ন্যানোর থেকেও আকারে ছোট, স্বপ্নপূরণ করতে বাজারে আসছে নয়া ইলেকট্রিক গাড়ি, দেখতে কেমন?

MG Comet EV : বর্তমানে অ্যাম্বাসাডরের পর আবারও ফিরতে চলেছে নয়া রূপে ইলেকট্রিক টাটা ন্যানো ইভি। তবে এই সব কিছুকে পিছনে ফেলে সস্তায় বাজিমাত করতে আসছে আরও একটি নতুন গাড়ি।

একটা সময় ছিল যখন মধ্যবিত্ত পরিবারে গাড়ি কেনার স্বপ্ন দেখা ছিল বিলাসিতা মাত্র। চার চাকা চড়া মানে ছিল কেবল ভাড়ার গাড়ি। দূরে কোথাও যাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট তারিখ এবং সময় বেঁধে মালিক পক্ষের কাছ থেকে গাড়ি এবং ড্রাইভার বুক করতে হতো। তবে সেই সময় বদলেছে। ঘরে ঘরে এসেছে গাড়ি কেনার ধুম। এর একটা কারণ অবশ্যই আর্থিক যোগান বৃদ্ধি তবে পাশাপাশি আরও একটু কারণ একেবারেই উড়িয়ে দেবার মতো নয়। আজ থেকে কিছু বছর আগে যখন বাজারে প্রথম আসতে শুরু করলো টাটা ন্যানো গাড়ি, তখন মধ্যবিত্তদের চোখে নতুন করে স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছিল এই এক লাখি চার চাকা। সস্তায় স্বপ্ন পূরণের এমন বিকল্পকে রীতিমতো লুফে নিয়েছিলেন অনেকেই।

মূলত বাইক অথবা স্কুটারের বিকল্প হিসেবে বাজারে ন্যানো গাড়ি নিয়ে রতন টাটা। সিঙ্গুরে কারখানা তৈরি অবশ্য রাজনৈতিক টানাপোড়েনে সম্ভব হয়নি ঠিকই, তবে পশ্চিমবঙ্গের বাজারে টাটা ন্যানো টিকেছিল বহাল তবিয়তে। যদিও একটা সময় পর বাজার থেকে নতুন ন্যানো গাড়ি হারিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু বর্তমানে অ্যাম্বাসাডরের পর আবারও ফিরতে চলেছে নয়া রূপে ইলেকট্রিক টাটা ন্যানো ইভি। তবে এই সব কিছুকে পিছনে ফেলে সস্তায় বাজিমাত করতে আসছে আরও একটি নতুন গাড়ি। আকারে কিনা ন্যানো গাড়ির থেকেও ছোট, অথচ চার চাকা! আবার দামেও কম! জানেন কোন গাড়ির কথা বলা হচ্ছে?

আরও পড়ুন - ন্যানো ইভি থেকে শুরু করে মার্সিডিজ! মুম্বইয়ের রাস্তায় দাপিয়ে বেড়ায় রতন টাটার এই গাড়িরা

সময়ের সঙ্গে অনেক বদল এসেছে ব্যবহারিক জীবনে। যৌথ পরিবার বদলে গিয়ে এখন নিউক্লিয়ার জামানা। অর্থাৎ বাবা, মা, সন্তান, ব্যাস এটাই সীমাবদ্ধ। ফলে বড় পেল্লাই গাড়ির পরিবর্তে ছোট গাড়ির চাহিদা বেড়েছে। তাছাড়া এতে পকেটের সঙ্গেও বেশ সমঝোতা করা যায় আর কি! সম্প্রতি ঐতিহ্যবাহী ব্রিটিশ এয়ারপ্লেনের নামে ভারতে ছোট্ট ইলেকট্রিক গাড়ি আনছে এমজি মোটর। জানা গিয়ে নতুন মডেলের এই গাড়িটি আয়তনে নাকি টাটা ন্যানোর থেকেও ছোট। ছোট মডেলের গাড়ির চাহিদার কথা মাথায় রেখেই ব্রিটিশ কোম্পানি এই ধরনের গাড়ি বাজারে আনতে চলেছে। এখানেই শেষ নয়, সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল ভারতেই প্রথম লঞ্চ হতে চলেছে এই বিশেষ গাড়িটি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য এই নিতে দ্বিতীয়বার ভারতে লঞ্চ করা কোনও ব্রিটিশ গাড়ির নাম রাখা হচ্ছে ফাইটার প্লেনের নজর। আইকনিক ব্রিটিশ এয়ারপ্লেন কমেটের নামেই নামকরণ করা হয় হয় এই নতুন মডেলের গাড়িটির। এর আগে ১৯৪১ সালের জেট ইঞ্জিন এয়ারক্রাফট গ্লসটারের নামেও রাখা হয়েছিল একটি গাড়ির নাম। ভারতীয় বাজারে দারুণ সফল হয়েছিল সেই গাড়িও।

ফিরে আসা যাক নয়া এমজি কমেট ইলেকট্রিক গাড়ির প্রসঙ্গে। আয়তনে এটি বেশ ছোট। দৈর্ঘ্য মাত্র ২.৯ মিটার, অর্থাৎ টাটা ন্যানোর থেকেও কম। ন্যানোর দৈর্ঘ্য ছিল তিন মিটার। যেহেতু এই ইলেকট্রিক গাড়ি এয়ার উলিং এয়ার ইভি -এর উপর ভিত্তি করে তৈরি হবে তাই এতে জরুরি ব্যাটারি ব্যাক আপ। জানা গিয়েছে, মোটামুটি ১৭.৩কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় চলতে পারে এরকম একটি ব্যাটারি থাকবে। এবং অন্যটি ২৬.৭ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায় চলতে পারে। এদের রেঞ্জ হতে পারে যথাক্রমে ২০০ এবং ৩০০ কিলোমিটার মতো। আধুনিক সময়ের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এতে থাকবে টাচস্ক্রিন ডিসপ্লে, ডিজিটাল ড্রাইভার ডিসপ্লে, কানেক্টেড কার প্রযুক্তি এবং অটো এসি। সুরক্ষার জন্য মিলতে পারে একাধিক এয়ারব্যাগ, হিল হোল্ড অ্যাসিস্ট, ইলেকট্রনিক স্ট্যাবিলিটি কন্ট্রোল এবং অ্যান্টি লক ব্রেকিং সিস্টেম। তবে সবচেয়ে অবাক করা বিষয়টি হল, এই এত এত ফিচার্স সহযোগে বাজারে আসা নতুন গাড়িটির দামও নাকি বেশ কম। ইলেকট্রিক গাড়ির দামের তুলনায় এই গাড়ির দাম কম থাকবে বলেই জানা গিয়েছে। যদিও এখনও সঠিক দাম নিয়ে কিছুই জানায়নি সংস্থা।

More Articles