মাত্র পাঁচ মাসেই মুখ থুবড়ে পড়ল বন্দে ভারত এক্সপ্রেস! কেন এই রুটে বন্ধ হল পরিষেবা?

Vande Bharat Express : এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেস বন্ধ হয়ে গেল পাঁচ মাসেই! কী আসল কারণ?

১১ ডিসেম্বর ২০২২ থেকে ১১ মে ২০২৩, ঠিক পাঁচ মাস, আর এর মধ্যেই সফরে ইতি পড়ল আনকোরা নতুন একটা ট্রেনের। যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসকে ঘিরে গোটা দেশ জুড়ে উত্তেজনা তুঙ্গে, সেই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের একটি নির্দিষ্ট শাখা কিনা মুখ থুবড়ে পড়ল মাত্র পাঁচ মাসেই! শুনতে অবাক লাগলেও এমনটাই সত্যি। গত ১১ মে, এই মর্মে একটি বিবৃতি জারি করা হয় ভারতীয় রেলের পক্ষ থেকে। রেলের তরফে জানানো হয়েছে, মহারাষ্ট্রের বিলাসপুর-নাগপুর রুটে চালু হওয়া নয়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেস আপাতত চলবে না। বদলে ওই রুটের যাত্রীদের পরিষেবা দেবে ভারতীয় রেলের আর একটি দ্রুতগামী ট্রেন তেজস এক্সপ্রেস।

সাদা রঙের অভিনব একটা ট্রেন, মূল বিশেষণ হল এটিই ভারতের সর্বোচ্চ গতির ট্রেন। নামটা অবশ্য নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস। বাংলার মাটিতে প্রথম পথ চলা শুরু হলেও শেষ কয়েক মাসে একের পর এক নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের চাকা গড়িয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রাথমিকভাবে আগামী তিন বছরে মোট ৪০০টি নতুন বন্দে ভারত ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা ছিল ভারতীয় রেল কর্তৃপক্ষের। সেই মতো হাওড়া নিউ জলপাইগুড়ি রুট দিয়ে প্রথম পরিষেবা চালু করা হয়। তারপর যাত্রীদের আগ্রহ এবং উত্তেজনা দেখে ইতিমধ্যেই মোট আটটি রুটে যাত্রী পরিষেবা প্রদান করছিল নয়া বন্দে ভারত এক্সপ্রেসগুলি।

কেন সাফল্যের চূড়ায় থাকা একটি ট্রেন রাতারাতি বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবল রেল কর্তৃপক্ষ, সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। যদিও এ বিষয়ে বিশদে সরকারিভাবে কিছুই জানানো হয়নি তবুও রেলের বিভিন্ন সূত্র মারফত কানাঘুষো জানা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট এই রুটে যাত্রী সংখ্যা কম হওয়াই ট্রেন বন্ধের আসল কারণ। বিলাসপুর নাগপুর রুটে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চালানোর খরচের অংশটুকুও যাত্রীদের টিকিট বিক্রির মূল্য থেকে তুলতে পারছে না ভারতীয় রেল, তাই ক্ষতি এড়াতেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হল তারা।

আরও পড়ুন - এবার আরও কাছাকাছি কলকাতা, এক ট্রেনেই যাওয়া যাবে হাওড়া থেকে বাঁকুড়া, কবে শেষ হবে কাজ?

পাশাপাশি এও জানা গিয়েছে, ট্রেনটি পুরোদমে চালু হওয়ার পর এক দিনও এই রুটে মোট সিট সংখ্যার অর্ধেক পরিমাণ টিকিটও বিক্রি হয়নি। আসলে হাই স্পিড এই ট্রেন চালানোর খরচ যথেষ্ট বেশি, তাই যাত্রীদের পরিমাণ কম হলে তা ব্যয় করা অসম্ভব। সবদিক বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেই খবর। তবে বিলাসপুর নাগপুর রুটে ট্রেন বন্ধের খবর প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই অন্যান্য রুটের বন্দে ভারত এক্সপ্রেসগুলি নিয়েও আশঙ্কার মেঘ ঘনিয়েছে ইতিমধ্যেই। বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে অন্যান্য ট্রেনগুলিও কি বন্ধ হওয়ার মুখে? যদিও এ বিষয়ে কোনও সদুত্তর মেলেনি রেল কর্তৃপক্ষের তরফে।

উল্লেখ্য, নাগপুর-বিলাসপুর রুটের সাড়ে ৫ ঘণ্টার যাত্রাপথে বন্দে ভারতের এক্সিকিউটিভ শ্রেণির ভাড়া ছিল ২০৪৫ টাকা এবং এসি চেয়ারকারের ভাড়া ছিল ১০৭৫ টাকা। রেলের তরফে জানানো হয়েছে যে, যাঁরা ইতিমধ্যেই আগামী দিনের যাত্রা পরিকল্পনা করে টিকিট কেটে ফেলেছিলেন, তাঁদের রেলের তরফে ভাড়া ফেরত দেওয়া হবে। এর জন্য একটি রিফান্ড বুথও করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। পাশাপাশি যাত্রীদের অবগতির কথা মাথায় রেখে ওই রুটের অন্যান্য ট্রেনে এই সংক্রান্ত ঘোষণা করা হচ্ছে।

More Articles