রাত দখলের পর নিরাপদে ঘরে ফিরবেন তো মেয়েরা? থাকছে ওলা, উবের

RG Kar Midnight Protest: মধ্যরাতের জমায়েত সেরে মেয়েরা যখন বাড়ি ফিরবেন, তারা নিরাপদ তো?

স্বাধীনতার সেই ঐতিহাসিক দিন শুরু হতে যখন ঠিক ৫ মিনিট বাকি, সেই প্রায় মধ্যরাতে পথে নামবেন রাজ্যের মহিলারা। এ এক নতুন স্বাধীনতার ডাক। গভীরে ঢুকে যাওয়া পিতৃতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে নারী স্বাধীনতার ডাক। আরজি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের পর প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ মৃতার দিকেই আঙুল তুলেছিলেন। বলেছিলেন, অত রাতে একা মেয়ে কেন ঘুরছিলেন হাসপাতালের করিডোরে। এই ঘটনা ও বক্তব্যের পরেই রাস্তায় নামার ডাক দেন মহিলারা। এই ধর্ষণ ও খুনের বিচার চেয়ে ১৪ অগাস্ট বুধবার ঠিক রাত ১২টা বাজতে পাঁচে, রাজ্যজুড়ে বিভিন্ন স্থানে পথে নামবেন মহিলারা। মেয়েরা রাত দখল করো, The Night Is Ours.. পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। গভীর রাতে মেয়েদের যাতে সমস্যায় পড়তে না হয় তাই ট্যাক্সি সংগঠনগুলিও সদর্থ ভূমিকায় নামবে পথে।

নীলচে কালো অন্ধকারে লাল মুষ্টিবদ্ধ হাতে ধরা রয়েছে একফালি চাঁদ। রাত দখলে মেয়েদের। নির্ভয়ে রাতে, দুপুরে, পথে বাড়িতে জীবন কাটাতে চান মেয়েরা। ধর্ষিতা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বুকে নিয়ে আরও একটা নতুন স্বাধীনতাদিবস পেরোতে চান না মেয়েরা। তাই সকলে মিলে রাস্তায় নামার ডাক। এমন প্রতীকী প্রতিবাদেই কি সত্যিকারের স্বাধীন হয়ে যাবেন মেয়েরা? মেয়েরা বলছেন, পথে নামা ছাড়া উপায় নেই। প্রতিটি কাণ্ডে আজ অবধি মেয়েদের ভূমিকাতেই সমাজের একাংশ আঙুল তুলেছে। যোগ্য জবাব দিতেই হবে তাই। আরজি কর কাণ্ডের দোষীদের কঠিন-কঠোর শাস্তির দাবি তো বটেই, পাশাপাশি সমস্ত মেয়েদের নির্ভয়ে বাঁচার ডাকও উঠেছে সর্বত্র।

আরও পড়ুন- ৩০ মিনিটে এত আঘাত একজনের কাজ নয়, মৃতার পরিবারের হয়ে আদালতে লড়াই বিকাশরঞ্জনের

প্রথমে যাদবপুর, আকাডেমি ও কলেজ স্ট্রিট এই তিন জায়গায় জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়। কিন্তু তারপর সেই আহ্বান কলকাতায় সীমাবদ্ধ থাকে না। তা ছড়িয়ে পড়ে জেলায় জেলায়। আরামবাগ থেকে আসানসোল, শিলিগুড়ি থেকে শান্তিনিকেতন, মালদা থেকে মেদিনীপুর, বাঁকুড়া থেকে জলপাইগুড়ি সর্বত্র বিভিন্ন স্থানে ওই একই সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় জমায়েতের ডাক দেওয়া হয়। পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে রাতের পথে নামতে চাইছেন মানুষ।

এই রাত দখলের ডাকের পরেই প্রশ্ন ওঠে প্রাক-স্বাধীনতার মধ্যরাতের জমায়েত সেরে মেয়েরা যখন বাড়ি ফিরবেন, তারা নিরাপদ তো? অত রাতে বিপদে পড়ে আবারও কোনও মেয়ের মৃত্যু দেখতে হবে না তো? পারবেন পথচলতি সকলকে বিশ্বাস করে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে? এই আন্দোলনে মেয়েদের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করতে পথে থাকছে সিটু সংগঠনের ট্যাক্সি। কলকাতায় সিটুপন্থী ওলা উবর অ্যাপ ক্যাব অপারেটর অ্যান্ড ড্রাইভার ইউনিয়নের সব গাড়ি রাস্তায় থাকবে বলে জানিয়েছে সংগঠন। যদিও প্রশ্ন উঠছে, মফসসলে, যেখানে রাত্রি ৯ টার পরেই টোটো-অটো পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। পেলেও তা নিরাপদ মনে করেন না মেয়েরা সেখানে কীভাবে নিরাপদে ফিরবেন তারা? আগে থেকে গাড়ির বন্দোবস্ত করে, বা পুরুষদের সঙ্গী হিসেবে রেখে ভয় বুকেই বাড়ি ফিরতে হবে না তো নারী স্বাধীনতার নয়া ভোরে?

More Articles