ফালাকাটায় রাহুল গান্ধি? না পেলি আমাকে আর তোকেও আমি পেলাম না

Exclusive: প্রায় সাত হাজার স্থানীয় লোককে রাহুল গান্ধির 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'য় সামিল করার পরিকল্পনা ছিল স্থানীয় কংগ্রেসের। কথা ছিল, চা-বলয় থেকে শ্রমিকরা আসবেন। ছাত্র-যুব-মহিলাদের সঙ্গেও মুখোমুখি কথা বলবেন রাহুল।

শহরে ঢোকার মুখে বিশাল তোরণদ্বার। দেখলেই মনে হবে এই বুঝি তিনি এসে পড়লেন। তাঁর ফেস্টুনে, পোস্টারে আর প্ল্যাকার্ডে শহরটা প্রায় মুড়ে ফেলা হয়েছে। পেট্রোল পাম্পেও সাজো সাজো রব। সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গাড়ি। তারা যাত্রায় যোগ দিতে এসেছিলেন। দেখতে এসেছিলেন তাঁদের প্রিয় নেতাকে। মুখিয়ে ছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতাকর্মীরাও। কিন্তু এত প্রস্তুতি বৃথা গেল!

যে ঘটনা ঘটল, বাংলা প্রবাদে তাকে বলে, “সাইজ্যাগুইজ্যা রইল রাই, এই লগনে বিয়া নাই"। কথা ছিল, শনিবার রাহুল গান্ধি ফালাকাটায় আসবেন। সেই মতো শহরের টাউন ক্লাবে বিশাল আয়োজন করা হয়। ক্যাম্প পর্যন্ত তৈরি হয়েছিল। যুবকর্মীদের জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল ডাকবাংলোয়। আশেপাশের হোটেলগুলিকেও বুক করে ফেলা হয়েছিল। সব মিলিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার আয়োজন। কিন্তু মাঠে মারা গেল সবটাই। রাহুল গান্ধি ফালাকাটায় এলেন না।

প্রায় সাত হাজার স্থানীয় লোককে রাহুল গান্ধির 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা'য় সামিল করার পরিকল্পনা ছিল স্থানীয় কংগ্রেসের। কথা ছিল, চা-বলয় থেকে শ্রমিকরা আসবেন। ছাত্র-যুব-মহিলাদের সঙ্গেও মুখোমুখি কথা বলবেন রাহুল। কিন্তু প্রস্তুতিই সার। স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের মুখ খানিকটা ম্লান হল। ফালাকাটা কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি মৃন্ময় সরকার বলেন, "অন্তত ১৫ লাখ টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এখনও জানি না এই বিল কীভাবে মেটানো হবে? এখানে রাহুলজী আসতে পারতেন। আমরা চা-শ্রমিক, টোটো কম্যুনিটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে রেখেছিলাম। কিন্তু শেষমেশ নিরাশ হতে হল। আমি ইতিমধ্যেই রাহুলজীকে চিঠি পাঠিয়েছি। লিখেছি, আমাদের এই টাউন ক্লাবের মাঠেই, যেখানে তাঁর থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল, সেখানেই ইন্দিরা গান্ধি দু'বার জনসভা করেছেন। ফালাকাটায় দু'বার এসেছেন রাজীব গান্ধিও। এবং মা-ছেলে দু'জনেই ভোটে সাফল্য পেয়েছেন। রাহুলজী এলেও সাফল্য পেতেন। আমরা হয়তো শিলিগুড়ি যাব, কিন্তু আক্ষেপ রয়েই গেল।"

স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্বের এখন একটাই আশা, নির্বাচনের অব্যবহিত পূর্বে রাহুল যেন একবার ফালাকাটায় কোনও জনসভায় আসেন। মুখ ম্লান ফালাকাটার কংগ্রেস যুবকর্মীদেরও। পরিকল্পনা মুহুর্মুহু ভণ্ডুল হয়ে যাওয়াই কিছুটা বিপদেই পড়েছেন তাঁরা। এমনকি তাঁদের রাহা-খরচের ব্যবস্থা কী হবে─সে ব্যাপারেও অনেক ধোঁয়াশা রয়ে গেল। আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার জেলা কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে রাহুলের বৈঠকও পণ্ড হয়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে হতাশ ফালাকাটার কংগ্রেসে সমর্থকরা। এঁদের একটা অংশ সকাল সকাল জলপাইগুড়ি রওনা হচ্ছেন। জলপাইগুড়ির পিডব্লিউডি মোড় থেকে দুপুর একটা নাগাদ পদযাত্রা শুরু করার কথা রাহুলের। তাঁরা ভাবছেন, নিজের এলাকায় না হোক, নিজের নেতাকে দেখতে না হয় দূরেই গেলাম। না হয় একটু কসরৎ করতেই হল।

More Articles