২৪ ঘণ্টায় দেশে ৩৫৮ টি সংক্রমণ, ছ'টি মৃত্যু! করোনা ফিরছে আবার, মাস্ক কি পরতেই হবে?

JN.1 Covid variant spike : সাধারণ সর্দি-কাশির সঙ্গে কোভিডের এই নতুন রূপের ফারাক কী?

ফিরছে বছর তিনেক আগের সেই স্মৃতি! মহামারীর ঘটনা বাড়তে শুরু করেছিল সেবারও। সেই বিপদ সামলে উঠে সবে ধাতস্থ হতে শুরু করেছিল মানুষ। এরই মধ্যে ফের ফিরল করোনা। প্রতিদিন কোভিড সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাস্ক পরার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে বেশ কিছু রাজ্যে। মহামারীর ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি কি ফিরছে আবারও? আবারও লকডাউন? আবারও ঘরে বন্দি থাকা, মাস্কের আড়ালে থাকা? গত ২৪ ঘণ্টায় দেশ জুড়ে মোট ৩৫৮ টি কোভিড সংক্রমণের খবর মিলেছে, এর মধ্যে ৩০০টিই কেরলে। কোভিড-সম্পর্কিত জটিলতার কারণে ছয়জনের মৃত্যুও হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, দেশে এই মুহূর্তে কোভিডের ২,৬৬৯ টি সক্রিয় সংক্রমণ রয়েছে। নতুনভাবে এই সংক্রমণ ছড়াচ্ছে JN.1 নামের একটি কোভিড ভ্যারিয়েন্ট।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলচহে, JN.1 থেকে এখনও যে বিশাল বড় ঝুঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে তা নয়। তা সত্ত্বেও, উত্তর গোলার্ধে শীত শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই JN.1 অনেক দেশে শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ বাড়িয়েছে৷ বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই কোভিডকে সাধারণ সর্দি হিসাবে উড়িয়ে দেওয়া মোটেই ঠিক না। শুধুমাত্র গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিদের কারণে নয়, রোগের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবের কারণেই সতর্ক হওয়া বাঞ্ছনীয়। কোচির হাসপাতালে এই মুহূর্তে নিউমোনিয়ার ৩০% ঘটনা আছে, সবাই কোভিড পজিটিভ।

নতুন এই ভ্যারিয়েন্ট JN.1 আসলে ওমিক্রনের একটি সাব ভ্যারিয়েন্ট। তাই আশা করা হচ্ছে, এটি ওমিক্রনের মতোই আচরণ করবে। ওমিক্রন তুলনামূলকভাবে কম বিপজ্জনক ছিল। তবে, এত কিছু সত্ত্বেও আমাদের ইমিউনিটি সিস্টেমে ইতিমধ্যেই থাকা অ্যান্টিবডিগুলিকে কিন্তু ঘোল খাইয়ে দিতে পেরেছে নয়া ভ্যারিয়েন্ট। JN.1 এমন সংক্রমণ ঘটাতে সক্ষম যা দ্রুতই ছড়িয়ে পড়তে এবং সংক্রামিত করতে পারে।

আরও পড়ুন- আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনার নয়া ভেরিয়েন্ট JN.1? কী কী উপসর্গ জেনে নিন

সাধারণ সর্দি-কাশির সঙ্গে কোভিডের এই নতুন রূপের ফারাক কী? সাধারণ সর্দি থেকে JN.1 সংক্রমণ খুবই আলাদা। তীব্র কোভিড নিউমোনিয়ায় গুরুতরভাবে অসুস্থ হওয়া তো আছেই, এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবও আছে। যারা কোভিডে ভুগছেন এবং বিশেষ করে যারা বারবার সংক্রামিত হচ্ছেন তাদের হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিস, ডিমেনশিয়া, বিষণ্নতা, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি এবং পেশির ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক।

ন্যাশনাল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন কোভিড টাস্ক ফোর্স জানাচ্ছে, মাস্ক পরা নিরাপদ। বায়ুচলাচল বন্ধ, আবদ্ধ স্থাম জনাকীর্ণ জায়গা বা অল্প জায়গায় বেশি মানুষ- এমন পরিস্থিতিতে মাস্ক পরা নিরাপদ। অপরিচিত কোনও ব্যক্তির সঙ্গে গাড়িতে বা কোথাও গেলে মাস্ক পরুন বা নিদেনপক্ষে জানালার কাচ নামিয়ে দিন। JN.1 ভ্যারিয়েন্টের উপসর্গগুলো হল জ্বর, কাশি, গন্ধ ও স্বাদ হারানো। টানা বেশি জ্বর থাকলে, শ্বাসকষ্ট হলে, ক্লান্তি এলে, খেতে না ইচ্ছা হলে এবং বমিভাব দেখা দিলে সতর্ক হওয়া জরুরি। যারা অসুস্থ তাদের অন্যদের বাঁচাতে মাস্ক পরা উচিত। প্রয়োজনে ফের তিনি পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ মনসুখ মাণ্ডব্য বলছেন, কোভিড-১৯ ভাইরাসের নতুন এবং উদীয়মান এই স্ট্রেনের বিরুদ্ধে সতর্ক হওয়া, প্রস্তুত হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। সমস্ত রাজ্যকে সতর্ক থাকতে, নজরদারি বাড়াতে এবং ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং অন্যান্য সরবরাহ পর্যাপ্তভাবে মজুত রাখতেও নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। ইতিমধ্যেই চণ্ডীগড় প্রশাসন ভিড় এড়িয়ে চলতে নির্দেশ দিয়েছে মানুষজনকে। বদ্ধ পরিবেশে মাস্ক পরতে এবং হাত পরিষ্কার রাখার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

More Articles