আসছে কোভিডের চেয়েও ভয়ঙ্কর মহামারী! যে ঝুঁকির কথা শোনালেন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী
Next pandemic: নিউ নর্মালের অভ্যাসের ফাঁকে উঁকি দিয়েছে পুরনো জীবন। এর মধ্যে ফের আরও একটি মহামারীর ভবিষ্যদ্বাণী করলেন বিজ্ঞানীরা। হাতে খুব বেশি সময় নেই।
ইতিহাস সাক্ষী প্রতি একশো বছর পর পৃথিবীতে ফিরে ফিরে এসেছে মহামারী। বছর চারেক আগে কোভিড অতিমারি কার্যত অচল করে দিয়েছিল বিশ্বকে। করোনা ভাইরাসের তিন-তিনটি ঢেউয়ের ধাক্কায় অজস্র মানুষের মৃত্য, স্বজনবিয়োগ থেকে শুরু করে চাকরিহীনতার মুখোমুখি হয়েছে দুনিয়া। মানুষ পরিচিত হয়েছে লকডাউন নামক নয়া এক শব্দের সঙ্গে। ব্যবহার করতে শিখেছে মাস্ক, পকেটে রাখতে শিখেছে স্যানিটাইজার। তার সঙ্গে স্বাস্থ্যব্যবস্থার নগ্ন অবস্থাটাও পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে সকলের চোখের সামনে। সেই ভয়ঙ্কর অবস্থা থেকে সবে সাধারণ জীবনে ফিরেছে মানুষ। নিউ নর্মালের অভ্যাসের ফাঁকে উঁকি দিয়েছে পুরনো জীবন। এর মধ্যে ফের আরও একটি মহামারীর ভবিষ্যদ্বাণী করলেন বিজ্ঞানীরা। হাতে খুব বেশি সময় নেই। সরকার ও প্রশাসনকে প্রস্তুত থাকার কথাও বলছেন বিজ্ঞানীমহল।
১৮১৭ থেকে ১৮২৪-র মধ্যে হানা দিয়েছিল কলেরা। তাতে ১০ লক্ষ মানুষের প্রাণ যায়। ১৯১৮-র দিকে স্প্যানিশ ফ্লুতে বিশ্বজুড়ে ৪ থেকে ৫ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। ২০২০ সালে কোভিডের ধাক্কা প্রাণ কেড়েছে ৭ থেকে ৮ কোটি মানুষের। এই ধারা যে আঠেরো শতাব্দী থেকে শুরু হয়েছে তা কিন্তু নয়। এর আগেও মহামারী ছড়িয়েছে। তাতে প্রাণও গিয়েছে অসংখ্য মানুষের। একশো বছরের হিসেব মেলালে পরের শতাব্দীতে আসার কথা পরবর্তী মহামারীর। কিন্তু অতীতেও কিন্তু তেমনটা আসলে হয়নি। এর মধ্যেই আরও ছোট ছোট নানা অসুখ, মহামারীর প্রাদুর্ভাব হয়েছে আগেও। আর করোনার পরে ফের ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে আরও এক মহামারীর ফাঁড়া। তেমনটাই সতর্ক করছে ইউরোপের এক দল বিজ্ঞানী।
আরও পড়ুন: সকলে নিয়েছেন এই কোভিড ভ্যাকসিন! ভয়াবহ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কথা এতদিনে স্বীকার করল সংস্থা
তাঁরা জানিয়েছেন, পরবর্তী যে মহামারী হানা দিতে চলেছে বিশ্ব জুড়ে, তাকে এড়ানো মোটেও সহজ হবে না। ব্রিটিশ সরকারের প্রাক্তন প্রধান বিজ্ঞান উপদেষ্টা স্যার প্যাট্রিক ভ্যালেন্স এই নিয়ে এক কড়া নির্দেশিকা জারি করেছেন। একই সঙ্গে কোভিড ১৯-র সময় যে যে সঙ্কটের সম্মুখীন হতে হয়েছিল বিশ্ববাসীকে, সেই সমস্ত ঘটনা যাতে পুনর্বার না ঘটে, সে জন্য সতর্ক হওয়ার কথাও বলেছেন তিনি।
আজ থেকে নয়, ২০২১ সাল থেকেই তিনি আসন্ন মহামারী নিয়ে সতর্ক করছেন বিশ্বকে। জি-৭ নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে সাবধানবাণীও পৌঁছে দিতে চেয়েছেন তিনি। তাঁর মতে, আসন্ন বিপদগুলিকে প্রাথমিক ভাবে শনাক্ত করাটা সবচেয়ে জরুরি। সম্প্রতি কোভিড-১৯ ভাইরাসের ভ্যাকসিনের ক্ষতিকারক দিকগুলো নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। বহু ক্ষেত্রেই ঠিকঠাক পরীক্ষার আগেই সেই ভ্যাকসিন কার্যকর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। কোভিশিল্ড ভ্যাকসিনের বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা সামনে এসেছে ইতিমধ্য়াই। পরবর্তী ক্ষেত্রে যাতে এমন কোনও ভুল বা ত্রুটি না হয়, তা নিয়ে সতর্ক করেছেন ব্রিটিশ এই বিজ্ঞানী।
প্যাট্রিক জানিয়েছেন, ২০২১ সালে জি-৭ দেশগুলি যে যে প্রস্তুতির কথা বলেছিল, সেই সব তারা ইতিমধ্যেই ভুলে গিয়েছেন। তাঁর কথায়, কাল যুদ্ধ লাগবেই, এই ভেবে সমস্ত দেশে সেনাবাহিনী রাখা হয় না। রাখা হয়, প্রস্তুতির কথা ভেবে। ঠিক সে ভাবেই মহামারী বা অতিমারির সময় লড়ার জন্য আমাদের এবং আমাদের সরকারের প্রস্তুত থাকা প্রয়োজন। বহু দিন ধরেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জোর দিয়ে আসছে প্যানডেমিক চুক্তি নিয়ে। তবে এখনও তেমন কিছু সম্পাদিত হয়নি। প্যাট্রিক মনে করেন, এটি একটি জরুরি পদক্ষেপ হতে চলেছে।
আরও পড়ুন:করোনার পর নতুন মহামারীর আশঙ্কা বিশ্ব জুড়ে! কেন এত ভয়ঙ্কর ‘জম্বি ডিয়ার’ রোগ?
তিনি এ-ও জানান, শুধু ব্রিটেনই নয়, বিভিন্ন দেশের সরকারই এর জন্য যথেষ্ট প্রস্তুত বলে মনে হয় না। জি৭ এবং জি২০ কর্মসূচী থেকে যদি এমন একটা জরুরি ইস্যু সরিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে কোভিডের মতো বা তার থেকেও বড় অতিমারির ঢেউ আছড়ে পড়া তার বিপর্যয় এড়ানো সহজ হবে না বলেই মনে করছেন তিনি। ফের একই রকম পরিস্থিতির মুখে পড়বে গোটা বিশ্ব। যেখানে মৃত্যু, স্বজন বিয়োগের যন্ত্রণা ছাড়া কিছুই বাঁচবে না বিশ্ববাসীর হাতে।