একদিনে সংক্রমণ পেরলো ৪ হাজার! কতটা ভয়ঙ্কর কোভিডের এই নয়া JN.1 স্টেন?

Covid-19 in India: মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০৯, বুধবার সেই সংখ্যাটা এক ধাক্কায় পৌঁছে যায় ৫২৯-এ।

দেশ জুড়ে ফের বাড়ছে করোনার দাপট। ফের কি দেশে ফিরতে চলেছে দুঃসহ সেসব দিন! দেশের প্রায় সব ক'টি রাজ্যেই বাড়ছে কোভিড আক্রান্তের খবর। কোভিড নয়া ভেরিয়েন্ট JN.1 ইতিমধ্যেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রের খবর, ২৭ ডিসেম্বর, বুধবারই নতুন করে ৫২৯ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। সব মিলিয়ে দেশ জুড়ে সক্রিয় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ৪,০৯৩।

কোভিডের নয়া সাব ভেরিয়েন্ট JN.1-র ফের সংক্রমণ ঘিরে ফের উদ্বিগ্ন দেশ। ফের কি ফিরতে চলেছে মাস্ক, লকডাউনের সেই ভয়াবহ দিন? সেই আশঙ্কাতেই কাঁপছে গোটা দেশ। ৫২৯ জন নতুন করোনা আক্রান্তের পাশাপাশি তিন জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। তার মধ্যে দু'জন কর্ণাটকের আর একজন গুজরাটের বাসিন্দা। মাত্র ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে যে ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়েছে, তাতে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক।

শীত পড়তে না পড়তেই ফের মাথাচাড়া দিয়েছে করোনার নয়া ভেরিয়েন্ট। ডিসেম্বরের শুরু থেকেই দেশে নতুন করে করোনার প্রকোপ বেড়েছে। গত ৫ ডিসেম্বর নাগাদ ডবল ডিজিটে পা দেয় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা। তার পরে মাত্র এক মাসের মধ্যেই পাঁচ হাজারের দরজায় পৌঁছে গিয়েছে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা।

আরও পড়ুন: এই শীতে ফিরছে কোভিড! বিশ্বজুড়ে আশঙ্কা উস্কে কী জানাল হু?

প্রাথমিক ভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছিল, সংক্রমণ বাড়লেও তেমন কোনও উদ্বেগের কারণ নেই। তেমন ভয়ঙ্কর নয় এই JN-1 ভ্যারিয়েন্টটি। সাধারণ ভাবে হাল্কা থেকে মাঝারি জ্বর, সর্দি , গলা ব্যথার মতো সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল হু-এর তরফে। তার সঙ্গে সামান্য শ্বাসকষ্টের উপসর্গের কথাও জানিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞেরা। খিদে কমে যাওয়া, বমির মতো উপসর্গের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ভিড়ভাট্টাযুক্ত এলাকা এড়িয়ে যাওয়া ও মুখে মাস্ক পরার পরামর্শও দেওয়া হয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে।

করোনার এই ভয়াবহ দিক আগেই দেখে ফেলেছে গোটা বিশ্ব। রোগ-ব্যধি, মৃত্যুমিছিল। সংক্রমণ এড়াতে লকডাউন, আর সেই লকডাউনের জেরে ধ্বসে গিয়েছিল দেশের অর্থনীতি। অসুখে মানুষ যত না মরেছে, তার চেয়েও বেশি প্রাণ কেড়েছে লকডাউনের ফলে মানুষের জীবিকাহীনতা, অনাহার। সেই ছবিটাই ফের ফিরতে চলেছে না তো। ২০২০ সাল থেকে পর পর তিনটি কোভিড ঢেউয়ের মুখে পড়েছে দেশবাসী। চার বছর ধরে তিনটি করোনার ঢেউ কেড়েছে অন্তত ৫.৩ লক্ষ প্রাণ। অন্তত সাড়ে চার কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে করোনায়। দেশ-বিদেশের সমস্ত বিজ্ঞানীর অবিরাম চেষ্টায় তৈরি হয়েছিল ভ্যাকসিন। কোভিড টিকাকরণ, দীর্ঘদিনের কোভিড-বিধি, মুখোশ পরার অভ্যাস ছেড়ে সবে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছিল দেশবাসী। তার মধ্যে ফের নতুন করে আতঙ্ক ফেরাচ্ছে JN-1 স্টেন।

India sees single-day rise of 529 Covid cases as active cases cross 4,100 nationally

মঙ্গলবার পর্যন্ত দেশে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১০৯। গুজরাট থেকে ৩৬টি, কর্ণাটক থেকে ৩৪টি, গোয়া থেকে ১৪টি, মহারাষ্ট্র থেকে ৯টি, রাজস্থান থেকে চারটি, তামিলনাড়ু থেকে চারটি ও তেলঙ্গানা থেকে দুটি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। বুধবার সেই সংখ্যাটা এক ধাক্কায় পৌঁছে যায় ৫২৯-এ। করোনার এই বাড়বাড়ন্তের কারণ ঠিক কী? বিশেষজ্ঞদের অনেকে অবশ্য এর জন্য আবহাওয়া পরিবর্তনকেও দুষছেন। শীতকাল পড়লে এমনিতেই ভাইরাসজনীত অসুস্থতা বাড়ে। তার উপর পরিবেশ দূষণ যেভাবে বেড়েছে, তাতে শ্বাসকষ্টজনীত সমস্যা এমনিতেই বাড়ছে। কমছে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। আর সেই সুযোগটা নিয়েই বাড়বাড়ন্ত বাড়ছে করোনার।

আরও পড়ুন:আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনার নয়া ভেরিয়েন্ট JN.1? কী কী উপসর্গ জেনে নিন

বিশেষজ্ঞরা আগে থেকে সতর্ক থাকার কথাই বারবার বলছেন। বাইরে মাস্ক ব্যবহার, ভিড়ভাট্টাযুক্ত এলাকা এড়িয়ে চলা, যাতে সংক্রমণ না বাড়তে পারে, এবং স্যানিটাইজার ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। কোভিডের JN-1 ভেরিয়েন্ট জনীত অসুস্থতার নিরাময় বাড়িতেই সম্ভব বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। রাজ্যপ্রশাসনগুলিকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে এ নিয়ে। প্রয়োজনে হাসপাতালে যাতে রোগীর চিকিৎসা করানো যায়, সেই পরিকাঠামো প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে। তবে ভয় বা আতঙ্কের কোনও কারণ নেই, এমনটাই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। ইনফ্লুয়ে়ঞ্জার মতোই কোভিডের এই JN-1 ভেরিয়েন্ট সংক্রমণ। কিন্তু সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও হু-এর তরফে।

More Articles