১৬ বছরের ব্যবধান, স্বামীর মতোই শেষ পরিণতি! নিয়তিই মিলিয়ে দিল নেপালের বিমান দুর্ঘটনার পাইলটকে

Nepal Plane Crash Co-Pilot death : পোখরায় আছড়ে পড়া বিমানের ভেতর জ্বলে পুড়ে গিয়েছে তাঁর দেহ। ১৬ বছর আগে এভাবেই বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান তাঁর স্বামী!

১৬ বছর আগেও এমন দুর্ঘটনা ঘটেছিল। ঠিক এভাবেই ভেঙে পড়েছিল একটি বিমান। জ্বলে পুড়ে গিয়েছিল সমস্তটা। সেই দীর্ঘ সময়ের পর ২০২৩-এর জানুয়ারি ফের একটি বিমান দুর্ঘটনা দেখল। বলা হচ্ছে, গত দু-তিন দশকের মধ্যে নেপালে সবচেয়ে ভয়ংকর বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে পোখরায়। মৃত্যু, ধ্বংস, হাহাকার – এসব তো আছেই। কিন্তু এর বাইরে গিয়েও দুটো সরলরেখা এসে একটা বিন্দুতে মিলল। অঞ্জু খাটিওয়াদার গল্পটিই অনেকটা সেরকম। এখন অবশ্য সেই গল্প বলার জন্য তিনি বেঁচে নেই। পোখরায় আছড়ে পড়া বিমানের ভেতর জ্বলে পুড়ে গিয়েছে তাঁর দেহ। ঠিক যেমনভাবে ১৬ বছর আগে একইরকম বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান তাঁর স্বামী!

আরও পড়ুন : বিমান টুকরো টুকরো হয়ে ৬৮ জনের মৃত্যু! কেন বারবার দুর্ঘটনার মাশুল গুনছেন নেপালের আম জনতা?

নিয়তি বোধহয় এভাবেই বারবার ফিরে ফিরে আসে। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ওই বিমানে মোট ৭২ জন ছিলেন। এখনও অবধি ৬৮ জনের দেহ খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এলাকায় গেলে দেখা যাচ্ছে বীভৎস এক চিত্র। কিন্তু ভেঙে পড়ার কয়েক ঘণ্টা আগেও এমন ছবি ছিল না। অন্যান্য দিনের মতোই ডিউটিতে এসেছিলেন অঞ্জু খাটিওয়াদা। ৪৪ বছর বয়সী অঞ্জু কো-পাইলটের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। কিন্তু সেটাই যে তাঁর শেষ উড়ান হতে চলেছে, ভাবতেও পারেননি। ৬৪০০ ঘণ্টার বেশি বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। এই নির্দিষ্ট রুট দিয়ে এর আগেও অনেকবার যাতায়াত করেছেন। কিন্তু ২০২৩-এর জানুয়ারি যে এমন দিন ঘনিয়ে আনবে…

অবশ্য নিয়তি যেন তাঁর সঙ্গে জুড়েই ছিল। ঠিক ১৬ বছর আগের কথা। তখন বিমান চালানোর ভাবনা মাথাতেও ছিল না অঞ্জুর। তাঁর স্বামী দীপক পোখরেলকে নিয়ে দিব্যি চলছিল সংসার। ঘটনাচক্রে, এই ইয়েতি এয়ারলাইন্সেই কাজ করতেন তিনি। ২০০৬ সালে উড়ানের সময় জুমলায় ভেঙে পড়ে একটি বিমান। ওই বিমানেই ছিলেন দীপক। মারা যান তিনি।

আরও পড়ুন : বিমানে সহযাত্রীর গায়ে প্রস্রাব, কী ভাবে পুলিশ খুঁজে পেল শঙ্করকে

তারপরই গোটা ছবিটা বদলে গেল। স্বামীর মৃত্যুর পর ইনসিউরেন্স বিমা হিসেবে যা টাকা পান, সেটা দিয়ে পাইলট হিসেবে ট্রেনিং শুরু করেন। ২০১০ সালে সেই ট্রেনিংয়ের পর পাইলট হিসেবে যোগও দেন। দেখতে দেখতে প্রায় ১৩ বছর হয়ে গেল অঞ্জু খাটিওয়াদার। কিন্তু স্বামীর সঙ্গেই তাঁর নিয়তি জড়িয়ে আছে, কে জানত! সেই একই বিমান সংস্থা, একই রুট। একই দুর্ঘটনা। এখনও যদিও অঞ্জুর দেহ পাওয়া যায়নি। পাইলটের দেহ অবশ্য পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু বিমানটি যেভাবে পড়েছে, তাতে কো-পাইলট অঞ্জুর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা যে প্রায় নেইই, সেটা মনে করছেন বিমান সংস্থার সহকর্মী ও উদ্ধাকারী দলের সদস্যরা।

More Articles