অযোধ্যায় মন্দিরের ছাদ ফুটো! বৃষ্টিতে ভিজতে হবে রামলালাকে?
Ayodhya Ram Mandir Leakage: পাঁচ মাসের মধ্যেই 'বিশ্ববিখ্যাত' মন্দিরের ছাদ ফুটো বৃষ্টিতে! কোনও নিয়ম না মেনেই, তাড়াহুড়ো করে এই মন্দির গড়া হলো কেবল ভোটের কথাই মাথায় রেখে?
নির্বাচনের আগের রাম আর পরের রাম আলাদা। নির্বাচনের আগে রাম মন্দিরই ছিল বিজেপির অস্ত্র, এখন সেই মন্দিরে রামের কী অবস্থা তা নিয়ে আর বিজেপি বিশেষ চিন্তিত নয়। অযোধ্যা বিজেপিকে ভোট দেয়নি, বিজেপির মন্দিরমুখী লক্ষ্য এখন পুরীর জগন্নাথধাম। এদিকে রামলালা ভিজছেন বৃষ্টিতে, 'প্রধানসেবক' মোদি নীরব! মন্দির এখন জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। বর্ষার প্রথম বৃষ্টিতেই গর্ভগৃহের ছাদ থেকে জল চুঁইয়ে বেরোচ্ছে। রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস বলছেন, মন্দির নির্মাণে অবহেলা হয়েছে। মন্দির চত্বর থেকে বৃষ্টির জল নিষ্কাশনের কোনও ব্যবস্থাই নেই। অথচ কোটি কোটি টাকা খরচ করে রাম মন্দিরের উদ্বোধন হয়েছে, অসম্পূর্ণ মন্দিরেই শিশু রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছেন মোদি। সবটাই কি আরেক দুর্নীতি?
ছাদ থেকে জল পড়ার ঘটনা জানার পরে মন্দির নির্মাণ কমিটির চেয়ারম্যান নৃপেন্দ্র মিশ্র মন্দিরে পৌঁছন। তিনি ছাদ মেরামত করে জলরোধী করার নির্দেশও দিয়েছেন। কিন্তু এত বড় মন্দির, এত পরিকল্পনা করে তৈরি তীর্থক্ষেত্র, সেখানে সামান্য জল বেরনোর ব্যবস্থা নেই? নৃপেন্দ্র মিশ্র বলছেন, মন্দিরের একতলায় এখনও কাজ চলছে এবং এই বছরের জুলাইয়ের মধ্যে শেষ সেই কাজ হবে। ডিসেম্বরের মধ্যে মন্দিরের নির্মাণ কাজ শেষ হবে সম্পূর্ণ।
আরও পড়ুন- রাম মন্দির উদ্বোধন নিয়ে মোদির পাশে নেই বহু হিন্দুত্ববাদীই! কেন?
অন্যদিকে আচার্য সত্যেন্দ্র দাস বলছেন, গত শনিবার মধ্যরাতে প্রথম ভারী বর্ষণ হয় অযোধ্যায়। বৃষ্টিতে মন্দিরের গর্ভগৃহের ছাদ ফুটো হয়ে যায়। রামলালার মূর্তির সামনে পুরোহিত যেখানে বসেন এবং ভিআইপি দর্শনের জন্য যেখানে মানুষ আসেন, সেখানে সরাসরি ছাদ থেকে বৃষ্টির জল পড়ছিল। সারা দেশের সেরা ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে এই রাম মন্দির তৈরি করানো হয়েছে। ২২ জানুয়ারি সেই মন্দির উদ্বোধনও করা হয় কিন্তু পাঁচ মাসের মধ্যেই 'বিশ্ববিখ্যাত' মন্দিরের ছাদ ফুটো হয়ে যাবে বৃষ্টিতে! তাহলে কি কোনও নিয়ম না মেনেই, তাড়াহুড়ো করে এই মন্দির গড়া হলো কেবল ভোটের কথা মাথায় রেখেই?
গত শনিবার রাতের বৃষ্টিতে রামপথ সড়ক ও এর আশপাশের জায়গায় জল জমে যায়। নর্দমার জল স্থানীয় বাড়িঘরে ঢুকে যায়। অযোধ্যার রামপথ এবং অন্যান্য নবনির্মিত বেশ কিছু রাস্তা জলে ডুবে যায়। জলওয়ানপুরা থেকে হনুমানগড়ি ভক্তিপথ এবং তেধি বাজার থেকে ভেতরের অনেকটা জায়গা পর্যন্ত জল দাঁড়িয়ে যায়। অযোধ্যায় তাহলে কী উন্নয়ন হলো রাম মন্দিরের পর?
আরও পড়ুন- চরম ব্যর্থ রাম মন্দিরের ম্যাজিক! কেন একে একে বন্ধ হচ্ছে অযোধ্যার বিমান?
বৃষ্টির সময় রামপথের গলিতে, আশেপাশের ঘরে নর্দমার জল ঢুকে পড়া নিয়ে কংগ্রেস ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির বিরুদ্ধে মন্দির নির্মাণ এবং মন্দির শহরে নাগরিক সুবিধা নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছে।
উত্তরপ্রদেশ কংগ্রেসের প্রধান অজয় রাই বলছেন, শহিদদের কফিন হোক বা ঈশ্বরের মন্দির, সবই বিজেপির জন্য দুর্নীতির সুযোগ হয়ে উঠেছে। দেশে বিশ্বাস এবং পবিত্রতার প্রতীকগুলি বিজেপির কাছে লুটের সুযোগ মাত্র। অজয় রাই আরও বলছেন, "প্রধান পুরোহিত সত্যেন্দ্র দাসের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট হয়ে গেছে যে, কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাম মন্দিরের গর্ভগৃহে প্রথম বৃষ্টিতেই জল পড়ছে এবং সঠিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা নেই। শুধু তাই নয়, অযোধ্যার উন্নয়নের ঢোল পিটিয়ে বিজেপির ৬২৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রামপথও অনেক জায়গায় ভেঙে গেছে।" অজয় রাইয়ের অভিযোগ, বিজেপি অযোধ্যাকে শুধু নির্বাচনী সুবিধা পাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো করে দুর্বল মানের নির্মাণকার্যের মাধ্যমে দুর্নীতির কেন্দ্রস্থলে পরিণত করেছে।