আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনার নয়া ভেরিয়েন্ট JN.1? কী কী উপসর্গ জেনে নিন

Covid's JN.1 variant in India: দেশ জুড়ে বাড়াতে বলা হয়েছে আরটিপিসিআর পরীক্ষার কথা। একই সঙ্গে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে হলা হয়েছে। শুধু ভারতেই নয়, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াতেও বেড়েছে কোভিড-১৯-র নয়া স্টেন।

ফের ফিরতে চলেছে ভয়াল সেসব দিন? মাস্ক, সামাজিক দূরত্ব, কোভিডবিধি, সর্বগ্রাসী লকডাউন! উদ্বেগে কাঁপছে বিশ্ব। ভারতে ফের উঁকি দিচ্ছে করোনা। গত ন'দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই তিন জনের মৃত্যু হয়েছে কেরালায়। ৯ দিনে কার্যত দ্বিগুণ বেড়েছে সংক্রমণ। বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

দেশ জুড়ে বাড়াতে বলা হয়েছে আরটিপিসিআর পরীক্ষার কথা। একই সঙ্গে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখতে হলা হয়েছে। শুধু ভারতেই নয়, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়াতেও বেড়েছে কোভিড-১৯-র নয়া স্টেন। কেরল-সহ দক্ষিণ ভারতের একাধিক জায়গায় খোঁজ মিলেছে কোভিড ১৯-র নয়া ভ্যারিয়েন্ট JN.1 স্টেনের। গলা ব্যথা, অবিরাম কাশি থেকে শুরু করে জ্বরের মতো উপসর্গ নিয়ে রোগীদের ভিড় জমতে শুরু করেছে হাসপাতালগুলিতে।

আরও পড়ুন: এই শীতে ফিরছে কোভিড! বিশ্বজুড়ে আশঙ্কা উস্কে কী জানাল হু?

আমেরিকাতে অবশ্য গত সেপ্টেম্বর থেকেই দাপট দেখাতে শুরু করেছিল কোভিডের এই নতুন ভ্যারিয়েন্টটি। সংক্রমণের মাত্রাও বেশ বেড়েছিল সেসময়। এবার সেই ভ্যারিয়েন্টটির খোঁজ মিলেছে কেরল থেকে। পিছিয়ে নেই কর্ণাটক, গোয়ার মতো রাজ্যগুলিও। ইতিমধ্যেই গোয়া থেকে JN.1-র ১৫টি কেস নথিভুক্ত হয়েছে। দ্রুত বাড়তে থাকা সংক্রমণ নিয়ে ইতিমধ্যেই বৈঠকে বসেছে কর্ণাটকের প্রশাসন। কীভাবে সংক্রমণে রোখ টানা যায়, তার নির্দিষ্ট রূপরেখা ঠিক করতে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকের ডাক দিয়েছে কর্ণাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডুরাও। বৈঠক শেষে অবশ্য স্বাস্থ্য়মন্ত্রী জানিয়েছেন, আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। এই মুহূর্তে কোনও বিধিনিষেধ জারি করা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি। তবে ভিড়ভাট্টা এড়ানো ও মুখে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

তবে কি সত্য়ি সত্যি ফিরতে চলেছে ফের মুখোশে মুখ ঢাকার মুখ। প্রায় বছর তিনেক ধরে দাপট দেখিয়েছে করোনার একের পর এক ঢেউ। দেশ জুড়ে জারি হয়েছে কয়েক দফার লকডাউন। কোয়ারিন্টাইন জোন থেকে অক্সিজেনের অভাবে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু, গণচিতা- কী দেখেনি দেশ। ওই তিন বছরের ঝড়ে কত প্রিয়জনকেই না হারিয়েছে মানুষ। দিনের পর দিন গৃহবন্দি, জীবীকাহীনতা, অনাহার- সমস্ত কিছুই এসেছিল তার হাত ধরে। আর রোগের যন্ত্রণা তো ছিলই। কাশি, শ্বাসকষ্ট, জ্বর- সেই সব স্মৃতি অনেক কষ্টে পিছনে ফেলে জীবনে এগিয়েছে মানুষ। তার রেশ কাটতে না কাটতেই কি ফের সেই আতঙ্ক ফিরতে চলেছে। যেভাবে কেরল, কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলিতে হু হু করে বাড়ছে সংক্রমণ, তাতে উস্কে উঠেছে সেই আতঙ্কই।

Covid Strain JN.1 Termed 'Variant Of Interest': Symptoms To Look Out For

যদিও এই পরিস্থিতিতে আশার কথাই শুনিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। হু-এর তরফে জানানো হয়েছে, তেমন আতঙ্কেরও কারণ নেই।  তাঁদের মতে, এটি একটি 'ভেরিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট'। সব মিলিয়ে কোভিডের এই নয়া স্ট্রেনটি নিয়ে তেমন ঝুঁকির বিষয় দেখতে পাচ্ছেন না বিশেষজ্ঞেরা। JN.1 একটি সাব ভেরিয়েন্ট, যা প্রাথমিক ভাবে শনাক্ত করা গিয়েছিল লাক্সেমবার্গে। পিরোলা ভেরিয়েন্টের বংশধর এটি, যার উৎপত্তি হয়েছিল ওমিক্রমের সাব ভেরিয়েন্ট হিসেবে।

এখনও পর্যন্ত দেশে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১৮২৮। এখনও পর্যন্ত কেরলে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যাদের শরীরে JN.1 ভেরিয়েন্টের খোঁজ মিলেছে। করোনার এই ঝোঁক সামাল দিতে কেন্দ্রীয় সরকারকে স্বাস্থ্য় পরিকাঠামোয় নজর দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হু।

আরও পড়ুন:চেনা মুখই অচেনা! ভয়াবহ রোগের শিকার বহু কোভিড আক্রান্ত, উপসর্গ?

নয়া এই ভেরিয়েন্টের লক্ষণগুলো সাধারণ ভাবে হাল্কা থেকে মাঝারি বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। জ্বর, সর্দি, গলা ব্যথা, মাথা ব্যথার মতো সমস্যা দেখা যাচ্ছে আক্রান্তদের শরীরে। সামান্য শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা যেতে পারে চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। একই সঙ্গে খিদে কমে যাওয়া, বমি ভাবের মতো উপসর্গও দেখা যাচ্ছে অনেকের। কেউ কেউ শিকার হচ্ছেন মারাত্মক ক্লান্তি ও পেশি দুর্বলতার। এই ধরনের বিপদ এড়াতে এখন থেকেই সতর্ক হওয়ার কথা বলা হয়েছে। ভিড়ভাট্টাযুক্ত এলাকা এড়িয়ে যাওয়া ও মুখে এখন থেকেই মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। বিশেষত বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম অবশ্য পালনীয় বলেই জানাচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য় সংস্থা।

More Articles