অ্যাংলো বন্ধুদের সঙ্গে টিফিন ভাগ করা ছিল মানা...
Kolkata Anglo Indian Community: বো-ব্যারাকস কেবলই ক্রিসমাস স্পেশ্যাল? আর সেখানকার মানুষের রোজের জীবন, খাদ্যাভ্যাস, সংস্কৃতি, ভয়, একাকীত্ব? কেমন আছেন কলকাতার অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সম্প্রদায়ের মানুষ?
কলকাতা দ্রুত পাল্টাচ্ছে? হ্যাঁ, তা তো বটেই। তবে কিছু অংশ নাকি রয়ে গেছে আনকোরা- ‘একইরকম -অন্যরকম’। যেমন- বো ব্যারাকের অ্যাংলো পাড়া। কলকাতার ভিতর স্বল্প-চেনা আরেক কলকাতা। শুধু সময়ের ছোঁয়ায় একটু মলিন হয়েছে তার লাল ইটের কাঠামো, মেঝে ছোঁয়া পেল্লাই ফ্রেঞ্চ-উইন্ডো। ক্রিসমাসের আলোয় রঙিন বো-ব্যারাক আমাদের বেশ চেনা হলেও এবার একটু দেখি এমনি দিনে কেমন থাকেন সেখানকার মানুষরা? ১৯১২ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগেই আমেরিকান সৈন্যদের থাকার জন্য বানানো হয় বো ব্যারাক কলোনি। লম্বা-টানা একহারা দুইকামরা-তিনকামরার বাড়ি। আমেরিকানরা চলে যাওয়ার পরে এই বো-ব্যারাকের ভার এসে পরে ‘কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট’-এর হাতে। তারপর? তারপরের জন্য ঢুকতে হবে কলকাতা থেকে ‘ক্যালকাটা’-য়!
১৭৭২ সাল থেকে ‘ক্যালকাটা’ অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী। প্রথম গভর্নর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস মুর্শিদাবাদ থেকে সমস্ত প্রশাসনিক কাজকর্মের দপ্তর স্থানান্তরিত করলেন ‘ক্যালকাটা’-য়। সতেরো ও আঠেরো শতকে ‘ক্যালকাটা’ ছিল দু'টি অংশে বিভক্ত- ‘ব্ল্যাক টাউন’ ও ‘হোয়াইট টাউন’। হোয়াইট টাউন ছিল- লর্ড ডালহৌসি স্কোয়ার, চৌরঙ্গী সংলগ্ন এলাকা, পার্ক স্ট্রিট, রিপন স্ট্রিট ও মিশন রো নিয়ে। আর ব্ল্যাক টাউন হল- মূলত আজকের উত্তর কলকাতা। পশ্চিমবাংলার বিধানসভার এককালীন অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সদস্য মাইকেল শেন ক্যালভারট বলছেন, এই বাংলাতেই তাদের জনসংখ্যা প্রায় ২৫০০০-৩০,০০০। এই তথ্য নিয়ে খানিক সন্দেহ থাকলেও বো-ব্যারাকে এখনও রয়েছে বেশ কিছু অ্যাংলো পরিবার। কেমন দিন কাটছে তাদের স্বাধীন বাংলায়? কীভাবেই বা তারা প্রথম থাকতে এলেন এই বো ব্যারাকে?
ফেলিশিয়া তার গ্র্যানির কাছে শুনেছে, কোনও লিজ বা সরকারি নথি ছাড়াই অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের থাকার জন্য বরাদ্দ হয় এই কলোনি। ব্রিটিশরা থাকাকালীন তাদের জন্য ছিল ‘সুবিধার যুগ’ কিন্তু এখন তারা খানিকটা ‘সহ্যের জীব’। গ্র্যানির কথায়- “ব্রিটিশরা ছিল নিয়মানুবর্তী, কর্মঠ এবং পরিষ্কার। এই বাঙালিরা ব্রিটিশদের তাড়াল। তাড়িয়ে শুরু করল নিজেদের বিশৃঙ্খলা”। কলকাতা নোংরা হয়ে গেল। বলছিলেন মধ্য-ত্রিশের ফেলিশিয়া। ফেলিশিয়া প্যাটেল। বিয়ের আগে ফেলিশিয়া গোমস। এখন নাকি অ্যাংলোদের মধ্যে আছে ব্রিটিশ-অ্যাংলো, চাইনিজ-অ্যাংলো, গুজরাতি-অ্যাংলো এমনকী বাঙালি-অ্যাংলোও। ফিউশন হয়েছে তাদের বিয়ের মাধ্যমেই। তবে তারা নিজেদেরকে তফাতে রাখেন ‘বাঙালি-খ্রিস্টান’-দের থেকে।
আরও পড়ুন- ভেলানকান্নি মাতা ও বড়দিনের প্রসাদি
“কারণ তাদের মধ্যে ব্রিটিশ রক্ত নেই”, বলছিলেন ফেলিশিয়ার মা অ্যান গোমস। অ্যান পড়েছেন সেন্ট থমাস স্কুল, খিদিরপুরে। “...এগারো-বারো ক্লাসে বাঙালি মেয়েরা কেউই তখন হিলজুতো পরত না, আমরা পরতাম। বৃহস্পতিবার আমাদের স্কার্টের নীচে, লাল হাফপ্যান্ট পরতে হতো। সেদিন থাকত পিটি ক্লাস। ‘ভদ্রমহিলারা’ কেউ পিটি ক্লাস করত না। আমি লাল পরতাম কারণ আমার ছিল ‘রেড হাউস-নাইটিঙ্গেল’। আমি লিপস্টিক পরতে ভালোবাসতাম। আমরা সবসময়ই ‘ভালো খাবার’ খেতাম। আসলে অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান মানেই তো ‘লিভ লাইফ কিং সাইজ’”। বো-ব্যারাকের বাড়িতে ডিনারের আগেই ঘুমে ঢুলে আসছিলেন অ্যান গোমস।
জানতে চাইলাম, রাতে কী খান?
- “কী আবার খাব? রুটি খাই। তবে, আমি বীফ খেতে খুব ভালবাসি। ছোট মেয়ে কিনে আনে। ছেলে খায় না। তার বাঙালি বান্ধবী। আমি খুব ভালো বীফ বানাতে পারি। আমি জানি, এখন সব বাঙালিরাই বীফ খায়। অ্যাই, তুমি খাও না? বলে চলেন, তার ব্রেকফাস্টে চাই-ই চাই স্যুপ আর বাটার”।
অ্যানের কথার জন্য আমার কাছে লজ্জা প্রকাশ করল বন্ধু ফেলিশিয়া। এই খাবারের কথা জিজ্ঞাসা করতেই রোসেন বলেছিল, তারা দুপুরে এখন ‘ডাল-চাপাটি-ক্র্যাব’ সবই খায়। তবে নামের ক্ষেত্রে তারা অ্যাংলো-করণ করে নিয়েছে বেশ কিছু খাবারের। যেমন তার দিদিমার কাছে ডাল হয়ে গেছে- ‘ডল’। আসলে খাদ্যাভ্যাস অনেকটাই নির্ভর করে স্থানীয় বাজারের উপর। সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ছাত্রী নেস জানায়- “ব্রেকফাস্টের নিয়ম আমাদের অ্যাংলো বাড়িতে বরাবরই। সবই খাই; ধরো- টোস্ট, ডিম, কর্নফ্লেক্স, কলা, জ্যাম, চিজস্প্রেড। মম খুব ভালো চিজ বানায়। তবে কলেজে পড়ার সময় থেকে বন্ধুদের সঙ্গে এদিক-ওদিক খুব দক্ষিণ-ভারতীয় খাবার খেয়েছি। দক্ষিণ-ভারতীয় খাবার আমার এখন খুব পছন্দের।"
বন্ধু এরিক, জেসনকে দেখেছি পুরি, কচুরি, নাহারি, ঢোকলা খেতে।
-জিজ্ঞাসা করেছি, নিজেদের খাবারের জন্য মন খারাপ করে না তোমাদের?
-“কেন করবে? ঝাল ফ্রেজি, যাঙ্গলি পুলাও, কোকোনাট রাইস, পর্ক ভিন্ডালু সবই হয় ক্রিসমাসে। জানোই তো, আমার মা কোনওদিনও রান্না করেনি। অ্যাংলো পরিবারে রান্না করাটা বাঙালি বাড়ির মতো শুধুই ‘মেয়েদের কাজ’ নয়। তোমাকে আগেই বলেছিলাম, আমাদের বাড়ির মহিলারা তিন প্রজন্ম ধরে কর্মরতা”।
-হ্যাঁ, গ্লোরিয়াও বলেছিল আন্টি রান্না করেন না। ওর বাবা করেন রোজকারের রান্না।
-“আমি কোনদিনও আমার বাবার কথা বলতে স্বচ্ছন্দ নই”– বলে এরিক। তার মায়ের নাম এপ্রিল। “আমার মা বরাবরই দেখতে সুন্দর। সাজগোজ করতেও ভালোবাসে। মা তো এখন তো ‘ভেদিক-ভিলেজ’-এর হেড অ্যাকাউন্টেন্ট। তো যা বলছিলাম, আমার বাবাকে আমি দেখিনি। মা বিয়ে করে কুড়ি বছর বয়সে। বিয়েটা ছিল শুধুমাত্রই ভালোবাসার। পাঁচ বছর ছিল। আমার বাবা ছিল ‘পিওর ব্রিটিশ’, নীল চোখ, স্পেনসর। মিশন-রো তে থাকত ওরা। তারপর বাবা-মায়ের ছাড়াছাড়ি হয়। বাবা ইউরোপ চলে যায়। বাবার ইউরোপে অনেক বড় বাড়ি আছে”। কফি শেষ করে এরিক।
ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর তিন দফায় বিরাট অভিবাসন হয় অ্যাংলোদের। বো-ব্যারাকের অনেকেই বলে, কাজ করে, টাকা জমিয়ে ‘ওদেশে’ যাওয়ার কথা। তবে, অ্যাংলো পাড়ার বাঙালিদের কাছে, ‘ওদেশের বাড়ি’ ওদের ‘খেয়ালি পুলাও’-এর বর্ণনা। ব্রিটিশরাও হাসত ওদের ‘চিঁ-চিঁ ইংরেজি’-র উচ্চারণে। এই অভিবাসনের কারণ হিসাবে অনেকেই দেখেছেন বাঙালি সমাজের সাংস্কৃতিক দৈন্য, জাতি সমস্যা ও ক্রমাগত অপরায়ণ।
“জানো তো, এই কফিতে কোকোনাট-ওয়েল মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস নাকি আমার বাবার থেকে পাওয়া।- মা বলে”। বলে যাচ্ছিল এরিক।
-“তোমরা কোথাকার নাগরিক মনে কর নিজেদের”? প্রশ্নটা করেছিলাম রোসেন-কে।
“শোনো, আমি মমের মতো আবেগতাড়িত নই। আমি জানি, আমাদের খেতে, পড়তে, থাকতে হবে এখানেই। ব্রিটিশরা কোনওদিনই আমাদের মেনে নেয়নি। আমার আধার কার্ড ইন্ডিয়ান, পাসপোর্ট ইন্ডিয়ান। তবে, আমি কোথাকার নাগরিক বলে তোমার মনে হয়? আমরা ক্লান্ত এই ‘হাফ-অ্যান্ড-হাফ’ অবস্থা নিয়ে। তুমি কি পারতে?”
না। আমি আগের প্রজন্মের কাছে দেশভাগের গল্প শুনেছি মাত্র। কোভিডে শুনেছি পরিযায়ী শ্রমিকদের কথা। বাংলাদেশি লেখক হাসান আজিজুল হকের শোওয়ার ঘরে নাকি তাঁর শেষদিন অবধি টাঙানো ছিল তাঁর বর্ধমানের বাড়ির পাঁকুড়গাছের ছবি। নাগরিকতা মানে কি শুধুই ভিটেমাটি? অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের ভিটেমাটি কোথায়? মাটি মানে কি জন্মের দাগ আর গৃহের নথি? নাকি বয়ে চলা। সমসাময়িক সংস্কৃতির সঙ্গে আত্তীকরণ। এই মাটিই তো ভাত দেয়। জাগায় গৃহসুখের নেশা।
ঘোর কাটে রোসেনের কথায়-
-“পাস্তা খাবে? তোমার তো মিক্সড সস পছন্দ”।
আমরা বসেছিলাম সদর স্ট্রিটের ‘স্প্যানিশ ক্যাফে’-তে। বাঙালি পাড়ার স্প্যানিশ ক্যাফে। উপভোগ্য এখানকার নির্জনতা। আমার বেশিরভাগ কথোপকথনই হয়েছে এই স্প্যানিশ ক্যাফে-তে।
“তোমাকে আমার স্কুলের কথা বলেছিলাম তো? আমার রোসেন থেকে ‘রশান’ হয়ে যাওয়ার গল্পটা? আমার হিন্দি শিক্ষিকা কি ইচ্ছা করেই চিরকাল ক্লাসে আমার নাম ডাকলেন ‘রশান’?
তুমি জানো, আমাকে কতবার শুনতে হয়েছে, আমি ‘অন্য অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের মতো নই’। কারণ, আমি পড়াশোনায় ভালো আর শান্ত স্বভাবের ছিলাম। ওরা ধরেই নেয়, অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানরা পড়াশোনা করে না। অ্যাংলো মেয়েরা বেশি কথা বলে আর ডার্ক লিপস্টিক লাগায়। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে আমাকে একবার প্রশ্ন করা হয়েছিল, রোসেন মাইলস আমার নিজের নাম কিনা? মানে ওই ইন্সটাগ্রাম হ্যান্ডেলের জন্য আজকাল অনেকে ‘স্টাইলিশ’ নাম বানায় কিনা!”
এই একই কথা বলেছিল ভেনেসা।
-“আমার পদবি স্যাভিয়েল। তুমি জানো, এটা কতটা কঠিন? সহপাঠীদের সামনে সবসময় নিজের নাম আর পদবি ব্যাখ্যা করা”?
-তোমার স্কুলে বন্ধু ছিল না?
-“কেন থাকবে না? আমি লোরেটো ডে স্কুলে পড়তাম। ওখানে আমাদের অনেক বন্ধুই ছিল অ্যাংলো। অন্যান্য বন্ধুরাও ছিল। তবে, আমরা অ্যাংলো মেয়েরা একসঙ্গে থাকতাম আর একসঙ্গে চার্চেও যেতাম। আমরা নিজেদের মধ্যেই বেশি মিশতাম।”
-আর পাড়ায়?
“শোনো, আগে অবস্থা অন্যরকম ছিল। আমি রিপন স্ট্রিটে থেকেছি জন্মের পর সাত বছর। তারপর আসি পিকনিক গার্ডেনে। সেখানে বেশিরভাগ মানুষই মুসলিম। অনেকে ‘ড্রপ-আউট’-ও ছিল। ওদের ছেলেমেয়েরা তো আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে ভালোবাসত। কারণ আমরা ভালো ইংরেজি বলি, ভালো ইংরেজি গানের সঙ্গে নাচ করতে পারি। কলেজের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল।”
আরও পড়ুন- মনে হবে সময় পিছিয়ে গেছে কয়েক শতাব্দী, কলকাতার মধ্যে আজও লুকিয়ে সেই ‘গ্রে টাউন’
একজন বলছিল, স্কুলে টিফিন ভাগের কথা। অনেক সহপাঠীকেই বারণ করা থাকত অ্যাংলো বন্ধুদের সঙ্গে টিফিন ভাগ করতে। কারণ তারা বীফ ও পর্ক খায়। “...তবে ভাগ্যিস, আমার মা নিজে কনভেন্ট স্কুলের শিক্ষিকা। মা খুব সচেতন থাকত আমাকে টিফিন দেওয়ার সময়। তুমি জানো, একবার রোজ এনেছিল পর্ক টিক্কি। আমাদের এক মুসলিম সহপাঠী ভুল করে ওর টিফিন খেয়ে শেষে বাথরুমে গিয়ে বমি করেছিল। আমাকে ক্লাসে বন্ধুরা জিজ্ঞাসা করত ‘তোমরা কি চার্চে কিস করো?" অথচ, আমি আমার বাঙালি বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে প্রসাদের খিচুড়ি খেয়েছি। আমি এমনিতে হট প্যান্ট বা মিডি- যাই পরি না কেন, ওদের বাড়িতে গিয়েছিলাম কুর্তি পরে। আমরা তো চাই-ই বন্ধুত্ব করতে। আমদের রিপন স্ট্রিটের এই প্রাচীন বাড়ি আমার মমের জন্মের আগের।”
ঔপনিবেশিক ঘরানায় গড়ে ওঠা কলকাতার কালচারাল হ্যাংওভারে ইংরেজি ভাষা-গান- ডিলান-এলভিসের সমাদর থাকলেও কেন অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের মেনে নিতে হয় এই সাংস্কৃতিক নির্জনতা? বিভিন্নতাকে আমরা সেলিব্রেশনে ধরে রাখলেও ওদের যাপনের সঙ্গে মেনেছি ‘সেফ-ডিসট্যান্স’? একথা সত্য সকল প্রান্তিক গোষ্ঠীর মানুষদের জন্যই। ‘অন্যরকম’- বরাবরই আমাদের আমোদ জুগিয়েছে বর্ডার-লাইনের ওপারে। এতে হয়েছে আরেক প্রস্থ অপরায়ণ। পার্ক স্ট্রিটের ক্রিসমাসের উপচে পড়া ভিড়, ছুটির দিনে বো-ব্যারাকের দোকানে লাঞ্চ, অ্যাংলো বাড়ির হাতে বানানো ওয়াইন- এসব সেই অপরায়ণেরই সূচক।
-“আচ্ছা, আর তুমি যে এত ভালো হিন্দি বল, কী করে শিখলে? সেটাও কি বন্ধুদের সঙ্গে মেশার জন্য?”
-“দেখো, আমার মাতৃভাষা ইংরেজি। বাড়িতে আমরা ইংরেজিতেই কথা বলি। তবে স্কুলে, সাঁতারের ক্লাসে সবাই হিন্দি বলত। ওই বলতে-বলতেই শিখে নিয়েছি।”
বেশিরভাগ অ্যাংলো বাচ্চারাই স্বচ্ছন্দে হিন্দিতে কথা বলতে বা লিখতে পারে। অনেকে আবার বলেছে- “শুধু বন্ধুদের সঙ্গে মেশার জন্য নয়, স্কুলে আমরা একটি বিষয় হিসাবে পড়েছি-হিন্দি।” অনেকে শিখেছে বাংলাও। হিন্দি-তামিল-বাংলা সিনেমা দেখে তারা। অনেকেই দেখেছে সত্যজিৎ রায়ের সিনেমা।
মনে আসে পিকনিক গার্ডেনের বাসিন্দা লায়লার কথা।
-“তুমি মেহেন্দি পরেছ?”
-“হ্যাঁ। তোমার মতো নাকছাবিও পরব এবার। কী করব বলো? ‘অ্যাংলো বউ-বাংলা বর’।"
(চলবে)