ট‍্যুইটারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এলন মাস্কের, কোনদিকে গড়াবে মামলার পরিণতি?

দু'পক্ষই খুব শক্তিশালী ও প্রভাবশালী আইনি দল নিয়ে প্রস্তুত। আগামী সপ্তাহেই ডেলাওয়ারে মামলা দায়ের করতে চলেছে ট‍্যুইটার। আপাতদৃষ্টিতে ট‍্যুইটারের দিকে পাল্লা ভারী থাকলেও মাস্ক এই মামলা অনেকদিন ধরে টানবেন বলেই মনে করা হচ্...

বিশ্বের ধনীতম মানুষ, এলন মাস্কের বিরুদ্ধে ট‍্যুইটার আদালতে যাবে, একথা জেনে ট‍্যুইটারেই পরিহাস করেছেন এলন মাস্ক। কিন্তু কিছুদিন আগে পর্যন্তও তো ঠিক ছিল যে, মাস্ক ট‍্যুইটার কিনতে চলেছেন। তাহলে হঠাৎ এই মামলা-মোকদ্দমার পর্ব শুরু হল কেন?

দু'মাস আগে এলন মাস্ক ঘোষণা করেছিলেন যে, তিনি ট‍্যুইটারকে শেয়ার-পিছু ৫৪.২০ ডলার দরে, বা মোট ৪৪ বিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে কিনে নিতে চলেছেন। বাকস্বাধীনতা রক্ষা এবং সকল ব্যবহারকারীদের জন্য এক নতুন দিগন্ত খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গত সপ্তাহে এই অধিগ্রহণের পরিকল্পনা বাতিল করেছেন তিনি। এইভাবে চুক্তি ভঙ্গ করার অভিযোগে ট‍্যুইটার কর্তৃপক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করার হুমকি দিয়েছে। কিন্তু সাধের ট‍্যুইটার কেনার সিদ্ধান্ত থেকে হঠাৎ সরে এলেন কেন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি?

তাঁর এবং তাঁর সংস্থার দাবি, ভুয়া অ্যাকাউন্টের যে নথি ট‍্যুইটারের থেকে চাওয়া হয়েছে, তা তাঁরা হাতে পাননি। এই বিষয়ে তাঁদের সম্পূর্ণ অন্ধকারে রাখা হয়েছে। ট‍্যুইটারের দাবি ছিল, ভুয়া বা স্প্যাম অ্যাকাউন্টের সংখ্যা পাঁচ শতাংশের বেশি একেবারেই নয়, এবং সেই সংখ্যাটাও কমিয়ে ফেলতে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কিন্তু মাস্কের আইনজীবী দাবি করছেন, ট‍্যুইটার এই সংক্রান্ত কাজে এগোতে তো পারেইনি, সেই সঙ্গে তারা সঠিক তথ্যও চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেছে। যে কারণে এই অধিগ্রহণ বাতিল করে দিলেন মাস্ক।

আরও পড়ুন: অশোক স্তম্ভ: ছিল রুমাল, হয়ে গেল বেড়াল

স্বাভাবিকভাবেই ট‍্যুইটার ক্ষুব্ধ। সংস্থার চেয়ারম্যান ব্রেট টেইলো জানান যে, আদালতে যাওয়া ছাড়া তাদের কাছে কোনও উপায়ই পড়ে রইল না। অধিগ্রহণের এই চুক্তি যখন হচ্ছিল, তখনই শর্ত ছিল, যে যে পক্ষই চুক্তি ভঙ্গ করবে, তাকে জরিমানা দিতে হবে বিশাল অঙ্কের। তখন উভয় পক্ষের কেউই ভাবেনি যে, এই দিন আসবে।

দু'পক্ষই খুব শক্তিশালী ও প্রভাবশালী আইনি দল নিয়ে প্রস্তুত। আগামী সপ্তাহেই ডেলাওয়ারে মামলা দায়ের করতে চলেছে ট‍্যুইটার। আপাতদৃষ্টিতে ট‍্যুইটারের দিকে পাল্লা ভারী থাকলেও মাস্ক এই মামলা অনেকদিন ধরে টানবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে থাকবে ট‍্যুইটারের বিরুদ্ধে তথ্য চেপে যাওয়ার অভিযোগ। যদিও সেই অভিযোগ পত্রপাঠ খারিজ করেছে ট‍্যুইটার।

এই মামলা যদি মাস্ক হেরে যান, সেক্ষেত্রে শুধু এক বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়ে পার পাবেন না তিনি। তাঁকে এই অধিগ্রহণ সম্পূর্ণ করতে বাধ্যও করা হতে পারে। এই আইনি লড়াই সুদীর্ঘ হতে চলেছে। বিত্তবানদের এই লড়াইতে আমেরিকার সরকার এবার কী ভূমিকা নেয়, সেটাই দেখার।

More Articles