"স্নান করে নিস কিন্তু" : সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসা বাংলার শ্রমিককে বললেন মা

Uttarkashi Tunnel Rescue : ফোনে পশ্চিমবাংলায় বাড়ির সঙ্গে কথা বলেন এক শ্রমিক। মাকে ফোন করে ছেলে জানান, নিরাপদে বেরিয়ে এসেছেন তিনি।

১৭ দিনের লড়াই শেষ। অবশেষে মুক্ত ৪১ জন শ্রমিক! উত্তরাখণ্ডের সিল্কিয়ারার সুড়ঙ্গ ধসে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিকই নিরাপদে বেরিয়ে এলেন খোলা আকাশের নিচে। ১৭ দিন ধরে নানাভাবে চলেছে উদ্ধারের কাজ। শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ ম্যানুয়াল 'র‍্যাট-মাইনিং’-এর উপরও নির্ভর করতে হয়েছিল উদ্ধারকারীদের। তবে মিনিট ১৫-র মধ্যেই সমস্ত শ্রমিক অবশেষে বেরিয়ে এলেন সুড়ঙ্গের ওই অন্ধকার থেকে। বেরিয়েই পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলছেন কেউ, কারও আবার সন্তান উপস্থিত সুড়ঙ্গের সামনেই।

ফোনে পশ্চিমবাংলায় বাড়ির সঙ্গে কথা বলেন এক শ্রমিক। মাকে ফোন করে ছেলে জানান, নিরাপদে বেরিয়ে এসেছেন তিনি। এ রাজ্যে ওই শ্রমিকের বাড়িতে যখন মা কথা বলছেন ফোনে, রাজ্যের গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা ঘিরে ধরেছেন তাঁকে। ফোনেই ছেলের খবর নেন, জিজ্ঞেস করেন সহকর্মী অন্য শ্রমিকদের কথাও! তারপর অব্যর্থ এক চিন্তা ছেলের জন্য মায়ের, "কাল সকালে স্নান করে নিস কিন্তু, নোংরায় থাকিস না।" বাইরের তাপমাত্রা এই সময়ে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। সুড়ঙ্গের উষ্ণতা থেকে বাইরে এসে বদলে যাওয়া তাপমাত্রায় মানিয়ে নিচ্ছেন সকলেই। মায়ের সঙ্গে কথা বলে স্বস্তিতে শ্রমিক, শ্রমিকের পরিবারও।

বন্দি এক শ্রমিকের সন্তান আবার অপেক্ষা করছিল বাবার জন্য, সুড়ঙ্গের সামনেই। তবে বাবার সঙ্গে মুখোমুখি দেখা না হলেও ভিডিও কলে কথা হয় বাবার সঙ্গে। বাবা ভালো আছে, জানায় খুদে। বাইরে তিন দিন ধরে উপোস করে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক শ্রমিকের বাবা। জানান, আল্লা প্রার্থনা শুনেছেন। দীপাবলির আলোর উৎসবের রাতে অন্ধকারে তলিয়ে গিয়েছেন ৪১ জন পরিযায়ী শ্রমিক। আজ সকলের দীপাবলি, আজই প্রকৃত আলোর উৎসব! নিরাপদে আছেন সকলেই!

উদ্ধার করা প্রথম তিনজন শ্রমিককে বিশেষভাবে পরিবর্তিত স্ট্রেচারে করে বের করে আনা হয়েছিল। এগুলিকে নীচে নামানো হয়েছিল পাহাড়ের গায়ে গর্ত করে ঢোকানো দুই মিটার চওড়া পাইপ দিয়ে। ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স বা এনডিআরএফ-এর কর্মীরা আটকে পড়া শ্রমিকদের অবস্থা বুঝতে এবং উদ্ধার করতে প্রথমে পাইপের মধ্যে দিয়ে নিচে গিয়েছিলেন। ৬০ মিটার পথের পাথর এবং ধ্বংসাবশেষের মধ্য দিয়ে টেনে তোলা হয় সকলকে। তারপর অ্যাম্বুলেন্সে করে ওই জায়গা থেকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। প্রতি শ্রমিকের জন্য একটি করে অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ হয়েছে। গ্রিন করিডোর করে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে জরুরি চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁদের।

 

More Articles