মোকার হানাদারি অন্যত্র? কী ভাবে বাঁচল বাংলা

Cyclone Mocha : ঠিক কোথায় তাণ্ডব চালাবে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোকা? বাংলায় প্রভাব কতটা?

যশ, ইয়াশের পর এবার মোকা, বঙ্গোপসাগরে মে মাস মানেই ঘূর্ণিঝড়ের অশনি সংকেত। বেশ কিছুদিন যাবৎ সংবাদের শিরোনাম দখল করে রয়েছে এই ঝড়। আবহাওয়াবিদদের তরফে রোজই নতুন নতুন বার্তা দিতে সাবধানতা জারি শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। প্রথমে বলা হয়েছিল গত সপ্তাহের শেষ থেকেই স্থলভাগে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করবে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মোকা। যদিও এখনও উপযুক্ত সময় উপস্থিত হয়নি বলেই ল্যান্ড ফল হয়নি বলেই দাবি আবহাওয়াবিদদের।

ঠিক কোথায় আছড়ে পড়তে চলেছে আসন্ন ঘূর্ণিঝড় মোকা, সে নিয়ে এখনও সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি হাওয়া অফিস। নিম্নচাপ ঘনীভূত হলেই তা স্পষ্টভাবে বলা সম্ভব, এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ধারণা করা হচ্ছে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে মোকা। তবে এসবের মধ্যেই বাংলার তরফে ইতিবাচক সংকেত দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ঘনীভূত আশঙ্কায় জল ঢেলে তাঁরা জানিয়েছেন, অনুমান সঠিক হলে ঘূর্ণিঝড় মোকার উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবেশ করার সম্ভাবনা অনেকটাই কম। ফলে শেষ পর্যন্ত যদি এই ঝড় উত্তর বঙ্গোপসাগর উপকূলে প্রবেশ না করে তবে বাংলার ক্ষেত্রে তা স্বস্তির খবর। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে মেঘলা আকাশ, হালকা বৃষ্টি ও সামান্য ঝড়ো বাতাস ছাড়া আর কোনও প্রভাব সেভাবে পড়বে না বলেই জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন - মোচা নয়, আসন্ন ঘূর্ণিঝড়ের আসল নামের আড়ালে রয়েছে বিশ্ববিখ্যাত এক কফি!

যদিও IMD সূত্রে জানা যায় গতকালই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে মোকা। আজ অর্থাৎ বুধবার থেকে তা আরও শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। আগামী ১২ মে শুক্রবার থেকে তা প্রবল শক্তিশালী সাইক্লোনে পরিণত হবে। প্রাথমিক বিবৃতিতে জানা গিয়েছে, দক্ষিণ পূর্ব বঙ্গোপসাগর, পূর্ব মধ্যাঞ্চলীয় বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগরে তৈরি হবে মোকা। এখনও পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মোকা উত্তর পূর্ব দিকে বাংলাদেশ, মায়ানমার উপকূলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যদিও এখনও বাংলার ওপর থেকে সম্পূর্ণ সতর্কতা সরিয়ে নেয়নি হাওয়া অফিস। উপকূলবাসীদের সমুদ্রে যাওয়ায় রয়েছে নিষেধাজ্ঞা।

এদিকে সাইক্লোনের প্রভাব বাংলায় তীব্র রূপ না নিলেও আবহাওয়ায় প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ এবং পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড় বাংলা থেকে জলীয় বাষ্প টানতে শুরু করেছে। এর ফলেই দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়া শুষ্ক থেকে শুষ্কতর হচ্ছে। এর ফলে তাপমাত্রার পারদ উর্দ্ধমুখী। পাশাপাশি আর্দ্রতাজনিত অস্বস্তি তো আছেই। গত যে গরমে হাঁসফাঁস পরিস্থিতি হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গের মানুষের, ফের সেই দিকেই এগোচ্ছে পারদ।

আরব সাগরের দেশ ইয়েমেনের দেওয়া নাম এই মোকা। ওই দেশে বিখ্যাত মোকা কফি থেকে এর আগে একটি পুরনো বন্দরের নামকরণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ ক্ষেত্রেও এই একই শব্দ ব্যবহার করা হয়। উৎপন্ন হওয়ার পর গতিপথ পরিবর্তন করে এটি ক্রমশ উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে।আবহবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন মডেলের মাধ্যমে জানাচ্ছেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল মায়ানমার এবং বাংলাদেশ উপকূলে হবে। বাংলাদেশের চট্টগ্রাম মহেশখালি অথবা টেকনাফ এলাকায় এর প্রভাব বেশি পড়বে বলেই জানা গিয়েছে। ফলে এইসব আলোচনার ভিত্তিতেই বাংলাকে খানিকটা হলেও বিপদ মুক্ত হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও ২৪ ঘণ্টার ইমারজেন্সি কন্ট্রোল রুম চালু করা হয়েছে বাংলাতেও। এখন অপেক্ষা এই সপ্তাহ শেষের জন্য, ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার পরই বোঝা যাবে আগামী গতিবিধি।

More Articles