জমিজিরেত, রত্ন, প্রাসাদ-সহ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি, চেনেন কলির এই কুবেরকে?

King Maha Vajiralongkorn's Net Worth: সব মিলিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ধনীতম রাজার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছেন থাইল্যান্ডের এই রাজা। গাড়ি, বাড়ি, জমি জিরেত থেকে শুরু করে সোনা-হিরে-মাণিক্য কী নেই তাঁর সংগ্রহে।

ব্রহ্মার তপস্যা করে গোটা পৃথিবীর ধন লাভ করেছিলেন কুবের। সেই থেকে ধনদেবতা কুবের। ব্রহ্মার বরে তিনি পেয়েছিলেন পুষ্পক বিমান, স্বর্ণলঙ্কা, স্বর্ণপ্রাসাদ-সহ একাধিক মহামূল্য জিনিস, যার হিসেব করে ওঠা দুঃসাধ্য। তবে শুধু লঙ্কেশ্বর কুবেরই নন, এই কলি যুগেও মিলেছে আধুনিক কুবেরের খোঁজ।

না, তিনি কোনও দেবতা বা দানব নন। তবে তিনি রাজা আলবাত। থাইল্যান্ডের রাজা মহা বজ্রালঙ্কর্ণ। স্থানীয় ভাবে অবশ্য তিনি রাজা রাম এক্স নামেই বেশি পরিচিত। তার চেয়েও বড় কথা তিনি সত্য়িই আজকের যুগের কুবের। প্রায় কুবেরেরই সমপরিমাণ ধনের অধিকারী তিনি।

আরও পড়ুন: ১০,৫০০ শাড়ি, ১২৫০ কেজি রুপো, ২৮ কেজি সোনা! ভারতের সর্বকালের ধনী অভিনেত্রীকে চেনেন?

শুধু বিলাসবহুল ঘরবাড়ি, অভিজাত জিনিসপত্রই নয়, সোনা, হিরে-সহ গুচ্ছের মহামূল্যবান সব রত্ন রয়েছে তাঁর সংগ্রহে। সম্প্রতি ফিনানশিয়াল টাইমসে দাবি করা হয়েছে, থাইল্যান্ডের এই রাজার নামে রয়েছে প্রায় ৩.২ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ। যা তাঁকে করে তুলেছে পৃথিবীর ধনীতম মানুষদের অন্যতম তো বটেই, পৃথিবীর ধনীতম রাজাও বটে।

শুধু অর্থ বা অস্থাবর সম্পত্তিই নয়। প্রায় ৬,৫৬০ হেক্টর জমি রয়েছে রাজা বজ্রলঙ্কর্ণের অধীনে। পাশাপাশি একাধিক সরকারি ভবন, মল, হোটেল এবং বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি। আর এই সব কিছুই তাঁকে বানিয়ে তুলেছে তাঁর দেশের সবচেয়ে বড় ভূস্বামী। থাইল্যান্ডের একাধিক অর্থনৈতিক ও শিল্পক্ষেত্রে অংশীদারি রয়েছে রাজার। সিয়াম কমার্শিয়াল ব্যাঙ্কে ২৩ শতাংশ ও সিয়াম সিমেন্ট গ্রুপের ৩৩.৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে রাজা বজ্রলঙ্কর্ণের কাছে।

কী ভাবলেন এখানেই শেষ! মোটেও না। বরং 'গুপি বাঘা ফিরে এল' সিনেমার সেই বৃদ্ধ তান্ত্রিকের মতোই তাঁর সংগ্রহে রয়েছে অসংখ্য মণিমাণিক্য, রত্নাদি। ৫৪৫.৬৭ ক্যারেটের একটি ব্রাউন গোল্ডেন জুবিলি হিরে সেই সংগ্রহের সবচেয়ে বড় তারকা। পাশাপাশি রাজার সংগ্রহে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম ও সবচেয়ে ব্যয়বহুল হিরেও, যার দাম আনুমানিক ৯৮ কোটি টাকার কাছাকাছি তো হবেই।

পৃথিবীর ধনীতম এই রাজার শখও বলিহারি। সেদিনের কুবেরের কাছে ছিল পুষ্পক রথ। এই কুবেরের কাছে আছে হেলিকপ্টার, বোয়িং, এয়ারবাস এবং সুখোই সুপারজেট-সহ ৩৮টি বিলাসবহুল বিমান। যেগুলো রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই বছরে খরচ হয় প্রায় ৫২৪ কোটি টাকার কাছাকাছি। স্থল-জল থেকে শুরু করে আকাশপথ, সর্বোত্র অবাধ বিচরণ রাজার।

শুধু বিমান-কপ্টারের সংগ্রহ নয়, গাড়িরও নিদারুণ শখ রাজামশায়ের। তাঁর সংগ্রেহে রয়েছে লিমুজিন, মার্সিডিজ বেঞ্জ-সহ প্রায় ৩০০-রও বেশি বিলাসবহুল গাড়ি। রয়েছে ৫২টি নৌকার একটি বহর, যার গায়ে খোদাই করা রয়েছে সোনার নকশা। ২৩,৫১,০০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে একটি বিরাটাকার প্রাসাদ রয়েছে তাঁর। যদিও রাজা সেই গোটা স্থানটাই সরকারি অফিস ও জাদুঘরের জন্য দান করেছেন রাজা বজ্রলঙ্কর্ণ।

আরও পড়ুন: খোদ আওরঙ্গজেব, ব্রিটিশরা টাকা চাইতেন তাঁর কাছে! বিশ্বের সবচেয়ে ধনী এই ব্যক্তির পরিচয় জানেন?

সব মিলিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ধনীতম রাজার শিরোপা ছিনিয়ে নিয়েছেন থাইল্যান্ডের এই রাজা। গাড়ি, বাড়ি, জমি জিরেত থেকে শুরু করে সোনা-হিরে-মাণিক্য কী নেই তাঁর সংগ্রহে। থাইল্যান্ড সেসব দেশের মধ্যে অন্যতম, যেখানে এখনও রাজশাসন জারি রয়েছে। আর সেখানকারই কোটিপতি রাজা বজ্রলঙ্কর্ণ। ব্রহ্মার আশীর্বাদ তিনি আদৌ পেয়েছেন কিনা জানা নেই, তবে ধনদেবতা কুবেরের আশীর্বাদি হাত যে তাঁর মাথায় রয়েছে পুরোদমে, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।

More Articles