মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক হলো না! কোন পথে এগোবেন জুনিয়র ডাক্তাররা?

Mamata Banerjee and Junior Doctors Meet: এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী? আন্দোলন কি আরও তীব্র হবে? মুখ্যমন্ত্রী কি কোণঠাসা হবেন?

আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে একমাস ধরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। একাধিক মেল আদান-প্রদানের পর আলোচনা জন্য রাজি হয়েছিলেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। তবে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি ছিল লাইভ স্ট্রিমিং করতে হবে ওই বৈঠকের এবং ৩০ জন প্রতিনিধিকে আলোচনা সভায় রাখতে হবে। কিন্তু শেষমেশ এই দাবি মানেনি রাজ্য সরকার। শূন্য হাতেই স্বাস্থ্য ভবনের অবস্থান মঞ্চে ফিরে এসেছেন তাঁরা। সেই বৈঠকের জন্য নবান্ন সভাঘরে দু'ঘণ্টা অপেক্ষাও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সন্ধেয় সাংবাদিক বৈঠকও করেছেন তিনি। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে এই আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কী? আন্দোলন কি আরও তীব্র হবে? মুখ্যমন্ত্রী কি কোণঠাসা হবেন?

নাম জানাতে অনিচ্ছুক মেদিনীপুরের এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, "জুনিয়র ডাক্তাররা গিয়েছিল নবান্নে কথা বলতে কিন্তু ওরা লাইভ টেলিকাস্ট করতে বারণ করে দিয়েছে।" তাঁর কথায়, "রাজ্য প্রশাসন কেন লাইভ টেলিকাস্ট করছে না, করতে চাইছে না আমরা জানি না। এটা জনগণের লড়াই, সবার সামনেই এর আলোচনা হওয়া উচিত। যতক্ষণ না আমাদের দাবি মানা হচ্ছে অবস্থান চলবে।"

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয় সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, "পদত্যাগ করতে রাজি আছি, ওরা বিচার চায় না, ওরা চেয়ার চায়, আমি তিলোত্তমার বিচার চাই।" এই নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেদিনীপুরেরই অন্য এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, "আমরা কারও পদত্যাগ চাই না। আমরা চাই সঠিক বিচার হোক। তিনি (মুখ্যমন্ত্রী) ভালো করেই জানেন আমরা কী চাই। আমাদের দাবিগুলো যথেষ্ট স্পষ্ট। তিনি যদি মিডিয়ার কাছে এবং জনসাধারণের কাছে এগুলো বলে সহানুভূতি চান, উই আর ভেরি স্যরি। তিনি যদি মনে করেন আমরা চেয়ার চাই, তাহলে হ্যাঁ, আমরা চেয়ার চাই। আমরা যে আসলে বিচার চাই সেটা সবাই-ই জানেন।"

আরও পড়ুন- স্নায়ুযুদ্ধে ডাক্তারদের কাছে জিতে গেলেন মমতা?

মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, "বাংলার মানুষের কাছে ক্ষমা চাইছি, তিনদিনেও সমাধান করতে পারিনি, ক্ষমা করলাম ডাক্তারদের।" নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুনিয়র ডাক্তার মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেছেন, 'ওঁর থেকে ক্ষমা আমরা চাইনি। আমরা কেবল চেয়েছি, আমাদের দাবিগুলো মিটিয়ে দিন। ডাক্তারদের গোষ্ঠী ওঁর দাবি মানছে না।" তাঁর কথায়, 'আমাদের দাবিগুলো খুব স্পষ্ট ছিল, লাইভ স্ট্রিমিংয়ে আলোচনা। ২০১৯ সালে যে ভিডিও কনফারেন্স হয়েছিল তার পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না। এতে তিনি যদি মানুষকে বোঝাতে চান জুনিয়র ডাক্তাররা কতটা উদ্ধত, তা তিনি বলতেই পারেন।"

প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার সন্ধেয় পদত্যাগের কথাও বলেন। বাংলার মানুষের কাছে তিনি বার্তা দিতে চান, তিনি নিঃস্বার্থভাবে জনসাধারণের কথা ভেবে এ কাজ করছেন। অথচ এই আন্দোলন যারা চালিত করছে তাঁরাই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে বাংলার স্বাস্থ্য কাঠামোর কোমর ভেঙে দিতে চাইছে বলে প্রমাণ করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। ডাক্তারদের অবস্থান যে চলবে আগামীতেও, তা স্পষ্ট। মুখ্যমন্ত্রী কি পদত্যাগের মতো কঠিন পথে হাঁটবেন? তাহলে কোন পথে যাবে আন্দোলন? প্রশ্ন উঠছে।

 

More Articles