ডেনড্রাইটকে অক্সিজেন ভাবে যারা, সেইসব মানুষের গল্প বলে 'ঝিল্লি'

‘ঝিল্লি’ এমন এক ছবি, যার বিস্তার কাব্যিক। আকাশ-মাটি-পাতালে এর ব্যাপ্তি।

এবারের কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ঈশান ঘোষ পরিচালিত 'ঝিল্লি' আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় 'ইনোভেশন অফ মুভিং ইমেজেস' বিভাগের শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে নির্বাচিত হলো। আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এই ছবি দেখে প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন লেখক।

ছবি শেষের পর নন্দনের পাশে দাঁড়িয়েছিলাম আমরা ক’জন হতবাক, নতজানু, মুগ্ধ, বিমূঢ়, আনন্দিত বন্ধু। তীব্র ঝড় উঠল, বৃষ্টি নামল। আমরা মাথা বাঁচানোর খুব তাড়া দেখাতে পারিনি। আর্দ্রতা অবশ্যম্ভাবী জেনেই আমরা শরীর ভিজিয়ে গিয়ে বসেছিলাম সিঁড়িতে। খুব কম সময়ই তো এমন হয়, যখন সমস্ত বিপরীতমুখী আবেগ-অনুভূতিগুলি একইসঙ্গে সংঘাত বাধায়। ‘ঝিল্লি’ নামক ছবিটি দেখার পর আমার তেমনই দশা। একই সঙ্গে গর্ব-অহংকার-হতাশা-দুঃখ-রাগ-আনন্দ কাজ করছে। এই ভিজে যাওয়া শরীর ছুঁয়ে আত্মসমর্পণ করে নেওয়া ভালো- যাহা বলিব সত্য বলিব, সত্য ছাড়া মিথ্যা বলিতে পারব না আজ।

এই ছবি নিয়ে নিজের কিছু কথা লেখার শুরুতে এও বলে নেওয়া ভালো, আমি এই ছবির টেকনিক্যাল দিক নিয়ে কথা বলতে অপারগ। তার প্রধান কারণ আমার সীমিত জ্ঞান। তাছাড়া, ছবির টেকনিক্যালিটিস নিয়ে লিখতে গেলে ছবিটি বারবার দেখতে হয়, ছবির থেকে একটি নৈর্ব্যক্তিক দূরত্ব প্রয়োজন হয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে সে সুযোগও ঘটেনি। একবারই দেখতে পাওয়া এই ছবির টেকনিক্যাল দিক নিয়ে কথা বলতে না পারার দ্বিতীয় কারণটি গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যক্তিগত। এই ছবি আমাকে এমনভাবে গিলে খেয়েছে যে, এরপর আমি খানিক চেষ্টা করেও টেকনিক্যালিটিস নিয়ে ভেবে উঠতে পারিনি, বরং টের পাচ্ছিলাম কতটা আক্রান্ত আমি। তাই এ এক আক্রান্তের আত্মসমর্পণ। খুঁটিনাটির বদলে এই ছবির ব্যাপ্তি আমাকে ভাসিয়ে কিংবা উড়িয়ে দিয়েছে। তাই এই লেখা এক ডুবন্ত অথবা উড়ন্ত আত্মকথন।

পঞ্চইন্দ্রিয়ের কথা তো জানি। ষষ্ঠেন্দ্রিয়ের ধারণাও জানি। কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই মনে পড়ে না সেসব কথা, মৃত্যুর মতো। কিন্তু এই ছবি এমন অবিশ্বাস্যভাবে ইন্দ্রিয়গুলো জাগাল, যার শিহরণ আমি এখনও বয়ে বেড়াচ্ছি, আমার দৃঢ় ধারণা, বয়ে বেড়াবও। গায়ে তো কাঁটা দেয় অনেক ক্ষেত্রেই, কিন্তু বাকি সমস্ত দ্বার অবারিত করতে পারে কি? আমি টের পেয়েছি, ‘ঝিল্লি’ পেরেছে। এই ছবি শরীরে প্রভাব ফেলেছে আমার। শরীরী প্রভাবকে আমি ভীষণ গুরুত্ব দিই। ভাস্কর চক্রবর্তী পড়লে যেমন শরীর খারাপ করে, মণীন্দ্র গুপ্ত পড়লে যেমন মনে হয় শরীরে ঠান্ডা জল ঢাললাম, তেমনই এই ছবির প্রভাব শারীরিক। এই ছবির নির্গলন সুনামির মতো, যা বাঁধ ভেঙে সমস্ত ইন্দ্রিয়ের ভেতর ঢুকে পড়েছে। পুলিশ দিয়ে আটকানো যাবে না একে। জল ব্যথা বোঝে কি না, সে ছিল প্রশ্ন, কিন্তু জল যে ১৪৪ ধারা বোঝে না, তা তো জানি! অথচ মনেই পড়ে না। ‘ঝিল্লি’ মনে পড়াল তার বাঁধভাঙা জঞ্জালের নৈরাজ্য দিয়ে, তার প্রান্তিক ও সৎ আগুন দিয়ে। এতটাই সৎ আগুন, আঁচ লাগে। এতটাই সৎ জল, সিক্ত লাগে। লেন্স আর্দ্র হয়ে ওঠে ঘনঘোর বর্ষায় এবং সেই আর্দ্র লেন্সেই ছবি এগোয়। তখনই অনুভব করি, আমিও আসলে ভিজে গেছি অথবা পুড়ে গেছি। মনে পড়ে যায় পোলানস্কির কথা, ‘Cinema should make you forget you are sitting in a theater.’

আরও পড়ুন: ‘হ্যামলেট’-এর মতোই আমরা প্রত্যেকে চাইছি প্রতিশোধ: কৌশিক সেন

স্পর্ধা হয়তো, তবু বলি, 'পথের পাঁচালী'-র বৃষ্টি দেখে আমার সিক্ত হওয়ার অনুভব হয়নি, কিন্তু ‘ঝিল্লি’-র বৃষ্টি আমায় সম্পূর্ণ ভিজিয়ে দিয়েছে। স্থিরতা গুঁড়িয়ে দেওয়া ছবি কিংবা তথাকথিত অস্বস্তিকর ছবি যাঁরা বানান, যেমন আমার অন্যতম প্রিয় গ্যাসপার নোয়ে কিংবা লার্স ভন ট্রায়ার কিংবা কিউ কিংবা জুলিয়া ডুকর্নোও-র ছবি দেখে কোনওদিন গন্ধ পাওয়ার অনুভব জাগেনি আমার। এই প্রথম ‘ঝিল্লি’ দেখে আমি গন্ধ পেয়েছি, তীব্র ও স্পষ্ট! নাটকে গন্ধ নিয়ে নানা পরীক্ষানিরীক্ষা হয়েছে জানি, কারণ তা লাইভ মিডিয়াম, সেখানে গন্ধ প্রয়োগ করে আরেকটি ইন্দ্রিয়র এনগেজমেন্ট ঘটানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু কোনও বাস্তবিক প্রয়োগ ছাড়াই, সিনেমা দেখে গন্ধ পাব তীব্র, এ আমার কল্পনাতীত। মৃত পশুদের শরীরের গন্ধ, ডেনড্রাইটের গন্ধ, সোঁদা গন্ধ, ঘামের গন্ধ– সমস্ত গন্ধ পেয়েছি, থুড়ি সমস্ত গন্ধ ছুড়ে দিয়েছে একটা ছবি। গন্ধ ভীষণ ব্যক্তিগত, তাই সেখানেও যখন এই ছবি হানা দিয়েছে, তখনই আমি টের পেয়েছিলাম এ এক অলৌকিক ছবি, অথচ লৌকিক। আমার গুরু-বন্ধু অনাবিল মুখোপাধ্যায় একবার বলেছিলেন, শুধু দৈনন্দিনতা সিনেমা নয়। ‘ঝিল্লি’ অনুভব করতে করতে মনে পড়ছিল এই কথা। কী ভীষণ দৈনন্দিন অথচ কী ভীষণ চিরকালীন! দৈনন্দিন জীবনকে কীভাবে দেখলে ও দেখালে তা উড়াল দিতে পারে সমস্ত দৈনন্দিনতা ছাড়িয়ে, তা ‘ঝিল্লি’ কেমন অবলীলায় পেরেছে। অবলীলায় বললাম এই কারণে যে, ছবিটি তার নির্মাণের সমস্ত শ্রম আড়াল করে দিতে পেরেছে। পাঁচ বছর ধরে বানানো এই ছবির নেপথ্য শ্রম তো কম নয়, কিন্তু ছবিটিতে সেই শ্রমের দাগ জেগে নেই, কারণ তা দেখানোর চেষ্টা নেই। এ এক আশ্চর্য সততা, একরকমের মোক্ষলাভ! আমার মনে হয়, এই অলৌকিকতা নির্মিত হয় সংঘর্ষ থেকে। যেমন এই ছবি দৈনন্দিন এবং দৈনন্দিন নয়। গল্প আছে এবং নেই। নির্মাতাদের একই সঙ্গে খুব কাছের আবার খুব দূরের এই ছবি। এই সংঘর্ষ থেকে এমন এক আলো বিচ্ছুরিত হয়, যা সিনেমার গায়ে এসে পড়ে।

তাই আলাদা করে ফেস্টিভ্যালের ছবির সায়ান অন্ধকার কিংবা প্রোপাগান্ডা ছবির ওয়ার্ম স্লো মোশন কিংবা রাজনৈতিক ছবির হ্যান্ডহেল্ড ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট নিপীড়ন, কিংবা সামাজিক ছবির এলজিবিটিকিউ সচেতনতা, কিংবা মাটির ছবির অ-অভিনেতার অক্ষমতাকে নো অ্যাক্টিং বলে চালিয়ে দেওয়া থেকে মুক্ত ‘ঝিল্লি’। জীবনের নিবিড়তার জন্য ঘুপচি ঘরের মন্তাজ নেই এখানে। আছে অন্তহীন মাঠ, জঞ্জালের পাহাড়, মৃতের স্তূপ, নর্দমার ঝরনা, সুবিস্তৃত ব্লার্ড রাতের শহরের আলোকমালা আর তার সামনে অন্ধকারে আগুন জ্বেলে ডেনড্রাইটকে অক্সিজেন ভাবা মানুষ। এই শট তাই একইসঙ্গে রাজনৈতিক এবং অরাজনৈতিক। পুনরায় সংঘর্ষ। এই ছবিজুড়ে তাই অনেককিছু বলতে চাওয়া নেই, আবার আছেও। আছে দেখা হওয়া, দু’জনের– যে বোঝে কিন্তু লেখে না এবং যে লেখে কিন্তু বোঝে না। দু'জনেই ঝাঁপ দেয়, আর উৎসবমুখর পার্ক স্ট্রিটে ঢুকে আসে স্কেটবোর্ড। অবিশ্বাস্য আবহ এই ছবির। অদ্ভুত চিত্রগ্রহণ ও সম্পাদনা। যে প্রবাহমানতা বুনে দেওয়া আছে এই ছবিতে, তার নেপথ্যের কারিগরি নিয়ে কথা বলার দক্ষতা আমার নেই। আমি হয়তো শুধু স্রষ্টা হতে পারি, অনুভব করতে পারি ওই প্রবাহমানতার, আবহমান প্রবাহমানতার, গতিময়তার, ভেসে চলার কিংবা উড়ে যাওয়ার। এই ছবিতে আকাশ এত বড়, এতই বড় যে, এই বিস্তৃতি এক অনিবার্য নির্লিপ্তি ছড়ায় ফ্রেমজুড়ে আর সেই আকাশের নীচে ছোঁয়াছুঁয়ি খেলতে থাকে মানুষের বেঁচে থাকা আর টিকে থাকা। জীবনকে আশ্চর্য মনে হয় এই অপার-অনন্ত আকাশের নীচে, যে জীবন ভালো নয়, খারাপও নয়, যে জীবন নিজেই এক মদ- যার মধ্যে দ্রবীভূত মানুষ তলিয়ে যাবে, সাঁতার দেবে, ঘেন্না করবে, ভালোবাসবে, অপমান করবে এবং অপমানিত হবে, ক্লান্ত হবে এবং নাচবে তুমুল, অনিবার্য দেশদ্রোহিতার মাঝে স্বাধীনতা দিবসে মাইক বাজাবে, স্বপ্ন দেখবে এবং ঘুম ভাঙাবে এবং এইভাবেই বাঁচবে কিংবা টিকবে এবং মরবে। এই জীবনের আকাশে মাঝে মাঝে শুধু এসে যায় পাখি আর এরোপ্লেন। মানুষের উদ্ধত হাত বন্দুক হয়ে নিশানা করে সেইসব অমানুষ পাখিদের আর এরোপ্লেনদের, আওয়াজ ওঠে- ঢিঁচক্যাও... ঢিঁচক্যাও... ঢিঁচক্যাও। গুলি খেয়েও পাখি উড়ে যায়, এরোপ্লেন পৌঁছয় গন্তব্যে। পরাজিত মানুষরা শুয়োর ধরে আগুনে ঝলসায়, শুয়োরের চিৎকার আর মানুষের চিৎকারে স্বাতন্ত্র্য থাকে না, ফুর্তি করে মাংস-মদ খায় আর গোধূলিবেলায় জঞ্জালের পাহাড়ে ডুবতে থাকা রোদ্দুর গায়ে মেখে ভল্ট মারে ছেলের দল- শূন্যে লাফিয়ে এসে পড়ে আবার জঞ্জালে। মানুষের মতো জঞ্জাল অথবা জঞ্জালের মতো মানুষ, যা বা যারা অদরকারি, অপ্রয়োজনীয়, Discards.

এই মায়ার জঞ্জাল দেখতে দেখতে একইসঙ্গে দূরে থাকি এবং ডুবে থাকি মনে হয়। এ এক ঘোর। ঘোরের মধ্যে মনে পড়ে- ‘তোমাকে আমি বলতে চেয়েছিলাম / জীবন নয় নদীর কোনো নাম...’। আমার অনেকবারই মনে হয়েছে, ঈশ্বর বলে একজন ভবঘুরে আছেন এবং মাঠ যেখানে শেষ হয়ে যায় সেখানে তিনি থাকেন। ঈশ্বর হতে গেলে আগে মরতে হয় শুনেছি। এই ছবির বকুল, গণেশ বারবারই মাঠে এসে পড়ে আর দৌড়োয়। বকুল বোধহয় মাঠের শেষ দেখতে পেয়েছিল, তাই তাকে ছুঁতে পারে না তার ইয়ার-দোস্ত গণেশ। আমরা দেখি, দু'জন আধো অন্ধকারে ছুটছে বিশাল মাঠের মধ্যে। এই ছোঁয়াছুঁয়ি যেন আজকের নয়, পৃথিবীতে প্রাণ আসার পর থেকেই যেন ওরা ছুটছে, ছুটেই চলেছে! যেন এ এক পূর্বনির্ধারিত অন্তহীন ছোঁয়াছুঁয়ি। বকুলকে জান লড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে গণেশ। পারে না। বকুল চিনতে পারে না কাউকে। জঞ্জালকেন্দ্রের সৌন্দর্যায়ন হয়, সবুজ গালিচা দিয়ে ঢাকা হয় নোংরা রাস্তা। বন্ধুরা হারিয়ে যায়। বকুলের বান্ধব চম্পা, যে চম্পার তৃতীয় অবস্থান নিয়ে খিল্লি করেও স্বাধীনতা দিবসে চম্পার হাতে ঠান্ডা পানীয় বা সরবৎ তুলে দিয়েছিল বকুল আর চুমুক নিয়ে তৃপ্তি পেয়েছিল চম্পা, সেই চম্পা নিশ্চয়ই টিকে আছে আমাদের এই বসুন্ধরায়, কারণ চম্পা দিনের শেষে নিজেকে চিৎকার করে স্বীকার করেছিল হিজড়ে বলে। বকুলের দোস্ত বেঁটে শম্ভু, যে নিজেকে বড়লোক বলত আর সিগারেট খেত, তাকে বকুলরা বেড়ার মধ্যে আটকে এসেছে, গাছ পোঁতার পর যে বেড়ায় ঘিরে দেওয়া হয় সদ্য পোঁতা গাছ, যাতে ছাগলে মুখ না দিতে পারে! কিন্তু অনন্ত মাঠে গণেশ ছুটে ধরতে পারে না বকুলকে। বকুলকে দেখে ঈশ্বরের মতো লাগে। অথবা আমি চাই, বকুল ঈশ্বর হয়ে যাক! বকুল মিলিয়ে যায়। গণেশ কাঁদে আর জঞ্জালের পাহাড়ে উন্নয়ন নেমে আসে সন্ধের মতো। গণেশ আটকে থাকে এই মর্ত্যে! এমন নাম নিয়েও বিশেষ সুবিধা করতে পারে না সে! পাখি আর এরোপ্লেনের আকাশে বাজি ফাটে। শোনা যায় না মর্ত্যের ‘ঢিঁচক্যাও’। নীরবের কানাকানিতে মনে পড়ে এক অমানবীয়, বায়বীয় গলায় কেউ বলছে– ‘এই দ্যাখ, আকাশ... পাতাল... আর তার মাঝখানে বিশ্ব বাংলা... এখানে এসে সব গল্প শেষ হয়ে যায়...।’

‘ঝিল্লি’ এমন এক ছবি, যার বিস্তার কাব্যিক। আকাশ-মাটি-পাতালে এর ব্যাপ্তি। এই ছবি নিয়ে কথা তাই শেষ হবে না। শুধু এই ছবির আকাশ আর এরোপ্লেনের ব্যবহার নিয়েই একটা বই লেখা যেতে পারে, ঠিক যেমন 'দ্য লাঞ্চবক্স'-এর রেললাইন আর ট্রেনের ব্যবহার নিয়েও বই লেখা উচিত। ভবিষ্যতে 'ঝিল্লি' পৃথিবীর কোনও ফিল্ম ইনস্টিটিউটে দেখানো হবে কি না, পড়ানো হবে কি না এই ছবির বিষয়ে, জানি না, কিন্তু না হলেও কিছু যায় আসে না 'ঝিল্লি'-র। কারণ, ‘ঝিল্লি’ তার নিজের জোরেই মাতাল!

 

 

ঝিল্লি
পরিচালনা: ঈশান ঘোষ
অভিনয়: অরণ্য গুপ্ত, বিতান বিশ্বাস, শম্ভুনাথ দে, সায়নদীপ গুহ, সৌরভ নায়ক

More Articles