কারোর পৌষমাস, কারোর সর্বনাশ! আদানির দুর্দিনে যেভাবে লাভবান হলেন আম্বানি

After effect of hindenburg research : আদানির দুর্দিন যেন আশীর্বাদ স্বরূপ হয়ে দাঁড়ায় আম্বানি গোষ্ঠীর কাছে। একাধিক লগ্নিকারী সংস্থা আদানির থেকে শেয়ার তুলে নিয়ে ভরসা রাখে আম্বানি গোষ্ঠীর ওপর

হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ, এই একটা ঘটনা রাতারাতি বদলে দিল ভাগ্য। বিশ্বের প্রথম দশ ধনী ব্যক্তির তালিকা থেকে নিমেষে ছিটকে গেলেন গৌতম আদানি। প্রথম দশে তো নয়ই, উপরন্তু আরও তিন ধাপ পিছিয়ে ১৩ নম্বরে এখন আদানি গোষ্ঠী। অপরদিকে এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের পথ চওড়া করে নিল আম্বানিরা। উঠে এল প্রথম দশে।

ভারতের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় উল্লেখযোগ্য নাম ‘আদানি গোষ্ঠী’। গোটা দেশ জুড়ে তো বটেই এমনকী বিদেশেও প্রচুর শেয়ার তাদের। সেই আদানি গোষ্ঠীর ঘাড়েই নাকি বিপুল ঋণের বোঝা, এরকমই খবর প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। এখানেই শেষ নয়, অ্যাকাউন্টিংয়েও সমস্যা রয়েছে উক্ত গোষ্ঠীর, এমনটাই জানা গিয়েছে। আদানি গ্রুপের সংস্থায় ‘শর্ট পজিশনে’ বাজি ধরেছে মার্কিন সংস্থা হিন্ডেনবার্গ। তাদের নয়া রিসার্চেই অভিযোগের তীর উঠেছে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। যদিও এই সব অভিযোগকে ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিয়েছিল আদানি। ৪১৩ পৃষ্ঠার জবাবে তারা আত্মপক্ষ সমর্থনে ব্যাখ্যামূলক উত্তর দিয়েছে, এমনকী উক্ত সংস্থাকে উদ্দেশ্য করে ভারতের জাতীয়তাবাদের ওপর আঘাত হানার পাল্টা অভিযোগ এনেছে আদানিরা। তা সত্বেও লাভ হয়নি আখেরে। এই ঘটনার পর থেকেই বাজারে হু হু করে শেয়ার হারাতে থাকেন গৌতম আদানি। যার ফল স্বরূপ বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ক্রমশ নিচে নামতে থাকেন তারা।

আরও পড়ুন - আদানির পতনে আসলে লাভ হিন্ডেনবার্গের! কেন পশ্চিমী গবেষণাই আজও মান্যতা পায় দেশে?

অপরদিকে ভারতীয় দ্বিতীয় ধনী গোষ্ঠী অর্থাৎ আম্বানি ফিরে পায় পুরনো গৌরব। আদানির এই দুর্দিন যেন আশীর্বাদ স্বরূপ হয়ে দাঁড়ায় তাদের কাছে। একাধিক লগ্নিকারী সংস্থা আদানির থেকে শেয়ার তুলে নিয়ে আম্বানি গোষ্ঠীর ওপর ভরসা রাখতে শুরু করে ইতিমধ্যেই। ব্যাস, এতেই পাশার দান যায় উল্টে। হু হু করতে বাড়তে থাকে শেয়ার, আর আদানির বদলে বিশ্বের নয় নম্বর ধনী গোষ্ঠীর তালিকায় উঠে আসে আম্বানি গোষ্ঠী। আর ভারতে প্রথম যে, সে কথা অবশ্য আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু তাই নয়, এশিয়ার মধ্যেও ধনীতম শিল্পপতি এখন তিনিই। সম্পত্তির হিসাবে অম্বানী এবং আদানির মাঝে রয়েছেন তিন জন।

বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর... বাংলা এই প্রবাদের দৌড় যে অনেকখানি তা নতিন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। আর ঠিক তাই হিন্ডেনবার্গ রিসার্চকে ভুয়ো বলে উড়িয়ে দিলেও আদানি গোষ্ঠীর ওপর থাকা বিশ্বাসের ভিত নড়ে যায়। আদানি গ্রুপ ‘বহু বছর ধরেই অভাবনীয় স্টক ম্যানিপুলেশন এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতিতে জড়িত।’ এমন একটা অভিযোগকে মোটেই উড়িয়ে দেয়নি শেয়ার বাজারের বাকিরা। তাই বড় বড় শেয়ার ইতিমধ্যেই হারিয়েছে তারা। ৪১৩ পাতার জবাবনামায় আদতে কোনও লাভ হয়নি, উল্টে হিন্ডেনবার্গ জানিয়েছে, প্রয়োজনে এই অভিযোগকে খন্ডন করতে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে আদানি গোষ্ঠী। কিন্তু তারা তাদের অবস্থানে অনড়।

More Articles