‘বিজেপিতে খারাপ হলেই দায় আমার?’ হঠাৎ কেন অভিমানী বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু?

Suvendu Adhikari: কার্যত অভিমানের সুরই শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর গলায়। স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন, সাংগাঠনিক কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গা নেই তাঁর।

লোকসভা ভোটে হারের পর নাম না করেই শুভেন্দু অধিকারীকে বিঁধেছিলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। এ কথা সত্যি, গোটা বাংলা জুড়েই তেমন ভালো ফল করতে পারেনি বিজেপি। সেই খারাপ ফল সামনে আসার পর থেকেই এক এক করে মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিজেপির একের পর এক বাঘা বাঘা নেতা। দিলীপ ঘোষ, জগন্নাথ সরকার তো বটেই, খোদ বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকেও বলতে শোনা গিয়েছে, সব সিদ্ধান্ত তিনি নেন না, কিন্তু রাজ্য সভাপতি হওয়ায় দায় তাঁকেই নিতেই হবে। তবে কি রাজ্য জুড়ে বিজেপির খারাপ রেজাল্টের জন্য আঙুল উঠছে শুভেন্দু অধিকারীর দিকেই। আর এবার সে নিয়েই ক্ষোভ উগরে দিলেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু।

কার্যত অভিমানের সুরই শোনা গিয়েছে শুভেন্দুর গলায়। স্পষ্টই জানিয়ে দিলেন, সাংগাঠনিক কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গা নেই তাঁর। আক্ষেপের গলায় বললেন, “ভাল করলে তাঁদের ক্রেডিট, খারাপ হলে আমার দায়।” তবে কি দলের সঙ্গে মনোমালিন্য এবং দূরত্ব ক্রমশ বাড়ছে শুভেন্দুর। একসময় তৃণমূলের বিশ্বস্ত নেতা বলে খ্যাতি ছিল অধিকারী পরিবারের এই যোগ্য পুত্রটির। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে শুভেন্দুর। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির হাত ধরেন শুভেন্দু। ক্রমে বিজেপিতে আধিপত্য বাড়তে থাকে তাঁর।

আরও পড়ুন: ‘কাঠিবাজী’ই কি কাঁটা জয়ের মুখে! কীসের আভাস দিতে চাইলেন বেসুরো দিলীপ

এই লোকসভা ভোটে মেদিনীপুরের পরিবর্তে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে দিলীপ ঘোষকে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেন বিজেপি নেতৃত্ব। যার ফলে কার্যত জেতা কেন্দ্র হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে বিজেপির, এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। দিলীপ ঘোষের হার স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে, তাঁর কেন্দ্র বদলের সিদ্ধান্ত কতটা যুক্তিযুক্ত ছিল। এ নিয়ে দিলীপ খোদ বলে বসেন, “পার্টির পুরনো প্রতিষ্ঠিত নেতাদের হারানোর জন্য পাঠানো হয়েছিল? লোকে হারা সিট জেতার জন্য প্ল্যানিং করে। এখন তো মনে হচ্ছে জেতা সিট হারানোর জন্য প্ল্যানিং হয়েছে।” শুধু দিলীপই নয়, সৌমিত্র খান থেকে শুরু করে জগন্নাথ সরকারের মতো বহু নেতাই প্রশ্ন তুলে গিয়েছেন। নাম না করেই অভিযোগের আঙুল তুলেছেন শুভেন্দুর দিকে।

আর সে নিয়েই এবার তোপ দাগলেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর কথায়, “আমাকে যেখানে প্রচার করতে যেতে বলা হয় সেখানে যাই। সংগঠিত করার কাজ আমার নয়। কেবলমাত্র আমার জেলাতে পার্টির সংগঠনের নেতারা রাজ্যের নির্দেশিকাও যেমন পালন করেন, আমার পরামর্শও মেনে চলেন। এর বাইরে সাংগঠনিক ব্যাপারে আমি কোনও দিন হস্তক্ষেপ করি না।” তিনি এ-ও জানান, , “আমি শৃঙ্খলা পরায়ণ লোক। তৃণমূলে থাকাকালীন ভাইপো-মুকুল রায় আমার পিছনে লেগে থাকত। আমি বলিনি। এখন দলের অনেকে পোস্ট করেন। ভাল হলে নিজের ক্রেডিট নেন। খারাপ হলে আমার ঘাড়ে চাপান। আমি কখনও দলের অভ্যন্তরের বিষয় বাইরে বলিনি।”

আরও পড়ুন: নড্ডার পরে কে? বিজেপির জাতীয় সভাপতি পদে কাকে বাছবে সঙ্ঘ?

তবে কি দলের অন্য সদস্যদের ব্যবহারে যথেষ্টই চটেছেন শুভেন্দু। তার প্রভাব কি পরবর্তীকালে তাঁর দলীয় কার্যকলাপে পড়তে চলেছে? আগামী মাস থেকেই শুরু হতে চলেছে বিজেপির মেম্বারশিপ ক্যাম্পেন। সেখান থেকেই রাজ্য, জেলাস্তরের সংগঠন ও দলের পদগঠনের কাজ সারা হবে। সেখানেও কি প্রভাব ফেলতে চলেছে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ওঠা এইসব অভিযোগ। শেষপর্যন্ত কি সংগঠনের সঙ্গেই থাকবেন শুভেন্দু? উঠছে সেই প্রশ্নও।

More Articles