কবর থেকে মৃতদেহ চুরি, স্ত্রীর পরিচয়ে টানা সাত বছর সহবাস! চমকে দেবে মার্কিন চিকিৎসকের যে ঘটনা
Mysterious incedent about Dr Tanzler : মৃতদেহের চোখের জায়গায় কাঁচ দিয়ে তৈরি হুবহু চোখের প্রতিকৃতি প্রতিস্থাপন করেছিলেন। যতদিন না মৃত মহিলার পরিবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পুলিশকে রিপোর্ট করে ততদিন পর্যন্ত সেই মৃতদেহটিকে...
ভালোবাসার ব্যাখ্যা শব্দে মেলে না। কিছুটা মায়া, কিছুটা মোহ, কিছুটা আবার সুখ স্মৃতি সব মিলিয়ে একটা অন্যরকম অনুভূতি। ভালোবাসার জন্য হাতের মুঠোয় প্রাণ নেওয়াও কোনও বড় বিষয় নয়। এই পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর অনুভূতির নাম ভালোবাসা। প্রেমের প্রথাগত কোনও নিয়ম হয় না। সব প্রেমের গল্পে অন্তমিল থাকে না। কিন্তু প্রেম তবুও সত্যি, জীবনের সবচেয়ে বড় সত্যি। এমনই একটি প্রেমের কথন সম্প্রতি সম্বে এসেছে। ভালোবেসে নিজের এক রোগীকে কবর থেকে তুলে এনে নতুন করে বাঁচানোর চেষ্টা চালান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এক চিকিৎসক। দীর্ঘ সাত বছর ধরে সেই মৃতদেহকেই নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচিত দিয়ে এসেছেন তিনি।
ঘটনাটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার। ওখানকার "ডক্টর ডেথ" হিসাবে পরিচিত, কার্ল ট্যানজলার একবার কবর থেকে একটি অল্প বয়স্ক রোগীর দেহ চুরি করে নিয়ে আসেন। এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়ে সেই মৃতদেহে নতুন করে প্রাণের সঞ্চার করতে চান তিনি। টানা সাত বছর ধরে ভয়ংকর এই গিভেশিবা চালানোর জন্য তাঁকে "ফ্লোরিডার ফ্রাঙ্কেনস্টাইন" নামেও ভূষিত করা হয়।
ডাক্তার ট্যানজলার মৃতদেহটি তুলে এনে একটি গবেষণাগারে সংরক্ষণ করেছিলেন। মৃতদেহের চোখের জায়গায় কাঁচ দিয়ে তৈরি হুবহু চোখের প্রতিকৃতি প্রতিস্থাপন করেছিলেন। যতদিন না মৃত মহিলার পরিবার পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পুলিশকে রিপোর্ট করে ততদিন পর্যন্ত সেই মৃতদেহটিকে নিজের স্ত্রী বলে মেনে নিয়ে তার সঙ্গেই টানা সাত বছর ধরে বসবাস করেন ওই চিকিৎসক। মেয়েটির নাম এলেনা।
আরও পড়ুন - বাঘের মৃতদেহকে মানুষের স্যালুট, ভালবাসার ফুল, এক অন্য মানবিকতার গল্প
প্রাথমিকভাবে বিষয়টি মামুলি ভূত তত্ত্ব বলে মনে হলেও একটা সময় পর ওই চিকিৎসক বুঝতে পারেননি মৃতদেহটি আসলে তাঁর প্রকৃত ভালোবাসা। আর তাই কবর থেকে তুলে এনে নতুন করে বাঁচিয়ে তোলার জন্য গবেষণা চালাতে থাকেন। যদিও আইনি মারপ্যাঁচ এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণার দোহাই দিয়ে কোনও রকম আইনি জটিলতার মধ্যে পড়তে হয়নি ডঃ ট্যানজলারকে। তবে ট্যানজলারের এই কাজের কারণে এলেনার পরিবার তার রূপান্তরিত মৃতদেহ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিল। বিপরীতে চিকিৎসক জানান এটি গবেষণার অংশ মাত্র, মৃতদেহকে বিকৃত করার কোনও রূপ অভিপ্রায় তাঁর ছিল না।
মৃত্যুর সময় এলেনার বয়স হয়েছিল মাত্র ২১। চিকিৎসক ট্যানজলারের সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় হয় ফ্লোরিডার কী ওয়েস্টের একটি হাসপাতালে। জার্মান বংশোদ্ভূত ডাক্তার ট্যানজলার ততদিনে যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসক হিসেবে বেশ নাম করছিলেন। তাই যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসার জন্যই এলেনা এসেছিল এই চিকিৎসকের কাছে।
১৮৭৭ সালে ড্রেসডেনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ডাঃ কার্ল ট্যানজলার। যদিও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ড্রেসডেন ছেড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন তিনি। এখানে এসে তিনি কাউন্ট কার্ল ভন কোসেল নাম গ্রহণ করেন। মোট নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি রয়েছে তাঁর ঝুলিতে। তিনি জানান, তাঁর বয়স যখন মাত্র ১২ বছর তখন থেকেই একটু ভূতের অবয়ব তাঁকে তাড়া করে বেরিয়েছিল, যাকেই আজীবন তিনি নিজের স্ত্রী হিসেবে ভালোবেসে এসেছেন। পরবর্তীকালে তাই ঠিক করেন এই নিয়েই গিবেশিনা করবেন। রোগী হিসেবে এলেনার সঙ্গে পরিচয়ের হয়, তাঁর মৃত্যুর পর তাই তিনি ঠিক করেন মৃতদেহের মধ্যে গবেষণার দ্বারা প্রাণ সৃষ্টি করবেন। সর্বোপরি তাঁর ভালোবাসার প্রতিষ্ঠা করবেন।