ডবল ধামাকা! শুধু ওয়ানাড় নয়, রায়বরেলিতেও জিততে চলেছেন রাহুল গান্ধি?

Rahul Gandhi Lok Sabha Election Results: ওয়ানাড়ে তিনিই সাংসদ, এবার রায়বরেলিতেও বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে রাহুলের।

দু'টি আসন থেকে লড়ছেন রাহুল গান্ধি, গত লোকসভা নির্বাচনের মতোই। তবে একটি আসন এবার বদলেছেন তিনি। গতবারের আমেথির বদলে বেছে নিয়েছেন মা সনিয়া গান্ধির দীর্ঘদিনের গড় রায়বরেলি। পাশাপাশি লড়ছেন ওয়ানাড় আসন থেকেও। কেরলের এই লোকসভা আসনটির সাংসদও তিনিই। বিভিন্ন বুথ ফেরত সমীক্ষা বলছে, এবারও কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধি ওয়ানাড় লোকসভা আসনটি ধরে রাখবেন। এই আসনে লড়াই হয়েছে ভালোই, তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এগিয়ে আছেন রাহুল। আর রায়বরেলি? রাহুল কি দু'টি আসনেই জিতবেন এবার?

ইন্ডিয়া টুডে-অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়া-র এক্সিট পোল অনুসারে, রাহুল গান্ধি কেরলের ওয়ানাড় আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী এবং রাজ্য বিজেপির প্রধান কে সুরেন্দ্রনের থেকে এগিয়ে রয়েছেন। তবে শুধু বিজেপি নয়, ময়দানে রয়েছেন আরেকজন প্রার্থীও। প্রবীণ সিপিআই নেতা অ্যানি রাজা।

এক্সিট পোল একেবারে অক্ষরে অক্ষরে সত্য নাও হতে পারে। তবে ৫৪৩টি সংসদীয় নির্বাচনী এলাকায় প্রায় ৬ লক্ষ মানুষের সঙ্গে কথা বলে যে চিত্র উঠে আসছে তাতে রাহুলের দিকেই ওয়ানাড় আসনের পাল্লা ভারী। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে, রাহুল গান্ধি ওয়ানাড় আসনটি জিতেছিলেন ৭ লক্ষেরও বেশি ভোট পেয়ে। সেবার তিনি হারিয়েছিলেন সিপিআই প্রার্থী পিপি সুনীরকে, তিনি ২.৭ লক্ষ ভোট পেয়েছিলেন।

আরও পড়ুন- আমেঠি নয়, লোকসভায় লড়ার জন্য কেন রায়বরেলি বাছলেন রাহুল গান্ধি?

লোকসভা নির্বাচনে কেরলে ক্ষমতাসীন বামফ্রন্ট জোট ওয়ানাড় সহ সমস্ত আসনেই প্রার্থী দিয়েছে। অথচ জাতীয় স্তরে ইন্ডিয়া জোটের শরিক বামেরা। পশ্চিমবঙ্গে বাম ও কংগ্রেস হাত মেলালেও কংগ্রেসের সঙ্গে কেরলে আসন ভাগাভাগিতে যায়নি বামেরা।

সিপিআই ওয়ানাড় আসনে রাহুল গান্ধির বিরুদ্ধে দলের বরিষ্ঠ নেতা অ্যানি রাজাকে প্রার্থী করে। ওয়ানাড় ছাড়াও, সিপিআই তিরুবনন্তপুরম থেকে পান্নান রবীন্দ্রনকে প্রার্থী করেছে। বর্তমানে এই আসনের দখল রয়েছে বর্তমানে কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের কাছে। সিপিআই এবং অন্যান্য বাম দলগুলি কেরলে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে নেমেছে।

অন্যদিকে রাহুলের হাতে রয়েছে আরেকটি আসন, গর্বের আসন। কংগ্রেসের একদা গড় রায়বরেলি। সনিয়া রাজ্যসভার সাংসদ হয়ে যাওয়ায়ে এই আসনটি ছেড়ে দেন। তাঁর পুত্র আমেঠি আসনে গতবার স্মৃতি ইরানির কাছে হেরে যান। এবার মায়ের আসন রায়বরেলিতে তিনি প্রার্থী। নিউজ ১৮-এর মেগা এক্সিট পোল বলছে রায়বরেলিতে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে রাহুলের। এই আসনে তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতীয় জনতা পার্টির দীনেশ প্রতাপ সিং।

আরও পড়ুন- ১৮০-র বেশি আসন পেরোতে পারবে না বিজেপি! কেন এমন বলছেন রাহুল গান্ধি?

১৯৫২ সালে ফিরোজ গান্ধি প্রথম রায়বেরেলি থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ফিরোজ গান্ধির মৃত্যুর পর ১৯৬০ সালের উপনির্বাচনে কংগ্রেসের আরপি সিং এবং ১৯৬২ সালে কংগ্রেসের আরেক নেতা বৈজ নাথ কুরেলের হাতে ছিল এই আসনটি। ইন্দিরা গান্ধি নিজে এই আসনটি ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত ধরে রাখেন। ১৯৮০ সালে, ইন্দিরা গান্ধি রায়বরেলি ও মেদক আসনে জেতেন কিন্তু তিনি মেদক আসনটি বেছে নেন এবং রায়বরেলি থেকে পদত্যাগ করেন। ইন্দিরা গান্ধির এক পিসি শীলা কৌল ১৯৮৯ এবং ১৯৯১ সালে রায়বরেলি আসনে জেতেন। ১৯৯৯ সালে, গান্ধি পরিবারের আরেক বন্ধু, সতীশ শর্মা রায়বরেলি আসনে জেতেন। তারপর শুরু হয় সনিয়া গান্ধির পালা।

পাঁচ দফার সাংসদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যখন সনিয়া গান্ধি রায়বরেলি আসন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখন ভোটারদের একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, স্বাস্থ্য এবং বাড়তে থাকা বয়সের কারণে পরবর্তী লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না তিনি।

১৯৭৭ সালে জরুরি অবস্থার প্রেক্ষিতে কংগ্রেস এই আসনটি জেতেনি। জনতা পার্টির রাজ নারায়ণ ইন্দিরা গান্ধিকে হারান। আর বিজেপির অশোক সিং ১৯৯৬ এবং ১৯৯৮ সালে এই আসন জিতেছিলেন। এবার রাহুল কংগ্রেসের এই দীর্ঘকালীন গড়কে ধরে রাখতে সত্যিই পারছেন কিনা তা জানা যাবে ৪ জুন। 

এক্সিট পোল বলছে, বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স উত্তর প্রদেশে ৬৮ থেকে ৭১টি আসন জিততে পারে। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোট ৯ থেকে ১২টি আসন জিততে পারে। এর মধ্যে কংগ্রেস তিন-থেকে ছয়টিতে জিততে পারে বলে অনুমান।

More Articles