সর্পিল পথ ধরে ১৫০ বছর, সেদিনের তুমুল তরুণ বাড়তি হল যেভাবে

Kolkata Tram 150 Years History : ঘণ্টা বাজিয়ে এগিয়ে চলেছে ট্রাম – কলকাতার জীবন্ত এক ইতিহাস। জীবন্ত ফসিলস বললেও কি খুব একটা অত্যুক্তি হয়!

কবি শঙ্খ ঘোষ একসময় লিখেছিলেন, "এ কলকাতার মধ্যে আছে আরেকটা কলকাতা।" আলসে রোদ মেখে এই শহর চলেছে দুলিতে দুলিতে। চারিদিকে হাইরাইজ, শপিং মল আর জাঁকজমকের ভিড়ে মহীনের ঘোড়াগুলি আজও ঘাস খায় ময়দানে। হয়তো সেখানে এসে লুটিয়ে পড়ে জ্যোৎস্না। ময়দানের পাশ দিয়ে হেঁটে চলেছে তরুণ-তরুণী। প্রথম প্রেমের সাক্ষী থাকছে তিলোত্তমা। ধোঁয়ামাখা ভোরে হয়তো অকারণেই বেজে ওঠে ‘ঘাসে ঘাসে পা ফেলেছি’। তবে শুধু ঘাস নয়, পায়ের তলায় লেগে থাকে ইতিহাস, কান্নাজমা ধুলোবালি। আর সমস্ত কিছুর সাক্ষী থাকে সাপের মতো এঁকেবেঁকে এগিয়ে চলা ট্রামপথ। রাস্তায় ট্রামলাইন সাজার এই পরম্পরা এই শহরের আজকের নয়। ১৫০ বছর ধরে চলেছে তার উত্থানপতন। ছোট্ট লোহার বাক্সে জমে থাকে কত অজানা গল্প, হারিয়ে যাওয়া চিঠি, কবিতার কথা। আর সেই সবকিছু ধরেই ঘণ্টা বাজিয়ে এগিয়ে চলেছে ট্রাম – কলকাতার জীবন্ত এক ইতিহাস। জীবন্ত ফসিলস বললেও কি খুব একটা অত্যুক্তি হয়!

ভাবুন, সেই ১৫০ বছর আগের কথা। একটা ইতিহাসের ঢেউ এসে পা ফেলল আরেকটা বন্দরে। একটা মাইলস্টোন, একটা রূপকথার ছোঁয়া রেখে যায় কলকাতার এই ট্রাম। তার শরীরে এখন জং পড়েছে, কপালে ভাঁজ বাড়িয়ে বসে থাকে তার চালক, কন্ডাক্টর। ভবিষ্যৎ যে অন্ধকারে, সেটা তাঁদের ভেঙে পড়া মুখগুলি দেখলেই বোঝা যায়। ক্যাব, মেট্রো, বাস আর উড়ালপুলের ভিড়ে কলকাতার ট্রাম এখন স্যালাইন নিচ্ছে হরদম। তবুও এই মানুষগুলো বুকে আগলে রেখেছে এই যানটিকে। মনে পড়ে ‘অযান্ত্রিক’-এর বিমল আর জগদ্দলের কথা? কলকাতার বুকে যেন এরকম হাতেগোনা কয়েকজন বিমলরা তাঁদের ‘জগদ্দল’কে আগলে বসে থাকেন। তাঁদের তো বটেই, ট্রামেরও ফুসফুসে জমতে থাকে ইতিহাস আর বর্তমানের এক অদ্ভুত ককটেল।

পথচলার শুরুটা

উনবিংশ শতকের শেষ ভাগ। সিপাহী বিদ্রোহ তখন শেষ হয়ে গিয়েছে। ভারতজুড়ে ইংরেজদের তাণ্ডব বেড়ে গিয়েছে আরও, ‘সোনার হাঁস’ ভারতকে হাতের মুঠোয় পেয়ে তাঁরা যারপরনাই খুশি। আর কলকাতা সেই দেশের রাজধানী। এক সময়ের গ্রাম, জলে জঙ্গলে ঘেরা জায়গাটির চেহারা একটু একটু করে বদলে যাচ্ছে। তৈরি হচ্ছে বড় বড় প্রাসাদ, বাড়ি, দোকান। সবেতেই ব্রিটিশ ঐতিহ্য পূর্ণমাত্রায় বজায় আছে। তবে পুরোটাই হচ্ছে ময়দান সংলগ্ন এলাকায়। সেটাই তখন সাদা চামড়াদের আসল ঠিকানা, সাহেবিপাড়া। কলকাতা যত ‘লন্ডন’ হচ্ছে, যত তার রূপ খুলছে, ততই জনসংখ্যাও বাড়ছে। যাতায়াতের কথাও তো চিন্তা করতে হবে! তাও যে সে নয়, সস্তায় যাতায়াতের এমন এক মাধ্যম, যাতে দূষণ হবে না।

সেখান থেকেই শুরু হল ট্রামের জয়যাত্রা। ১৮৭০-র দশকের কথা। ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ঠিক করল, কলকাতার রাস্তায় চালানো হবে ট্রাম। যেমন ভাবা তেমনই কাজ। শুরু হল ট্রামের লাইন পাতার কাজ। ঠিক হয়েছিল, এখনকার শিয়ালদহ থেকে, সার্কুলার রোড দিয়ে আর্মেনিয়ান ঘাট পর্যন্ত লাইন পাতা হবে। বউবাজার, ডালহৌসি চত্বর ছুঁয়ে যাবে এই ট্রাম। মোট ৩.৯ কিলোমিটার লাইন বসাতেই বেরিয়ে গেল কয়েক লাখ টাকা। তারপর তৈরি হল ট্রাম। কাঠের তৈরি সেই ট্রামের দুটি বগি। আর একেবারে সামনে থাকবে একটি ঘোড়া। সেই ঘোড়াই তরতরিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাবে ট্রামকে।

horse ridden tram

প্রথমে ঠিক হয়েছিল মালপত্র এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য এই ট্রামের ব্যবহার করা হবে। পরে সিদ্ধান্ত বদল করে যাত্রীদের জন্য খোলা হল এই যানটি। এদিকে ট্রাম রাস্তায় নামার আগেই কলকাতা জুড়ে শুরু হল হইচই। নতুন এক ধরনের গাড়ি চলবে শহরে! চারিদিকে এই বার্তা রটি গেল ক্রমে! শেষমেশ চলে এল সেই দিনটি। ১৮৭৩ সাল, দিনটি ছিল ২৪ ফেব্রুয়ারি। শিয়ালদহে এসে দাঁড়াল নতুন, ঝাঁ চকচকে ট্রাম। সামনে সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে আনা শক্তিশালী তেজিয়াল ঘোড়া। আর সামনের কেবিনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ট্রামের চালক। হাতে ধরা থাকত চাবুক, আর সঙ্গে থাকত ঘণ্টা। চাবুক দিয়ে ঘোড়া পরিচালনা করা হতো, আর ঘণ্টা বাজিয়ে পথচলতি মানুষকে সচেতন করা হতো।

ঘোড়ায় মারল টান

এভাবেই দুই বগির ট্রামগাড়ির যাত্রা শুরু হল কলকাতায়। কেবল কলকাতা কেন, গোটা ভারত, এমনকী এশিয়ায় প্রথম ট্রাম ব্যবস্থা শুরু হয় এই শহরে। এখানেও ছিল ফার্স্ট ক্লাস, সেকেন্ড ক্লাসের বন্দোবস্ত। প্রথম ট্রাম চালুর সঙ্গে সঙ্গে মানুষের উদ্দীপনা বেড়ে যায়। কিন্তু যাত্রাপথের শুরুতেই ব্যাঘাত ঘটে। পরের দিকে যাত্রীর সংখ্যা একটু একটু করে কমে যাচ্ছিল। তার থেকেও বড় বিষয় ছিল অন্য জায়গায়। অত্যাধিক গরমে, ওই ট্রাম চালিয়ে নিয়ে যাওয়া তো চাট্টিখানি কথা নয়! শক্তিশালী ঘোড়াও কেমন যেন নুইয়ে পড়তে লাগল। এভাবে কাহিল হয়ে মারা গেলে তো সমস্যা আরও বাড়বে! বারবার অস্ট্রেলিয়া থেকে ঘোড়া আনাও যাবে না; বিপুল টাকার ধাক্কা সেখানে। অগত্যা হাত তুলে নিল ট্রামলাইন। শুরু হওয়ার ঠিক ১০ মাস পর, ১৮৭৩ সালের ২০ নভেম্বর বন্ধ হয়ে গেল ট্রাম চলাচল।

তবে বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি কলকাতাকে। ইতিমধ্যে লন্ডনে তৈরি হয় ট্রামওয়ে কোম্পানি। এই প্রতিষ্ঠানটি কলকাতায় ফের ট্রাম চালু করার দায়িত্ব নেয়। তৈরি হয় ‘ক্যালকাটা ট্রামওয়ে কোম্পানি’। ১৮৭৯ সালে কলকাতা পুরসভার সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়। সেই চুক্তি মোতাবেক ১৮৮০ সালের ২৭ নভেম্বর ফের পথে নামে ঘোড়ায় টানা ট্রাম। বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঠিক সাত বছর পর ফের এই যান চলাচল শুরু হওয়ায় কলকাতাবাসীর উৎসাহের শেষ ছিল না।

বেশ কয়েক বছর চলার পর একটা অন্য গোলমাল শুরু হল। উল্লেখ্য, সেই সময় মোট ১০০০টি ঘোড়া থাকত ট্রাম চালানোর জন্য। শহরজুড়ে প্রায় ১১৭টি ট্রামগাড়ি চলত। আস্তে আস্তে জনপ্রিয়তার শিখরে উঠে যায় এই গাড়ি। কলকাতা অল্প সময়ের মধ্যেই আপন করে নেয় এই গাড়িটিকে। কিন্তু আপত্তি আসে অন্য জায়গা থেকে। এতগুলো ঘোড়া এই ভারী ট্রামটি টেনে নিয়ে যাচ্ছে, গরমে হাঁপিয়ে যাচ্ছে, বুকের খাঁচা বেরিয়ে পড়ছে তাদের। এই দৃশ্য অনেকেই সহ্য করতে পারলেন না। পশুপ্রেমীদের ভেতর থেকে শুরু হল প্রবল প্রতিরোধ।

ইতিমধ্যেই পৃথিবীর বুকে দানা বাঁধতে শুরু করেছে বিদ্যুৎ পরিষেবা। সত্যিই তো, এভাবে পশুদের দিয়ে ট্রাম চালানো অনেক ঝক্কির কাজ। তাদের রক্ষণাবেক্ষণের খরচও রয়েছে। তার থেকে যদি বিদ্যুতের মাধ্যমে ট্রাম চালানো যায়। এখান থেকে শুরু হল কলকাতার ট্রামের আরেক ইতিহাস।

বিদ্যুতের বিপ্লব

১৯০০ সাল। নতুন একটি শতাব্দীর সূচনা। নতুন স্বপ্ন, নতুন আশা নিয়ে পথচলা শুরু করল পৃথিবী। নতুনভাবে গা-ঝাড়া দিয়ে উঠে দাঁড়ানোর শপথ নিল কলকাতার ট্রামও। এই বছর থেকেই ট্রামের আধুনিকীকরণের কাজ শুরু হয়। বিদ্যুতের লাইন বসে। ঢেলে সাজানো হয় ট্রাম ব্যবস্থাকে। এসব করতে সময় লাগে দুই বছর। শেষমেশ ১৯০২ সালে ইতিহাসের সাক্ষী থাকল গোটা এশিয়া মহাদেশ। ন্যারো গেজের ট্রামলাইন বদলে গেল ৪ ফুট ৮.৫ ইঞ্চির ট্র্যাকে। ১৯০২ সালের ২৭ মার্চ প্রথমবার কলকাতায় চলল বিদ্যুৎচালিত ট্রাম। কেবল কলকাতা নয়, গোটা এশিয়ায় ঘটল বিপ্লব। পরিবহণ ব্যবস্থার ইতিহাসে এ এক বড় পরিবর্তন। ধর্মতলা থেকে খিদিরপুর অবধি চলে সেই ট্রাম।

tram kolkata

বাষ্পে ভরা যান

তবে এই ঘোড়ায় টানা আর বিদ্যুৎচালিত ট্রামের মাঝে রয়েছে আরেকটি ছোট্ট পর্ব। ১৮৮২ সাল নাগাদ আরও একটি উপায়ে ট্রাম চলাচল শুরু হয়। তখন প্রথমবার শহর দেখে বাষ্পচালিত ট্রাম। চৌরঙ্গী, খিদিরপুর, ডালহৌসি সহ বেশকিছু রুটে সেই গাড়িও চলেছে। কিন্তু বিদ্যুৎচালিত ট্রাম এসে যাওয়ার পর ধীরে ধীরে সেটিও মুছে যায়।

১৯০২ সালের মার্চের পর একটু একটু করে বাড়তে থাকে ট্রামের যাত্রাপথ। নতুন বগি তৈরি হয়, রুটও বাড়ে। শ্যামবাজার থেকে কালীঘাট, খিদিরপুর, শিয়ালদহ পর্যন্ত বিস্তৃত হয় এই ট্রামলাইন। ট্রামওয়ে কোম্পানির উদ্যোগে চালকদের বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তৈরি হয় বেশ কয়েকটি ট্রাম ডিপো; যা আজও কলকাতার বুকে রয়ে গিয়েছে।

এরপরই কার্যত ঝড় ওঠে ট্রামে চড়ার। সস্তায় শহরের নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য এর জুড়ি মেলা ভার। বাঙালিরা একেবারে আপন করে নিল ট্রামকে। ট্রামের সেই ঘণ্টা, তার টিকিট, পাদানিতে দাঁড়িয়ে ঝুলতে ঝুলতে যাওয়া – তিলোত্তমার ঐতিহ্যের সঙ্গে একেবারে মিলেমিশে গিয়েছে এই দৃশ্য। লাভও যেমন বাড়ল, তেমনই রুটও বাড়াতে হল। ১৯৪৩ সালে হাওড়া ব্রিজ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে এই ট্রাম ব্যবস্থা।

tramline kolkata

এরপর এল স্বাধীনতা। ১৯৪৭-এর পরও বেশ কয়েকবছর ব্রিটিশরা এই ট্রাম কোম্পানি চালাত। আগেই বলেছি, ট্রামের দুটি কামরার বিভাজন ছিল খুব স্পষ্ট। সেকেন্ড ক্লাসেই বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত, চাকুরে, ছাত্র-যুবরা যেতেন। ১৯৫৩ সালের জুন মাসে হঠাৎই ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ ট্রামের ভাড়া এক পয়সা বাড়িয়ে দেয়। এই ঘটনাই আগুন ছড়িয়ে দেয় শহরের বুকে। ভাড়া বৃদ্ধির দাবিতে পথে নামে তৎকালীন বাম নেতারা। গ্রেফতার হন জ্যোতি বসু, সুবোধ ব্যানার্জির মতো নেতারা। কিন্তু ট্রাম থেকেছে ট্রামের মতোই।

এই ট্রামই দেখেছিল কবি জীবনানন্দ দাশের মৃত্যু। এই ট্রামের কর্মীরাই ১৯৪৬ সালের আগস্টের দাঙ্গার প্রতিবাদে ধর্মঘট করেছিলেন। বাংলার গল্পে-উপন্যাসে-কবিতায়-গানে-সিনেমায় তার উপস্থিতি আজও উজ্জ্বল। ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’র সিদ্ধার্থদের মতো অজস্র যুবক-যুবতীর জীবনযুদ্ধের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে এই ট্রাম। নকশাল আন্দোলনের আগুন থেকে সুনীল-শক্তির পদ্য, সবকিছুর সাক্ষী থেকেছে এই যানটি। আর আজ?

এখন কেমন আছ, ট্রাম?

খুব বেশিদিন আগের কথা বলতে হবে না। ২০১১ সালেও ট্রামের রুটসংখ্যা ছিল ৩৭টি। ২০২২-এ এসে সেটির সংখ্যা হল ২। ২০১১-তে যে যানটি প্রায় ৬১ কিমি পথ চলত, আজ সেটা এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮ কিমি-তে। কোনওরকম কোনও বিনিয়োগ নেই ট্রামে। বাস, ট্যাক্সি, ওলা-উবেরের পাশাপাশি মেট্রো শুরু হওয়ার পর ট্রাম যেন অনেকেরই বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসন ট্রামের হাল ফেরানোর বহুবার আশ্বাস দিলেও, তার একটিও যে পূর্ণ হয়নি সেটা পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট। ট্রামের জন্য যানজট বাড়ে, স্রেফ এই অজুহাতেই অনেকে এটি তুলে দিতে চান।

kolkata tram nowadays

অথচ ইউরোপের বহু দেশে আজও রমরমিয়ে চলছে ট্রাম। আরও আধুনিক হয়েছে সেই ব্যবস্থা, ঝাঁ-চকচকে হয়েছে। বিনিয়োগ এসেছে অনেক। আর কলকাতা? বৃদ্ধাশ্রমের চাতালে বসে থাকা অসহায় বৃদ্ধের মতোই অশক্ত শরীরে তাকিয়ে থাকে ট্রাম। ২০১৪ সালে ক্যালকাটা ট্রামওয়ে কোম্পানি অবশ্য একটি মিউজিয়াম উদ্বোধন করে। একটা আস্ত ট্রামকে পুরোদস্তুর মিউজিয়ামে পরিণত করা হয়। ভারতের একমাত্র ট্রাম মিউজিয়াম এই শহরেই রয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা বিপণনের জন্য মাঝে মধ্যে ট্রামকে ব্যবহার করে। ট্রামের কামরাই হয়ে যায় ছোট্ট শপিং মল। এখন এসি ট্রামও এসেছে কলকাতায়। ২০২০ সালে দেশের প্রথম ওয়াইফাই যুক্ত ট্রাম লাইব্রেরিও শুরু হয়েছে এই শহরে। একটা গোটা ট্রাম যেন আস্ত কলেজ স্ট্রিট!

যুগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ট্রামও নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। রাতের আলো মেখে ক্লান্ত হয়ে ফিরতে ফিরতে সে দেখে নেয় এই শহরটাকে। কত উত্থান-পতনের সাক্ষী থেকেছে এই ট্রাম! কত হারানো প্রেমের স্পর্শ পেয়েছে তারা। পেয়েছে কবিতার পাণ্ডুলিপি, কবির রক্ত। ডোডো পাখির মতো দশা হবে না তো ট্রামের? শহরের রাত চুঁইয়ে এই কথাটাই বারবার নেমে আসে।

More Articles