এবার হিরানন্দানির অফিসে ইডি! মহুয়া মৈত্রকেই ঘুরপথে শিক্ষা দিতে চাইছে বিজেপি?
ED raids Hiranandani Group : মহুয়া মৈত্রর ঘটনা কি তবে নতুন করে ফিরতে চলেছে শিরোনামে?
ভারতের অন্যতম বড় রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার হিরানন্দানি গ্রুপ। তবে বাণিজ্য জগতের বাইরে হিরানন্দানি নামটি শিরোনামে উঠে আসে তৃণমূলের সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সৌজন্যে। অভিযোগ উঠেছিল, দর্শন হিরানন্দানির থেকে টাকা নিয়ে তিনি কেন্দ্রের শাসক বিজেপির বিরুদ্ধে সংসদে প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন। মহুয়া মৈত্রকে বহিষ্কারের পর এবার কি হিরানন্দানিকেই টাকা হচ্ছে 'ক্যাশ ফর ক্যোয়ারি' মামলায়? বৃহস্পতিবার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি অভিযান চালিয়েছে হিরানন্দানি গোষ্ঠীর চারটি কার্যালয়ে, তিনটি মুম্বই এবং একটি পানভেলে। হিরানন্দানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ফেমা নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ আসার পরেই ইডির এই অভিযান।
ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টের (ফেমা) অধীনে বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে হিরানন্দানি গ্রুপের প্রধান কার্যালয় সহ চার-পাঁচটি জায়গায় তল্লাশি চালানো হয়। এর আগে, ২০২২ সালের মার্চ মাসে, আয়কর বিভাগ মুম্বই, বেঙ্গালুরু এবং চেন্নাই জুড়ে হিরানন্দানি গোষ্ঠীর প্রায় ২৫ টি দফতরে তল্লাশি চালায়। সেবার আয়কর ফাঁকির সন্দেহে তল্লাশি চালানো হয়েছিল।
এবারের অভিযান বেশ কয়েকটি প্রশ্ন নিয়ে আসছে সঙ্গে। মহুয়া মৈত্রর ঘটনা কি তবে নতুন করে ফিরতে চলেছে শিরোনামে? ইডির এক সূত্র জানাচ্ছে, বৈদেশিক মুদ্রা লঙ্ঘন মামলার সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু নতুন তথ্য পেয়েছে ইডি। যার ভিত্তিতেই এই অভিযান। এই অভিযানের সঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা মহুয়া মৈত্রের কোনও যোগ নেই বলা হচ্ছে ঠিকই কিন্তু অবধারিতভাবেই প্রশ্ন আসছে, মোদির বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার টাকা দেওয়ার অভিযোগ আসার পরেই কেন ইডির অভিযান? ঘুরপথে হিরানন্দানির মাধ্যমে কি মহুয়া মৈত্রকে আরও কোণঠাসা করার চেষ্টা নয় এটি?
আরও পড়ুন- আধার নিস্ক্রিয় করা মানে নাগরিকের মৃত্যু! যে জটিলতা বাড়াতে চলেছে আরও
দর্শন হিরানন্দির থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে মহুয়ার বিরুদ্ধে। এই কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা নিরঞ্জন হিরানন্দানির ছেলে হচ্ছেন দর্শন হিরানন্দানি। বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে লিখিত অভিযোগে জানান সংসদে মোদির বিরুদ্ধে প্রশ্ন করার বিনিময়ে দর্শনের কাছ থেকে অর্থ এবং দামী উপহার নিয়েছেন মহুয়া মৈত্র।
দর্শন হিরানন্দানি ডেটা সেন্টার অপারেটর Yotta Data Services, তেল ও গ্যাস এবং সম্পর্কিত পরিকাঠামো সংস্থা H-Energy, টার্ক সেমিকন্ডাক্টরস এবং তেজ প্ল্যাটফর্মের মতো গ্রাহক পরিষেবার চেয়ারপার্সনও। দর্শনের বাবা নিরঞ্জন হিরানন্দানি এবং সুরেন্দ্র হিরানন্দানি ১৯৭৮ সালে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেছিলেন।
হিরানন্দানি গোষ্ঠীর সংস্থা পাওয়াই, পানভেল, থানে (মুম্বই মেট্রোপলিটন অঞ্চলের সমস্ত অংশ), চেন্নাই, আহমেদাবাদ এবং পুনেতে ৩৫ মিলিয়ন বর্গফুট আবাসিক এবং প্রায় ১৪ মিলিয়ন বর্গফুট বাণিজ্যিক ও রিটেইল জায়গা সহ প্রায় ৪৮ মিলিয়ন বর্গফুট রিয়েল এস্টেট তৈরি করেছে। চেন্নাই, আলিবাগ এবং খান্ডালায় জনপ্রিয় রিসর্ট এলাকায় তিনটি উন্নয়ন প্রকল্প চালু করার পরিকল্পনা করেছে৷ হিরানন্দানি গোষ্ঠীটির আলিবাগে ২৫০ একর, খান্ডালায় ৫০০ একর এবং চেন্নাইয়ে ৪০০ একর জমি রয়েছে।
ভারতীয় ধনকুবের ব্যবসায়ী নিরঞ্জন হিরানন্দানির ছেলে দর্শন হিরানন্দানি বাবার রিয়েল এস্টেট সাম্রাজ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত। তিনি বেঙ্গালুরু, মুম্বই, হায়দরাবাদ, চেন্নাইয়ের মতো শহরে রিয়েল প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত। দর্শন এমবিএ স্নাতক। নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত রচেস্টার ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ব্যাচেলর অফ সায়েন্স ডিগ্রি রয়েছে তাঁর। হিরানন্দানি গ্রুপের ডেটা সেন্টার, ক্লাউড কম্পিউটিং, শক্তি এবং শিল্প গুদামজাতকরণের মতো ক্ষেত্রগুলিতে ব্যাপকভাবে কাজ করছেন দর্শন হিরানন্দানি।