শিমলা, কুলু, মান্ডিতে মেঘ ভেঙে মৃত ১৪! প্রকৃতির রোষে যেভাবে ছারখার দক্ষিণ থেকে উত্তর

Shimla Cloud Burst: শুধু উত্তরাখণ্ডেই ৯ জন মারা গেছেন, তিনজন তেহরিতে, হরিদ্বার, দেরাদুন এবং রুরকিতে দু'জন করে এবং চামোলিতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

উত্তর থেকে দক্ষিণ! বর্ষাকালের বিপর্যয়ে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে ভারতবর্ষ। কেরলে অতিবৃষ্টি আর ধসের ফলে ইতিমধ্যেই আড়াইশোরও বেশি মানুষের প্রাণ গিয়েছে। এরই মধ্যে এবার হিমাচল প্রদেশের তিনটি জায়গায় মেঘ বিস্ফোরণ! মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ইতিমধ্যেই ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ অন্তত ৫০। ধারাবাহিক এই তিনটি মেঘ বিস্ফোরণে সিমলা, মান্ডি এবং কুলুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শিমলায় এখনও অবধি ২০ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সকালে সমেজ খাদে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাছে এই মেঘ বিস্ফোরণ ঘটে।

মেঘ বিস্ফোরণের ফলে আকস্মিক প্রবল বৃষ্টিতে ওই এলাকায় সড়ক যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে উদ্ধারকারী দল পৌঁছতেও সমস্যা হচ্ছে। শিমলা থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দূরে হিমাচল প্রদেশের মান্ডিতেও মেঘ বিস্ফোরণ ঘটেছে। মান্ডির জেলা প্রশাসক অপূর্ব দেবগণ জানিয়েছেন, মুহাল তেরংয়ের কাছে রাজবন গ্রামে মেঘ বিস্ফোরণের ফলে ভূমিধস নেমে রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মান্ডিতে দু’জন এবং রামপুরে দু’জন মারা গেছেন। হিমাচলের বিভিন্ন এলাকায় মেঘ বিস্ফোরণের পর অন্তত ৪৪ জন নিখোঁজ হয়েছেন।

 

আরও পড়ুন- ওয়ানাড় ধ্বংস হবে, ১৪ বছর আগেই জানিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা! কেন সতর্ক হয়নি সরকার?

শুধু উত্তরাখণ্ডেই ৯ জন মারা গেছেন, তিনজন তেহরিতে, হরিদ্বার, দেরাদুন এবং রুরকিতে দু'জন করে এবং চামোলিতে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় তেহরি জেলার ঘানসালি এলাকায় একটি বাড়ি ধসে তিনজন নিহত এবং অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে একজনকে বুকে ব্যথা এবং শ্বাসকষ্টের কারণে পিলখি থেকে ঋষিকেশ এইমস-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। এই ব্যক্তির বাবা-মা ঘটনাস্থলেই মারা যান।

আরও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে এই পরিস্থিতিতে স্কুল ও কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিপদ এড়াতে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলিও বন্ধ রাখার নির্দেশ জারি হয়েছে। তেহরি গাড়ওয়াল জেলার জাখানিয়ালিতে মেঘ বিস্ফোরণে দু'জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত ১জন। মৃতদের নাম ভানু প্রসাদ (৫০) এবং অনিতা দেবী (৪৫)। নিখোঁজ ছিলেন তারা, পরে অনুসন্ধানের নেমে এসডিআরএফ দু'টি মৃতদেহ উদ্ধার করে। ২০০ মিটার গভীর খাদে একজন আহত ব্যক্তিকে খুঁজে পান উদ্ধারকারীরা। তাকে স্ট্রেচারে করে নিরাপদে বের করে আনা হয়। অন্যদিকে, হরিদ্বারে, প্রবল বর্ষণে জরাজীর্ণ বাড়ির ছাদ ধসে পড়ে আস মহম্মদ (১০) এবং নাগমা (৮) নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে আর নয়জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

 

শিমলার আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস বৃহস্পতিবার কিন্নৌর এবং লাহৌল ও স্পিতি ছাড়া সমস্ত হিমাচলপ্রদেশ জুড়েই বজ্রপাত এবং বজ্রপাত সহ ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের কমলা সতর্কতা জারি করেছে। শুক্রবার থেকে বিচ্ছিন্ন জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতের হলুদ সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। ৬ অগাস্ট পর্যন্ত এমনই আবহাওয়া চলবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।

More Articles