কলকাতার খুব কাছেই রয়েছে ‘মিনি আন্দামান’, কম খরচে ঘুরে আসুন এই জায়গা থেকে
Short weekend trip : পুরী থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে মনোরম এই জায়গাটি। একটা গাড়ি নিয়ে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় এখানে। পথে আসার সময় পড়বে বেশ কিছু ছোট ছোট ছবির মতো গ্রাম। সময় লাগবে ওই ঘণ্টা তিনেক।
শীতকাল মানেই ঘুরতে যাওয়ার মরশুম। তীব্র ব্যাস্ত জীবনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দূরে কোথাও ভ্রমণের সুযোগ এখন অতীত, বাঙালি তাই খুঁজছে কাছেপিঠে অফবিট কোনও জায়গা। আগে থেকে টিকিট বুকিং করার ঝামেলা নেই, সময় সুযোগ মতো ব্যাগ গুছিয়ে রওনা দিলেই হল। একটা সময় বাঙালির ঘুরতে যাওয়া বলতে ছিল দীপুদা, অর্থাৎ দীঘা,পুরী এবং দার্জিলিং। সময়ের সঙ্গে বদল এসেছে সেই অভ্যাসে। ঘিঞ্জি এলাকা ছেড়ে এখন নিরিবিলি পরিবেশে খানিকটা সময় কাটতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন অনেকে।
সপ্তাহান্তের দুটো দিন ছুটি, ঘরে বসে ভীষণ একঘেঁয়ে লাগছে, এদিকে পকেটেও বেশি জোর নেই, ঠিক এরকম সময় আপনার মুশকিল আসান হতে পারে কাছেপিঠে ভ্রমণ। আন্দামান ঘুরতে যাওয়ার স্বাদ মিটবে ঘরের কাছেই। মাত্র কিছুটা পথ দূরেই রয়েছে মিনি আন্দামান, সমুদ্র এবং জঙ্গলের স্বাদ মিলবে একজোটে। উড়িষ্যা শুনলেই এতদিন কেবল একটা জায়গার কোথায় মনে আসত বাঙালির তা হল পুরী। পুরীর সমুদ্র সৈকত, জগন্নাথ দেবের মন্দির ইত্যাদি ছাড়াও এখানেই রয়েছে আরও একটি সুন্দর জায়গা। যেখানকার চোখ জুড়ানো পরিবেশে সবার মনে হবে এ যেন সাক্ষাৎ আন্দামান দর্শন।
জায়গাটির নাম চিল্কা। পুরী থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে মনোরম এই জায়গাটি। একটা গাড়ি নিয়ে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় এখানে। পথে আসার সময় পড়বে বেশ কিছু ছোট ছোট ছবির মতো গ্রাম। সময় লাগবে ওই ঘণ্টা তিনেক।
আরও পড়ুন - লাগবে না পাসপোর্ট-ভিসা, কলকাতার খুব কাছেই রয়েছে মিনি সুইজারল্যান্ড, জানেন কোথায়?
লম্বায় প্রায় ৪০মাইল এবং আয়তনের প্রায় ১১০০ বর্গকিলোমিটার হম চিল্কা হৃদ। এটি রামসার জলাভূমি সংরক্ষণের অন্তর্গত। সমুদ্রের মনোরম পরিবেশে এখানে শীতকালে আসে অসংখ্য পরিযায়ী পাখিদের দল। পাখির ছবি তো বিষয়টি বর্তমানে অবশ্য খুবই পরিচিত একটি শখ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন অনেকেই। তাই সেই সমস্ত বার্ডারদের জন্যও দারুণ অপশন হতে পারে চিল্কা। চটপট ক্যামেরা বন্দি হয়ে পারে বহু অজানা পাখিদের ইউনিক মুহূর্ত।
কোথায় থাকবেন?
কাছাকাছি রয়েছে উড়িষ্যা সরকারের পান্থনিবাস, ইচ্ছা করলে এখানেই রাত্রি যাপন করতে পারেন আপনি। ইঁট কাঠের জঙ্গল থেকে সাময়িক মুক্তি দিতে এখানে দু হাত ভরে অপেক্ষা করে আছে কৃতিক নানান সৌন্দর্য, বিরাট খোলামেলা পরিবেশ এবং সমুদ্র জঙ্গলের মনোরম রসায়ন। এই পান্থনিবাস থাকলে উপরি পাওনা স্বরূপ মিলতে পারে সেখানকার উড়িয়া রাধুনীর হাতে কাঁকড়া ঝাল, আর চিংড়ির মালাইকারি।
চিল্কা থেকে নৌকা ভাড়া করে বেরিয়ে পড়তে পারেন ডলফিনের সন্ধানে। এছাড়াও দেখতে পারেন বক, ঈগল, পানকৌড়ি। নৌকায় করে মোহনা যেতে মোটামুটি দু-তিন ঘন্টার সময় লাগে। এই পথে যেতে যেতে হাঁপিয়ে উঠলে মোহনায় পৌঁছে চায়ের দোকানে গরম গরম চায়ের স্বাদ নিতে নিতে মনিরিম পরিবেশে হারিয়ে যেতে পারেন। চিল্কায় গিয়ে যদি নানা ধরনের পাখি দেখতে চান, তাহলে ঘুরে আসতে পারেন এই উত্তর দিকেই মঙ্গলজুরি নামে একটি ছোট্ট গ্রাম থেকে। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে এখানে চীন, সাইবেরিয়া, মঙ্গলিয়া সহ আরও দূর দূরান্ত থেকে প্রচুর পরিমাণে পাখি আসে। এক কথায় পরিযায়ী পাখিদের খনি বলা যায় এই চিল্কাকে। তাই পকেটের সঙ্গে সামান্য সমঝোতা করে বেরিয়ে পড়ুন ঘরের কাছেই মিনি আন্দামান ভ্রমণে।