স্রেফ বালি দিয়েই তৈরি বিরাট প্রাসাদ! বাংলার এই শিল্পীর সৃষ্টি দেখতেই হাজির কাতারে কাতারে লোক

Ranajit Roy Barddhaman Sand Artist : বাংলার বুকেও বালির সাম্রাজ্য তৈরি করছেন এক শিল্পী। নিখুঁত সেই কাজ দেখে চক্ষু ছানাবড়া অজস্র মানুষের।

সুদর্শন পট্টনায়েককে নিশ্চয়ই চেনেন? ওড়িশার সমুদ্রতটে বালি দিয়ে একের পর এক সৃষ্টি করে চলেছেন তিনি। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় এলে মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয়ে যায়। বিশ্ব জুড়ে প্রচুর সম্মান পেয়েছেন তিনি; পদ্মশ্রী খেতাবও পেয়েছেন ভারত সরকারের কাছ থেকে। ওড়িশার সেই সমুদ্রতট থেকে অনেকটা দূরে, বাংলার বুকেও বালির সাম্রাজ্য তৈরি করছেন এরকমই এক শিল্পী। নিখুঁত সেই কাজ দেখে চক্ষু ছানাবড়া অজস্র মানুষের। স্রেফ সেই কাজ দেখতেই ভিড় জমাচ্ছেন বহু মানুষ। কে এই বিস্ময় ব্যক্তি?

বর্ধমান জেলা এমনিতেই বেশ সমৃদ্ধ। সংস্কৃতি হোক বা শিল্প – সবেতেই বাংলার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। সেই বর্ধমানেই একমনে বালি ঘেঁটে চলেছেন শিল্পী রণজিৎ রায়। সঙ্গে রয়েছেন আরও দুই শিল্পী। অবশ্য মূল উদ্যোক্তা রণজিৎই। বালির ওপর একমনে বুলিয়ে চলেছেন যন্ত্রপাতি। আর ধীরে ধীরে সেই সাধারণ বালির স্তূপ নিজের রূপ বদলাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে বিরাট একটি প্রাসাদ। তার দরজা, জানলা, প্রতিটা কক্ষ যেন শিল্পীর নিখুঁত হাতে পূর্ণাঙ্গ রূপ পাচ্ছে।

আরও পড়ুন : মৃত্যুর পরে ফিরে আসা, বর্ধমানের রাজার গল্পের সঙ্গে হুবহু মিল আছে ভাওয়াল সন্ন্যাসীর

বর্ধমানের দামোদর নদ সংলগ্ন সদরঘাট অঞ্চলে এমনই বিস্ময় ঘটিয়ে চলেছেন বালু শিল্পী রণজিৎ রায়। সামান্য বালিই তাঁর হাতের স্পর্শে বদলে যাচ্ছে প্রাসাদে। দিনের পর দিন এই কাজ করে চলেছেন রণজিৎ। তাঁর এই কাজ দেখতেই ভিড় জমছে সদরঘাটের ওই অঞ্চলে। এক ঝলক দেখলে মনে হবে, ঠিক যেন ‘বাহুবলী’র দৃশ্য। মাহিস্মতির সেই প্রাসাদই ফুটে উঠছে বর্ধমানের বুকে।

সত্যিই কি তাই? এক গাল হাসেন রণজিৎ রায়। তাঁর বক্তব্য, প্রাচীন ভারতের বিভিন্ন সাম্রাজ্যের কথা ইতিহাস বইয়ে সুন্দর করে লেখা আছে। সেসব সাম্রাজ্য আজ আর নেই; তাদের প্রাসাদও আজ ভগ্নস্তূপ। সেই ইতিহাসকে তুলে ধরতেই এমন ‘বালু প্রাসাদ’। এর পেছনে নিজস্ব দর্শনও রয়েছে রণজিৎ রায়ের। ইতিহাস বুইয়ের পাতায় পড়া সেই সাম্রাজ্য যেন ক্ষণিকের। চলতে চলতে একটা সময় পর বিলীন হয়ে যায়। সময়ের ঢেউ এসে সেখানে আঘাত মারে। সেজন্যই বালি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে পুরনো দিনের একটি প্রাসাদ। বালিও তো সময়ের তালে তালে একটু একটু করে মিলিয়ে যায়। বালু প্রাসাদও একদিন বিলীন হয়ে যাবে। সেজন্যই এই শিল্পকর্ম।

More Articles