হুলা পার্টির নিয়োগে দুর্নীতি! গর্ভবতী হাতির হত্যায় খোদ বনমন্ত্রীর দিকেই উঠছে অভিযোগ

Jhargram Elephant Death: হাতি হত্যার এই ঘটনায় গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার বিরুদ্ধে। হুলা পার্টির সদস্য নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগও করেছেন গ্রামবাসীরা

মানুষ অত্যন্ত নির্মম। অত্যন্ত অভিনব উপায়ে নির্মম হওয়ার হরেক কৌশল মানুষের জানা। পশুদের, যাদের থেকে বুদ্ধির ক্ষেত্রে মানুষ কিঞ্চিৎ উন্নত, সেই চারপেয়েদের 'সবক' শেখাতে, পাচার করতে নির্মমতার সমস্ত সীমা মানুষ ঢের আগেই পার করে দিয়েছে। বেশিদিন আগের ঘটনা না। মনে আছে, ২০২০ সালে কেরলে বাজি ভর্তি আনারস খাওয়ানো হয়েছিল এক গর্ভবতী হাতিকে? কী অভাবনীয় পদ্ধতিতে হত্যা! ২০২৪ সালে এমনই নির্মম ঘটনা দেখল আমাদের পশ্চিমবঙ্গ। স্বাধীনতা দিবসের দিন ঝাড়গ্রামে গর্ভবতী হাতির পিঠে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় জ্বলন্ত রড। মৃত্যু হয় হাতিটির।

ঝাড়গ্রাম শহরের রাজ কলেজের বিপরীত প্রান্তে একটি হাতির দেহে জলন্ত হুলা ঢুকিয়ে দেয় হুলা পার্টির সদস্যরা। ঝাড়গ্রাম শহরে হাতির তাণ্ডবে একজন ব্যক্তির মৃত্যু ঘটেছিল। অভিযোগ, সেই রাত্রেই একটি হাতির শিরদাঁড়াতে হুলা পার্টির সদস্যরা গরম লোহার শিক ঢুকিয়ে মেরে ফেলে। এরপরেও বনদফতর এবং বনমন্ত্রীর কোনও প্রতিক্রিয়াই দেখতে পাননি সাধারণ মানুষ। এই মর্মান্তিক নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে বনমন্ত্রী ও ডিএফও-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কুরমি সমাজের মানুষ, ঝাড়গ্রাম নাগরিক মঞ্চ আন্দোলনের ডাক দেয়। এই ঘটনায় হুলাপার্টির অভিযুক্ত সদস্য অজয় মাহাত, দীপক মাহাতকে লাউড়িয়া গ্ৰাম থেকে গ্রেফতার করেছে বন দফতর ও পুলিশ।

আরও পড়ুন- জন্মের পরই অন্ধ হয়ে যায় মানুষ, এমনকী পশুপাখিও! এই গ্রাম ঘিরে এখনও রয়েছে গভীর রহস্য

তবে হাতি হত্যার এই ঘটনায় গুরুতর অভিযোগ উঠেছে বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার বিরুদ্ধে। হুলা পার্টির সদস্য নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগও করেছেন গ্রামবাসীরা। হুলা পার্টি আসলে কী? হুলা পার্টির লোকজন মূলত হাতি লোকালয়ে এলে তাদের ধরে জঙ্গলে ফেরানোর কাজ করেন। এই হুলা পার্টির সদস্য নিযুক্ত করার ক্ষেত্রে বনমন্ত্রী নাকি টাকা খেয়ে অযোগ্য লোকেদের নিয়োগ করেছেন। যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছেন। হাতির মৃত্যুর জন্য বনমন্ত্রীকেই দায়ী করেছেন গ্রামবাসীরা, দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন তাঁরা।

ঘটনার দিন, ঝাড়গ্রামে মোট পাঁচটি হাতি ঢুকে পড়েছিল। হাতির দলের হামলায় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। হুলা পার্টি এসেও সব হাতিকে লোকালয় থেকে বের করতে পারেনি। সেই বিকেলেই হুলা পার্টির এক সদস্য একটি হাতির পিঠে জ্বলন্ত রড ঢুকিয়ে দেন বলে অভিযোগ। হুলা পার্টির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন গ্রামবাসীরা। হুলা পার্টির এই অনভিজ্ঞ সদস্যদের দল থেকে বের করার দাবি জানান তাঁরা। এই ঘটনায় সম্পূর্ণভাবে বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকেই দায়ী করেছেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের মূল অভিযোগ এলাকার যোগ্য লোকদের হাতি তাড়ানোর কাজে যুক্ত না করে অর্থের বিনিময়ে বনমন্ত্রী বাইরের অযোগ্য লোকদের নিযুক্ত করেছেন। যার ফলে আখেরে স্থানীয়দের সমস্যাই বাড়ছে।

More Articles