মামুলি কাশি থেকেই মারণ রোগের হুমকি, অজান্তেই যে বিপদ ছড়িয়ে পড়ছে হাজার হাজার মানুষের শরীরে

Lung Cancer Symptoms and prevention : প্রতিবছর ভারতে প্রায় ৭২৫১০টি এই ধরনের কেস রিপোর্ট করা হয় বলে জানা যায়। কিন্তু কী এই রোগের আসল কারণ? শরীরে ভিতরে ভিতরে অজান্তেই এই রোগ ছড়াচ্ছে কিনা সেটাই বা বুঝবেন কী করে?

ক্যানসার, দুর্ভেদ্য এক প্রাচীর। এখনও এ রোগের সম্পূর্ণ নিরাময় নিয়ে নিরন্তর গবেষণা চলছে। বর্তমানে ফুসফুসের ক্যানসার বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। ২০২০ সালে প্রকাশিত দ্য গ্লোবাল ক্যানসার অবজারভেটরির একটি প্রতিবেদন অনুসারে, প্রতিবছর ভারতে প্রায় ৭২৫১০টি এই ধরনের কেস রিপোর্ট করা হয় বলে জানা যায়। কিন্তু কী এই রোগের আসল কারণ? ভিতরে ভিতরে অজান্তেই এই রোগ ছড়াচ্ছে কিনা সেটাই বা বুঝবেন কী করে, এইসব প্রশ্ন ভাবাতে থাকে। পাশাপাশি এই রোগের ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিত্যদিনের অভ্যাসে ঠিক কী কী বদল আনা দরকার, সেই দিকেও নজর দেওয়া জরুরি।

এই ধরনের ক্যানসারকে মূলত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়। এক নন-স্মল সেল লাং ক্যান্সার (NSCLC) অর্থাৎ তুলনামূলক বড় কোষের ক্যানসার এবং অন্যটি ফুসফুসের ছোট কোষের ক্যানসার বা স্মল সেল লাং ক্যানসার (SCLC)। এক্ষেত্রে ফুসফুসের ছোট কোষের কার্সিনোমা এবং মিশ্র কোষের ক্যান্সার বা সম্মিলিত ছোট কোষের ক্যানসার হতে পারে। এই ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে মূলত দায়ী ধূমপান। এবং চিকিৎসা শুরুর মূল পদ্ধতি হল কেমোথেরাপি।

আরও পড়ুন - কীভাবে বৃদ্ধি পাবে ক্যান্সার রোগীদের আয়ু! যে ইঙ্গিত দিচ্ছেন অস্ট্রেলিয় বিজ্ঞানীরা

NSCLC সমস্ত ফুসফুসের ক্যানসারের ক্ষেত্রে প্রায় 80 শতাংশ গঠন করে। এটি সাধারণত SCLC এর চেয়ে ধীরগতিতে অগ্রসর হয় এবং মেটাস্টেসিস করে। NSCLC তিন প্রকার। এক, অ্যাডেনোকার্সিনোমা, যা প্রায়ই ফুসফুসের বাইরের অংশে পাওয়া যায়। এটি টিস্যুর কোষে বিকশিত হয় যা শরীরের গহ্বর এবং পৃষ্ঠের সাথে সম্পৃক্ত হয় এবং গ্রন্থি গঠন করে। দুই, স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা, যা সাধারণত ফুসফুসের কেন্দ্রে একটি বায়ু নল বা ব্রঙ্কাসের পাশে পাওয়া যায়। ফুসফুসের যে কোনও অংশে বড় কোষের কার্সিনোমা হতে পারে। এবং এটি অন্য দুটি প্রকারের তুলনায় দ্রুত বৃদ্ধি এবং বিস্তার পেতে পারে।

এই ফুসফুসের ক্যানসারের সম্ভাব্য কিছু কারণ হল -

সিগারেট খাওয়া বা ধূমপান ফুসফুসের ক্যানসারের প্রাথমিক কারণ। এছাড়াও অন্যান্য তামাকজাত দ্রব্য সেবন যেমন পাইপ বা সিগার ব্যবহার করা, প্যাসিভ ধূমপান এবং রেডন বা অ্যাসবেস্টসের মতো পদার্থের সংস্পর্শেও ফুসফুসের ক্যানসার হতে পারে। এছাড়াও গবেষণায় দেখা গিয়েছে, জিনগত কারণেও ক্যানসারের আক্রান্ত হন অনেকেই।

আরও পড়ুন - ক্যান্সারে কাবু, তবু দু’হাত তুলে আশীর্বাদ! যেভাবে কল্পতরু হয়েছিলেন রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব

তবে ক্যানসারের উপসর্গগুলো ব্যক্তি ভেদে পৃথক হতে পারে। শুধু তাই নয়, ক্যানসার এমন একটি রোগ যা প্রথম থেকেই আঁচ করতে পারেন না আক্রান্তরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় রোগের মাত্রা বিপদসীমায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরই রোগটি খেয়ার করেন বেশিরভাগ জন। ফুসফুসের ক্যানসারের লক্ষণগুলির মধ্যে থাকতে পারে বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, রক্ত কাশি, দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি ইত্যাদি। যেহেতু এই লক্ষণগুলি অন্যান্য কিছু রোগের ক্ষেত্রেও লক্ষ্য করা যায় তাই প্রথম অবস্থায় অনেকেই বিষয়টা গ্রাহ্য করেন না। তাই মূল রোগের কারণটি বোঝার জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ জরুরী।

প্রতিকার -

ফুসফুসের ক্যানসার প্রতিরোধে নেওয়া যেতে পারে এমন কয়েকটি পদক্ষেপ হল নিম্নরূপ -

১. তামাকজাত দ্রব্য সেবন পরিত্যাগ করা জরুরী। পাশাপাশি প্যাসিভ স্মোকিং থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. অ্যাসবেস্টস এবং রেডনের জন্য আপনার বাড়ি এবং কর্মক্ষেত্র পরীক্ষা করুন
৩. কার্সিনোজেন এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক পদার্থের সংস্পর্শ হ্রাস করুন
৪. ব্যায়াম নিয়মিত করুন
৫. এবং সর্বোপরি একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট মেনে খাওয়াদাওয়া করুন।

More Articles