কখন কমবে ডানার দাপট? কোন জেলায় শনিবারও ভারী বৃষ্টি?

Cyclone Dana Update: ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে কলকাতা, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনায় শুক্রবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার, অর্থাৎ ২৪ অক্টোবর রাত ১১টা ১২ মিনিটে ডানা আছড়ে পড়েছে ওড়িশার উপকূলে। ওড়িশার ভিতরকণিকা এবং ধামারার মধ্যবর্তী হাবালিখাটি নেচার ক্যাম্পের কাছ থেকে স্থলভাগ অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড়ের শেষ অংশ। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল প্রায় ৯ টা অতিক্রান্ত করেও শেষ হয়নি ল্যান্ডফলের সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া। তবে সকাল পেরোলেই দুর্বল হয়ে যাবে ডানা, জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর।

শুক্রবার ভোর সাড়ে ৬টায় ঘূর্ণিঝড় ডানার অবস্থান ছিল ওড়িশার ধামারা বন্দরের ৩০ কিলোমিটার উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে। ভিতরকণিকার হাবালিখাতি নেচার ক্যাম্পের ৫০ কিমি উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে ছিল ডানা। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, স্থলভাগে এখনও ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ হিসাবে অবস্থান করছে ডানা। শুক্রবার সকালে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিমি। দমকা হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিমি।

বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যবর্তী স্থানে স্থলভাগ অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড়ের সামনের অংশ। এই সময় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল প্রতি ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছিল, ঘূর্ণিঝড় ডানার কোনও ‘চোখ’ থাকবে না। সমুদ্রের উপর তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় ঘুরতে ঘুরতে যখন স্থলভাগের দিকে এগোয়, তখন ঝড়টির কেন্দ্রে একটি আপাত শান্ত অঞ্চল তৈরি হয়। সেখানে হাওয়ার বেগ তুলনামূলক কম থাকে। ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফলের সময় ঝড়ের ওই কেন্দ্র যখন স্থলভাগে প্রবেশ করে, তখনই ঘূর্ণিঝড়ের দাপট হয় সবচেয়ে বেশি। তবে অনেক ক্ষেত্রেই এই কেন্দ্র বা চোখ তৈরি হয় না। ঘূর্ণিঝড়ের ‘লেজ’ অর্থাৎ শেষ অংশটি পুরোপুরি স্থলভাগে ঢুকলেই ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শেষ হয়।

ল্যান্ডফল শুরু হওয়ার পর থেকেই ব্যাপক ঝড় শুরু হয় ওড়িশায়। পশ্চিমবঙ্গের উপকূলেও প্রভাব পড়েছে। রাত পর্যন্ত কলকাতায় তেমন কোনও প্রভাব দেখা না দিলেও ভোর থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে মহানগরে, সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সতর্ক করেছিল, কলকাতায় ঝোড়ো হাওয়ার সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার সারাদিনই বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হয়েছে কলকাতায়। পূর্ব মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে রাতে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। ডানা ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া শেষ করে উত্তর ওড়িশা হয়ে ক্রমশ উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে যত এগোবে ততই শক্তি কমবে। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ থেকে ‘সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হতে পারে ডানা।

আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড় ডানার প্রভাবে কলকাতা, ঝাড়গ্রাম, হাওড়া, হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনায় শুক্রবার পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ এবং নদিয়াতেও শুক্রবার পর্যন্ত ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামে ভারী বৃষ্টি চলবে শনিবারও।

More Articles