বিজেপিরই শাখা সংগঠন নির্বাচন কমিশন? কেন রাজকুমার রাওকে দিয়ে প্রচার বিকশিত ভারতের!

Election Commission & Viksit Bharat Run: ২০২৩ সালের অক্টোবরে রাজকুমার রাওকে নির্বাচন কমিশন 'ইসিআই জাতীয় আইকন' হিসাবে নিযুক্ত করে। অর্থাৎ তিনি ভারতের নির্বাচন কমিশনের একজন অ্যাম্বাসাডর।

বিজেপি সরকার আর নির্বাচন কমিশন কি বন্ধু? নির্বাচন কমিশন কি বিজেপিরই শাখা সংগঠন? প্রশ্ন উঠছে। লোকসভা নির্বাচনের ৩টি দফা পেরিয়ে গেছে, আরও চার দফার লড়াই বাকি। সারা দেশেই জারি আছে নির্বাচনী বিধিও। তারই মধ্যে কেন বিজেপির প্রচার অনুষ্ঠানকে সমর্থন ও প্রচার করছে নির্বাচন কমিশন? দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে 'বিকশিত ভারত দৌড়'-এর আয়োজন করা হয়েছিল। বিকশিত ভারত বিজেপি সরকারের প্রচারমূলক স্লোগান। বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই অনুষ্ঠানে বিজেপি নেতা সাইনা নেহওয়াল পতাকাও নাড়ান। কিন্তু এই একই অনুষ্ঠানে ছিলেন অভিনেতা রাজকুমার রাও-ও।

অসুবিধা কোথায়? কত অভিনেতাই তো বিজেপির প্রচারে যান। ২০২৩ সালের অক্টোবরে রাজকুমার রাওকে নির্বাচন কমিশন 'ইসিআই জাতীয় আইকন' হিসাবে নিযুক্ত করে। অর্থাৎ তিনি ভারতের নির্বাচন কমিশনের একজন অ্যাম্বাসাডর। দেশ জুড়ে নির্বাচনী আচরণ বিধি কার্যকরী থাকাকালীন একজন বিজেপি নেতার সঙ্গে কীভাবে খোদ নির্বাচন কমিশনের অ্যাম্বাসাডর বিজেপির প্রচারাভিযানের অনুষ্ঠানে প্রতিনিধি হয়ে যাচ্ছেন?

আরও পড়ুন- কত ভোট পড়ল জানাতে এত দেরি! কারচুপি লুকোতে চাইছে নির্বাচন কমিশন?

ইলেকশন কমিশনের বিরুদ্ধে আগেও শাসক বিজেপির নানা ঘৃণাভাষণ উপেক্ষা করার অভিযোগ উঠেছে। মোদির মুসলিমদের নিয়ে অকথ্য অপমান নির্বাচনী আবহেও ক্লিনচিট পেয়েছে কমিশনের, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব ছিল লক্ষ্যণীয়। তা বলে সরাসরি বিজেপির অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করছেন কেন কমিশন?

কংগ্রেসের দিল্লি শাখা ভারতের নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ দায়ের করে বলেছে, দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকশিত ভারত অনুষ্ঠানটি 'মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট' লঙ্ঘন করেই আয়োজিত হয়েছিল। অভিযোগে বলা হয়েছে, অনুষ্ঠানের পোস্টারে প্রধানমন্ত্রীর ছবি ছিল এবং অনুষ্ঠানটিকে 'নির্বাচনী প্রচার' বলেই উল্লেখ করা হয়েছে। নির্বাচনী আদর্শ আচরণ বিধিতে কী কী করা যাবে না বিভাগে স্পষ্ট উল্লেখ করা আছে, "প্রচার/নির্বাচনের সঙ্গে কোনও অফিশিয়াল কাজ মেশানো উচিত নয়"। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকশিত ভারত দৌড় এই বিভাগেই পড়ে।

লোকসভা নির্বাচনের ষষ্ঠ দফায় ২৫ মে দিল্লিতে ভোট হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ২ মে বলেছিল তারা 'রান ফর বিকশিত ভারত' অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে। সেখানে ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় সাইনা নেহওয়াল, বলিউড অভিনেতা রাজকুমার রাও এবং উপাচার্য যোগেশ সিং উপস্থিত থাকতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক এবং বিজেপি নেতা কুলজিত সিং চাহালের মধ্যে এক বৈঠকের পরেই এই অনুষ্ঠানের ঘোষণা করা হয়।

আরও পড়ুন- রক্ষকই কি ভক্ষক? লোকসভা ভোটের ময়দানে কতটা স্বচ্ছ নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা?

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সূত্র বলছে, নির্বাচন কমিশন কোনও পাল্টা নির্দেশ না দেওয়ায় অনুষ্ঠানটি বাতিল করার প্রশ্নই ওঠেনি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় বলছে, প্রধানমন্ত্রী বিকশিত ভারতের উদ্বোধন করেছিলেন ঠিকই তবে নির্বাচন বা কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নর্থ ক্যাম্পাসে ৫,০০০ জনেরও বেশি যুব ২.৪ কিমি দীর্ঘ বিকশিত ভারত দৌড়ে অংশ নিয়েছিল। তাঁদের উৎসাহিত করতে ক্যাম্পাসে যান অভিনেতা রাজকুমার রাও এবং ব্যাডমিন্টন তারকা সাইনা নেহওয়াল। ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে খেলাধুলোর মাধ্যমকে ব্যবহার করতেই রাজকুমার ও সাইনা এগিয়ে এসেছিলেন বলে জানাচ্ছে বিকশিত ভারত দৌড়ের আয়োজকরা। ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পস (এনসিসি) এবং ন্যাশনাল সার্ভিস স্কিম (এনএসএস) শাখাগুলির সক্রিয় ছাত্ররাও এই দৌড়ে অংশ নেন।

More Articles