতে থেকেই যাঁরা প্রতিবাদের ডাক দিয়েছিলেন, তাঁরা ধর্ষণমুক্ত সমাজ, দোষীদের কঠোরশাস্তি এবং দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে যা হচ্ছে, তা শকুনের রাজনীতি বলে মত অভিষেকের। তাঁর আরও দাবি, "চার দিন কলকাতা পুলিশের হাতে মামলা ছিল, ১০, ১১, ১২, ১৩। ১৪ তারিখ মামলা দেওয়া হল সিবিআইকে। সেই থেকে ১৪ দিন অতিক্রান্ত। যাঁরা সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির দাবি তুলছিলেন, খুন ও ধর্ষণের মামলায় কেন সন্দীপ ঘোষ গ্রেফতার হলেন না এখনও, তার জবাব দিতে হবে সিবিআইকে। সাধারণ মানুষ বলছেন বিচার চাই, আমরা বলছি বিচার চাই, বলছি, প্রকৃত দোষীরা শাস্তি পাক, আর যাঁরা মৃত্যু নিয়ে শকুনের রাজনীতি করেন...বিজেপি বলছে, মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই।"

এখানেই না থেমে অভিষেক জানান, বারং বার নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। পঞ্চায়েত নির্বাচন হোক বা পুরসভা নির্বাচন, বিধানসভা নির্বাচন হোক বা লোকসভা নির্বাচন, বাংলার মানুষ তাদের গ্রহণ করেনি। তাই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এই মুহূর্তে বিজেপি বাংলাকে অশান্ত করে তুলছে বলে অভিযোগ করেন অভিষেক। তাঁর মতে, এটা বাংলা, উত্তরপ্রদেশ বা বিহার নয়। এখানে মানুষ মাথা উঁচু করে, মুষ্টিবদ্ধ হাত তুলে, আশা-আকাঙ্খা নিয়ে রাজপথে নামতে পারেন। সিঙ্ঘু বর্ডারে কৃষক আন্দোলনের সময় যেমন সীমানায় পেরেক বসানো হয়েছিল, বাংলায় তা হয় না। তাই সেই বিজেপি-র ভাষণ দেওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেন অভিষেক।

বিজেপিকে নিশানা করে এদিন একের পর এক তোপ দাগেন অভিষেক। আরজি-কর কাণ্ডে বিজেপি যে ভাবে শাসকদলকে বিঁধছে এবং মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি তুলছে, তা নিয়ে অভিষেক বলেন, “মহিলাদের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও অন্যায়ের ঘটনা সবচেয়ে বেশি কোনও রাজ্যে যদি ঘটে থাকে, এনসিআরবি অনুযায়ী প্রথমেই রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, দ্বিতীয় মধ্যপ্রদেশ, তৃতীয় রাজস্থান, চতুর্থ মহারাষ্ট্র।” এই পরিস্থিতিতে সুকান্ত মজুমদারদের উদ্দেশে অভিষেকের বার্তা, তাঁরা যেন যোগী আদিত্যনাথদের পদত্যাগ দাবি করেন। একই সঙ্গে মঙ্গলবার নবান্ন অভিযান প্রসঙ্গে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, “গতকাল যাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন, কোনও ভদ্রলোককে আপনি দেখতে পাবেন না। আমরা দেখেছি, কেউ বলছেন বিএসসিতে সায়েন্স নিয়ে কমার্স পড়ছেন। কারও ২৩ বছর বয়স, বলছে স্কুলে পড়ে কিন্তু স্কুলের নাম বলতে পারছেন না। এই হল বিজেপির প্রকৃত চেহারা।” নবান্ন অভিযানের ঘটনায় পুলিশ সংযম দেখিয়েছে বলেও দাবি করেন এদিন তিনি। তাঁর কথায়, “ইট, পাটকেল, ঢিল ছুড়ে পুলিশকে আক্রমণ করা হয়েছে। পুলিশ যে সংযমের পরিচয় দিয়েছে, তা প্রমাণ করে বাংলা উত্তরপ্রদেশ বা গুজরাট বা মণিপুর নয়।”

এর আগেও সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্ষণ-বিরোধী কঠোর আইনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন অভিষেক। এদিন সেই প্রসঙ্গই সমাবেশের মঞ্চ থেকে ফের তোলেন তিনি। জনগণের উদ্দেশে এদিন প্রশ্ন ছুড়ে দেন অভিষেক— “দেশে ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন আসা উচিত কি উচিত না? এক থেকে দুই মাসের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শেষ করে দোষী সাব্যস্ত করার মতো আইন আসা প্রয়োজন কি না?” একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “যাঁরা নবান্ন অভিযান করে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি করছেন, তাঁরা ক্ষমতা থাকলে দেশে ধর্ষণ বিরোধী আইন আনার জন্য নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার কাছে দাবি জানান। এদের ক্ষমতা নেই এই আইন আনার। কারণ যদি এই আইন আসে, তা হলে সবার আগে জেলে যাবেন বিজেপির লোকেরা।” অভিষেকের আশ্বাস, ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইনের দাবিতে আন্দোলন তৃণমূল দিল্লি পর্যন্ত নিয়ে যাবে। ১০০ দিনের কাজের টাকার দাবি দিল্লিতে গিয়ে আন্দোলনের কথাও স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। অভিষেক বলেন, “ওঁরা বলছে দাবি এক, দফা এক— মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ। আমি বলছি, দাবি এক, দফা এক— ধর্ষণ বিরোধী আইন। আগামী দিনে তৃণমূল কংগ্রেস দিল্লিতে যাবে কেন্দ্রের সরকার ধর্ষণ বিরোধী আইন আনে। রাতারাতি নোট বাতিল হতে পারে, লকডাউন করতে পারে, তা হলে ধর্ষণ বিরোধী আইন আসে না কেন? যাঁরা এই নারকীয় বর্বর ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের সমাজে থাকার অধিকার নেই।”

আরও পড়ুন:মিলে গেল অভিষেক-মমতার সুর, ধর্ষণ রুখতে কড়া আইন চেয়ে রাতারাতি মোদিকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর

একই সঙ্গে ১৪ অগস্ট মেয়েদের রাত দখলের লড়াইকে তাঁরা সমর্থন করেন বলেও জানিয়েছেন অভিষেক। তিনি বলেন, “আমরা সেই লড়াইকে সম্মান জানাই। যাঁরা রাস্তায় নেমেছিলেন বা রাস্তায় বসে প্রতিবাদ করেছিলেন, তাঁদের একটাই দাবি ছিল। ধর্ষণমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা এবং বিচার ব্যবস্থা দ্রুত সম্পন্ন করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা।” অভিষেকের এদিন সাফ বক্তব্য, অভিষেকের বক্তব্য, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রুখতে এমন একটি ধর্ষণ বিরোধী আইন প্রয়োজন যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তিনি বলেন, “কেন্দ্র যদি এই আইন আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে প্রণয়ন না করে, তা হলে তৃণমূল দিল্লিতে বৃহত্তর আন্দোলন গড়বে। মানুষ রাস্তায় নামলে কেউ আটকাতে পারবে না।” তিনি আরও বলেন, “কেন্দ্র যদি এই আইন না আনে, তবে প্রাইভেট মেম্বার বিলের মাধ্যমে আমি এই বিল পেশ করব। প্রত্যেক সাংসদের অধিকার রয়েছে প্রাইভেট মেম্বার বিলের মাধ্যমে সেটিকে বিল হিসাবে আইনসভায় পাশ করিয়ে আইন তৈরি করার। আমরা তা আগামী দিনে করব।”

এদিন এই মঞ্চ থেকেই বড় ঘোষণাও করে দেন অভিষেক। জানান, আগামী দিনে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সময় ৫৫ শতাংশ আসনে মেয়েদের লড়াইয়ের সুযোগ দেওয়া হবে। পুজোর পরেই রাজ্যের সমস্ত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন করার কথাও এদিন ঘোষণা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেক জানান, “বিজেপি মহিলা সংরক্ষণ বিল এনেছিল। সেটি লবডঙ্কা। আমাদের ২৯ জন সাংসদের মধ্যে ১২ জন মহিলা সাংসদ। পঞ্চায়েত স্তরে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ করে দেখিয়েছি আমরা। এ বার ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ৫৫ শতাংশ আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষণ করা হবে।”

এদিকে বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতাকে পরোক্ষ ভাবে হিংসায় উস্কানি বলে দাবি করেছেন বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার। সুকান্ত বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষের উপর আক্রমণ করতে উস্কানি দিয়েছেন। সাংবিধানিক পদে থেকে তিনি ফোঁস করতে বলেছেন তাঁর দলের হার্মাদদের।’’ মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হিংসায় উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠিও লিখেছেন সুকান্ত।

More Articles