কলকাতাতেই রয়েছে দেড়শ বছরের প্রাচীন এই মন্দির! জৈনদের যে ঐতিহ্য অনেকেরই অজানা

One Day Tour : কলকাতার মধ্যেই টুকরো ভ্রমণ, গন্তব্য পরেশনাথের মন্দির

শীতকাল মানেই ভ্রমণ। এমনই এক ভ্রমণের ঠিকানা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে রয়েছে এই প্রতিবেদনে।

ব্যস্ত সকালে ভ্রমণপ্রেমীদের মন ভালো করার উপায় নতুন ভ্রমণের ঠিকানা। সপ্তাহ শেষে শীতের খুব ভোরে চোখ মুছতে মুছতে গন্তব্যে যাত্রা। এই স্বাদ তারাই জানে যারা আদতে ভ্রমণপ্রেমী। তবে আজ আমি এমন এক জায়গার সন্ধান দেবো তা এই শহর কলকাতার মধ্যেই রয়েছে। কাজেই কলকাতাবাসীকে খুব ভোরে না উঠলেও চলবে। কলকাতার মধ্যেও যে এত সুন্দর একটা জায়গা রয়েছে তা অনেকেই জানে না। কলকাতা মানেই মাথায় আসে ভিক্টোরিয়া জাদুঘর, চিড়িয়াখানা বা আরও বেশ কিছু জায়গা। তবে এখানে গেলে কী ভাবে যে সময় চলে যাবে তা বুঝে ওঠাই দায়!


কী এবার বলি তাহলে কোন জায়গার কথা বলছি?

এতক্ষণ উত্তর কলকাতার পরেশনাথ মন্দিরের কথা বলে চলেছি।

 

কী দেখবেন?

পরেশনাথ মন্দিরে মূলত চারটি অংশ রয়েছে। প্রধান মন্দিরটিতে জৈনদের দশম তীর্থঙ্কর ভগবান শীতলনাথের শীতলনাথ মন্দির আছে। এই প্রধান মন্দিরের দক্ষিণে চন্দ্র প্রভুজী মন্দির, উত্তরে মহাবীর মন্দির আছে। আর প্রধান মন্দিরের ডান দিকে যে মন্দিরটি আছে সেখানে জৈন দাদাজী গুরু এবং কুশলজী মহারাজের পদচিহ্ন পুজো করা হয়। মন্দিরের ভিতরে রয়েছে একটি সুন্দর বাগান। সমগ্র মন্দিরটি গ্লাস, মোজাইক, ইউরোপীয় মূর্তি, এছাড়াও অনেকগুলি ফোয়ারা এবং একটি জলাশয় আছে। জলাশয়টিতে অনেক রঙিন ছোট বড় মাছ রয়েছে। মূল মন্দিরটি বহুমূল্য ধাতু, হীরা, সাদা মার্বেল, প্রবাল দিয়ে বেশ সুন্দর কারুকার্য করা যা দেখে সত্যিই মন ভরে যায়।


কীভাবে যাবেন?

শিয়ালদহ থেকে খান্নার দিকের যে কোনো বাসে সাহিত্য পরিষদ স্টপেজে নামতে হবে। হাওড়া স্টেশন থেকে এলেও মানিকতলা উল্টোডাঙ্গাগামী যে কোনও বাসে সাহিত্য পরিষদে নামতে হবে। তারপর সাহিত্য পরিষদ থেকে হাঁটা পথে মাত্র দুমিনিট।


কখন যাবেন?

সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২ টা অথবা বিকেল ৩ টে থেকে রাত ৭ টা অবধি খোলা থাকে এই মন্দির।


ইতিহাস

১৮৬৭ সালে রায় বাহাদুর বদ্রিদাস মুকিম নামের জনৈক মারোয়াড়ি শ্রীমল জৈন এই মন্দিরটি নির্মাণ করান। মন্দির প্রতিষ্ঠার দায়িত্বে ছিলেন শ্রী কল্যাণসুরেশ্বরজী মহারাজ। শোনা যায়, পরেশনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহের ভিতরে একটি ঘিয়ের প্রদীপ রয়েছে, যা ১৮৬৭ সাল থেকে একটানা প্রজ্জ্বলিত হয়ে আসছে। আজ পর্যন্ত কখনও তা নিভে যায়নি। জৈনদের বিশ্বাস অহিংসা এবং শান্তির প্রতীক হিসেবে এই পুণ্যশিখা চিরদিনের জন্যে প্রজ্জ্বলিত থাকবে।


বিশেষ অনুষ্ঠান

রাসপূর্ণিমায় জাঁকালো উৎসব হয় এই পরেশনাথ মন্দিরে।

More Articles