বিশ্ব জুড়ে অন্তত ৫ কোটি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা! 'ডিজিজ এক্স' নিয়ে যা জানাল WHO

Disease X: নয়া মহামারীর আশঙ্কায় দিন গুনছে বিশ্ববাসী, তেমনই উদ্বেগ এবার প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। WHO-র জেনারেল ম্যানেজার টেড্রোস ঘেব্রেইসাস জানিয়েছেন, কোভিড-১৯-র থেকে অন্তত পক্ষে ২০ গুণ মারাত্মক হতে পারে এই অসুখ...

করোনার পর চোখ রাঙাচ্ছে নয়া মহামারী। দিন দুয়েক আগেও চোখ রাঙিয়েছে করোনার ফাঁড়া। হ্যাঁ, তবে করোনার নতুন স্ট্রেন JN.1 তেমন ভয়াল রূপ নিতে পারেনি। তবে কোভিডের পর নয়া আতঙ্কের নাম নাকি 'ডিজিজ এক্স'। নয়া মহামারীর আশঙ্কায় দিন গুনছে বিশ্ববাসী, তেমনই উদ্বেগ এবার প্রকাশ করল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

WHO-র জেনারেল ম্যানেজার টেড্রোস ঘেব্রেইসাস ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন। এমনকী মারাত্মক এই মহামারীর প্রকোপ রুখতে মহামারী চুক্তি সই করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বব্যাপী দেশগুলিকে। ইতিমধ্যেই এই মহামারী রুখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ঘেব্রেইসাস জানিয়েছেন, কোভিড-১৯-র থেকে অন্তত পক্ষে ২০ গুণ মারাত্মক হতে পারে এই অসুখটি।

প্রতি একশো বছর অন্তর অন্তর কোনও না কোনও মহামারী বা অতিমারীর সাক্ষী থেকেছে বিশ্ব। তবে কি সেই একশো বছরের ব্যবধান এখন ঘুচল। এবার কম সময়ের ব্যবধানেই বারবার আনাগোনা করবে মহামারী-অতিমারিরা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্বেগে অবশ্য তেমনটাই মালুম হচ্ছে।

আরও পড়ুন: করোনার পর নতুন মহামারীর আশঙ্কা বিশ্ব জুড়ে! কেন এত ভয়ঙ্কর ‘জম্বি ডিয়ার’ রোগ?

তবে ডিজিজ এক্স কিন্তু জ্বর বা পেটের অসুখের মতো নির্দিষ্ট কোনও রোগ নয়। বরং সম্ভাব্য রোগের একটি এজেন্ট বলা যায় একে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আশঙ্কা, অদূর ভবিষ্যতে মানুষের গুরুতর মাইক্রোবায়াল সমস্যার কারণ হতে পারে এই 'ডিজিজ এক্স' এজেন্টটি। যা থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে মহামারী বা কোভিড-১৯-র মতো অতিমারি। সেই রোগের কোনও প্রতিকার বা ওষুধ নেই বিশেষজ্ঞদের কাছে। গুরুগ্রামের ইন্টারনাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. তুষার তায়ালও জানিয়েছেন একই কথা। ইতিমধ্যেই এই 'ডিজিজ এক্স' নিয়ে গবেষণা শুরু করে দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

WHO Sounds Alarm On 'Disease X', Warns Future Pandemic Could Be 20 Times Deadlier Than Covid

ওয়াকিবহাল মহলের অনেকেরই দাবি, এ যেন রহস্যময় ও অপ্রত্যাশিত রোগের দুনিয়ায় প্রবেশ করার মতো। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই সংক্রমণ কোনও একটি জায়গা, একটি সমাজ, একটি দেশেই নয়, মুহূর্তে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়তে পারে সেটি। স্বাভাবিক ভাবেই সেই রোগ যে করোনার চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর হবে, তা নিয়ে এক কথায় নিঃসংশয় বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে হয়ে গেল পাঁচদিনের বিশ্ব ইকোনমিক ফোরাম। সেখানেই আলোচনায় বারবার উঠে এসেছে এক অজানা অচেনা ভাইরাসের কথা। যার ইতিমধ্যেই নামকরণ করা হয়েছে 'ডিজিজ এক্স'। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রস ঘেব্রেইসুস সেখানেই এই ভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়ে সতর্ক করেছেন।

 

১৯৭৬ সালে বিজ্ঞানী জিন-জ্যাকাস মুয়েম্বি প্রথমবার ইবোলা ভাইরাস চিহ্নিত করেছিলেন। সেই জিন জ্যাকাসই এই ডিজিজ এক্স রোগটিও সামনে এনেছেন। তাঁর দাবি, করোনার থেকেও মারাত্মক ও সংক্রামক এই ভাইরাল স্ট্রেনটি। ব্রিটেনের ভ্যাকসিন টাস্ক ফোর্সও এই ডিজিজ এক্স-কে নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। তাদের দাবি, কমপক্ষে ৫ কোটি মানুষের জীবন যেতে পারে এই রোগে। এর ভয়াবহতা অনেকটাই ১৯১৮-১৯ সালে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারীর মতো হতে পারে বলে জানিয়েছে ব্রিটেনের ওই সংস্থা।

আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৫৮ টি সংক্রমণ, ছ’টি মৃত্যু! করোনা ফিরছে আবার, মাস্ক কি পরতেই হবে?

না, চিন বা অন্য কোনও দেশ কিন্তু এই ভাইরাসের জন্মের জন্য দায়ী নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইবোলা ভাইরাসের জেনেটিক মিউটেশনের ফলে অর্থাৎ জিনের গঠন বদলে এই নতুন ধরনের ভাইরাল স্ট্রেনের জন্ম হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তার থেকে বাঁচার উপায় বা কোনও রকম প্রতিষেধক বিজ্ঞানীদের হাতে নেই। নেই ভ্যাকসিনও। ফলে এই অতিমারি গোটা বিশ্ব জুড়ে বিরাট ক্ষয়ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন গোটা বিশ্বের তাবড় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা।

More Articles