১৮ মাসে ১০৮ কেজি ওজন কমিয়েছিলেন আম্বানি পুত্র! কোন পথে হলো অসাধ্যসাধন?
Anant Ambani Weigh Loss: ২০১৬ সালে, অনন্ত আম্বানির ১৮ মাসে প্রায় ১০৮ কেজি ওজন কমানোর বিষয়টি সেইসময় বেশ সাড়া ফেলে।
অন্যের বাড়িতে পরিচারকের কাজ করেছেন, অন্যের আবাসনে নিরাপত্তারক্ষীর কাজও সামলেছেন। রোগা টিংটিঙে যুবক। এত কাজ সামলাতে সামলাতে ক্লান্ত হয়ে পড়তেন আরও। শরীরে জোর নেই, যেটুকু খান গায়ে গতরে লাগে না কিছুই। মাঝখানের সময়টিকে ফরোয়ার্ড করে যদি এগিয়ে যাই আমরা, দেখব পরবর্তীকালে তিনিই হয়ে উঠবেন ভারতের জনপ্রিয়তম সেলিব্রিটি প্রশিক্ষক! দেশের ধনকুবের আম্বানিও থাকেন এই মানুষটির ভরসায়! মুকেশ আম্বানির পুত্র অনন্ত আম্বানির চেহারা মনে করুন, বিশাল থলথলে চর্বির সেই যুবক এখন ফিট! নেপথ্যে এই মানুষটিই। বিনোদ চন্না বর্তমানে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় সেলিব্রিটি প্রশিক্ষক এবং তিনিই মুকেশ আম্বানি ও নীতা আম্বানির ছেলে অনন্ত আম্বানির ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক ছিলেন।
২০১৬ সালে, বিনোদ চন্নার তৈরি ডায়েট এবং ওয়ার্কআউট পরিকল্পনার কারণেই অনন্ত আম্বানি মাত্র ১৮ মাসে ১০৮ কেজি ওজন কমিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু সেলিব্রিটি ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক বিনোদ চন্না নিজে একসময়, আগেই বলেছি, চর্মসার ছিলেন। এই চেহারার কারণে প্রায়ই বন্ধুবান্ধব পরিচিত মানুষরা তাঁকে উত্যক্তও করতেন। পরবর্তীকালে বিনোদ চন্না জানিয়েছেন, অপুষ্টিতে ভুগছিলেন তিনি। দীর্ঘ দীর্ঘকাল খাবার না খেয়েই থাকতেন বিনোদ।
বিনোদ যখন জীবনে নানা ধরনের জীবিকাতে ঢুকে পড়ছেন, বুঝতেই পারছেন না ঠিক কী করলে তিনি ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন, সেই সময় একদিন তিনি বুঝলেন, তাঁকে নিজের শরীরের উপরই লক্ষ্য রাখতে হবে। জিমে ভর্তি হলেন বিনোদ এবং সব ধরনের কাজ থেকে বিশ্রাম নিলেন। তারপর? আমেরিকান স্পোর্টস অ্যান্ড ফিটনেস অ্যাসোসিয়েশন থেকে ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে পেশাদার বডি বিল্ডিংয়ের অভিজ্ঞতা এবং কোচিং করেছেন বিনোদ। বাকিটা ইতিহাস।
আরও পড়ুন- এবার কার হাতে রিলায়েন্স সাম্রাজ্যের ভবিষ্যৎ? বছরশেষে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন মুকেশ আম্বানি
অনন্ত আম্বানি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, বিনোদ চন্না একবার বিজনেস ইনসাইডারের একটি সাক্ষাত্কারে জানিয়েছিলেন, অনন্ত আম্বানি ওজন কমানোর লক্ষ্যে একেবারে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। বিনোদ চন্নার মতে, অনন্ত আম্বানির পক্ষে তার এই ডায়েট বা ব্যায়াম কোনওটাই মেনে চলা সহজ ছিল না। অতিরিক্ত খাওয়াতে অভ্যস্ত ছিলেন অনন্ত। মাত্রাতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড পছন্দ করতেন মুকেশ আম্বানির এই পুত্র। বিনোদ চন্না অনন্ত আম্বানির জন্য এক বিশেষ ডায়েট তৈরি করে দেন। প্রোটিন, কম কার্বোহাইড্রেড এবং ফাইবারে ভরা ওই ডায়েট ছাড়া অন্য কিচ্ছু খেতে পারতেন না অনন্ত।
আরও পড়ুন- ভোর পাঁচটায় ওঠা থেকে রাতের ঘুম, যে রুটিনে লুকিয়ে মুকেশ আম্বানির সাফল্যের রহস্য
২০১৬ সালে, অনন্ত আম্বানির ১৮ মাসে প্রায় ১০৮ কেজি ওজন কমানোর বিষয়টি সেইসময় বেশ সাড়া ফেলে। নীতা আম্বানি এবং অনন্ত আম্বানি লস অ্যাঞ্জেলেসের একটি হাসপাতালে ডাক্তারদের সঙ্গে পরামর্শ করে অনন্তের জন্য ডায়েট এবং ওয়ার্কআউট রুটিন তৈরি করতে বলেন। ওয়ার্কআউট পদ্ধতি অনুসারে, অনন্ত আম্বানি প্রতিদিন ৫-৬ ঘণ্টা ব্যায়াম করতেন, ২১ কিলোমিটার হাঁটতেন এবং তারপরে যোগ, ওজন প্রশিক্ষণ এবং অন্যান্য প্রশিক্ষণও নিতেন। প্রচুর শাকসবজি এবং ফল সহ সাধারণ খাবার খেতে হতো তাঁকে।
শুধু অনন্ত আম্বানি নয়, বিনোদ চন্না নীতা আম্বানি, কুমার মঙ্গলম বিড়লা, অনন্যা বিড়লার মতো ধনকুবেরদেরও খাওয়া দাওয়া ব্যায়ামের সবটুকু সামলান। জন আব্রাহাম, শিল্পা শেঠি কুন্দ্রা, হর্ষবর্ধন রানে, বিবেক ওবেরয়, অর্জুন রামপালের মতো বলিউড সেলিব্রিটিদের ব্যক্তিগত প্রশিক্ষকও তিনি। আর এই সব তারকা, শিল্পপতিদের সুস্থ রাখতে কত পারিশ্রমিক নেন তিনি? ১২টি সেশনের জন্য ১.৫ লক্ষ টাকা! বাড়িতে ব্যক্তিগত প্রশিক্ষণের জন্য তিনি প্রায় ৩.৫ - ৫ লক্ষ টাকা নেন তিনি৷