আম্বানিদের পার্টিতে টিস্যুর বদলে দেওয়া হলো ৫০০ টাকার নোট?

Ambani Party Daulat ki Chaat: দৌলত কি চাট মূলত উত্তর ভারতের খাবার। বিশেষ করে পুরনো দিল্লিতে এই মিষ্টির কদরই আলাদা।

আম্বানি। নাম শুনলেই যা যা ধারণা করা যায় বা যা যা ধারণাতীত সমস্তটাই সম্ভব হয়ে ভেসে ওঠে এক্ষেত্রে। আম্বানি পরিবারের জীবনযাত্রা, তাঁদের আড়ম্বর, অন্দরসজ্জা, সবটাই এই পোড়া দেশে চর্চিত। আসলে নাগালের মধ্যে না থাকা বিষয়ের প্রতি আগ্রহ ও আকর্ষণ বরাবরের। দেশের ধনী মানুষদের জীবন নিয়ে তাই দেশের বাকি বিপুল অংশের বিশাল কৌতূহল। সম্প্রতি আম্বানিদের একটি পার্টিতে একটি বিশেষ খাবারের ডিশের ছবি ভারতবর্ষকে তাক লাগিয়েছে! আম্বানিদের আয়োজিত ওই পার্টিতে একটি মিষ্টির পদের সঙ্গে টিস্যুর বদলে দেওয়া হয়েছে কড়কড়ে ৫০০ টাকার নোট! টুইটারে এই পদের ছবিটি পোস্ট হওয়া মাত্রই তা ভাইরাল! মিষ্টির বাটিগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটিতেই অতিথিদের জন্য রাখা হয়েছিল ৫০০ টাকার নোট।

সত্যিই কি তাই? ছবিটি ভালো করে দেখলেই বোঝা যাবে বিষয়টি এমন নয় মোটেও। অতিথিদের টিস্যুর বদলে কড়কড়ে নোট দেওয়া হয়নি, বরং নিখাদ রসিকতা করা হয়েছে। দিল্লির বাসিন্দারা এই রসিকতাটি এক মুহূর্তেই ধরে ফেলেছেন! দিল্লির 'ইন্ডিয়ান অ্যাকসেন্ট' নামের একটি রেস্তোরাঁয় চমৎকার এই খাবারটি পরিবেশন করা হয়। খাবারটির নাম 'দৌলত কি চাট'। পদটির নামটি শুনেই বোঝা যায়, সমৃদ্ধির ইঙ্গিত লুকিয়ে আছে তাতে। সুতরাং আম্বানিদের পার্টিতে 'দৌলত কি চাট' পরিবেশন করা হবে সেই তো যথার্থ।

 

দৌলত কি চাট মূলত উত্তর ভারতের খাবার। বিশেষ করে পুরনো দিল্লিতে এই মিষ্টির কদরই আলাদা। দৌলত কি চাট দুধের ফেনা দিয়ে তৈরি একটি হালকা, বায়বীয়, মুখে দিলেই গলে যাওয়া এক মিষ্টি। ফেনা সাধারণত পেস্তা, খোয়া, এবং গুঁড়ো চিনি দিয়ে দেওয়া হয় মিষ্টির উপরে। দৌলত কি চাট শুধুমাত্র শীতের মরসুমেই মাস খানেক পাওয়া যায়। সেই সময় দুধ ঘন হয় এবং ফেনা ঘন হয়ে থাকে আর গলেও যায় না। নভেম্বর, ডিসেম্বর এবং জানুয়ারি মাসেই মূলত এই মিষ্টিটি পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন- অ্যান্টিলা ফেল! আম্বানির রাজপ্রাসাদকেও টেক্কা দেবে রতন টাটার এই বিলাসবহুল বাড়ি

মোরাদাবাদের খেমচাঁদ আদেশ কুমার এই খাবারটি প্রথম দিল্লিতে জনপ্রিয় করে তোলেন। পেশায় একজন কৃষক ছিলেন খেমচাঁদ। পরে চাটের এই মিষ্টি সংস্করণটি তিনি দিল্লিতে তৈরি করতে শুরু করেন। কাঁচা দুধের সঙ্গে ক্রিম মিশিয়ে সারা রাত বরফের স্ল্যাবের উপর রেখে ঠান্ডা করা হয়। প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা ঠান্ডা করার পরে, এর একটি অংশ সরানো হয় এবং হালকা এবং ফেনা ওঠা অবধি হাত দিয়ে ঝাঁকানো হয়। এই মিষ্টি দুধের মিশ্রণটিতে তারপর খোয়া এবং চেন্না মেশানো হয়। খাবারটির উপরে অতিরিক্ত খোয়া এবং এক চিমটি জাফরানও দেওয়া হয়। তবে এখন আর শুধু শীতের ভরসায় বসে থাকতে হয় না। সারাবছরই মেলে দৌলত কি চাট।

এবার আসা যাক মোদ্দা কথায়। 'ইন্ডিয়ান অ্যাকসেন্ট' রেস্তোরাঁটি জাল নোট ব্যবহার করে এই পদটিকে নতুন করে মানুষের কাছে তুলে ধরেছে। হ্যাঁ, সমস্ত নোটই জাল, দৌলত শব্দটিকে আক্ষরিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে ৫০০ টাকার জাল নোটই ব্যবহৃত হয়েছে এখানে। ভোজনরসিকরা তাই আম্বানিদের পার্টির এই রসিকতাটি ধরে ফেলেছেন। ধনী বলেই যে মিষ্টির সঙ্গে সমস্ত অতিথিদের ৫০০ টাকার নোট দেওয়া হবে এমন দরাজ দিল কি আম্বানিদের থেকে প্রত্যাশা করা যায়?

 

More Articles