মোদির প্রাণ প্রতিষ্ঠা ব্যর্থ! আবার উদ্বোধন হতে চলেছে রামমন্দিরের?
Ayodhya Ram Mandir BJP Vote: ২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় তৈরি হওয়া অসম্পূর্ণ রাম মন্দিরেই রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন নরেন্দ্র মোদি।
রাম বা রামরাজ্য, কেউই মুখরক্ষা করল না। অযোধ্যায় রামমন্দির যেখানে, সেই ফৈজাবাদ আসনেই হেরে গিয়েছে বিজেপি। এরপর থেকে স্থানীয় বিজেপি অযোধ্যাবাসীকে সামাজিক মাধ্যমে প্রবল গালিগালাজ করলেও, রামমন্দিরের পুরোহিত বা শঙ্করাচার্যরা বলছেন একেবারেই অন্য কথা। সম্প্রতিই, লোকসভার ফল ঘোষণার পর দেশ জুড়ে বিজেপির খারাপ ফলের প্রেক্ষিতে রামমন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস বলেন, যারা অযোধ্যার মানুষকে অপমান করছে এবং নির্বাচনের ফলাফলের জন্য তাদের দোষারোপ করছে তারা তাদের 'মূর্খতা'ই প্রকাশ করছে। এবার খানিক একই কথা বলছেন শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী।
অযোধ্যায় বিজেপির হারের পর শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী আবারও অযোধ্যায় রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠাকে রাজনৈতিক কর্মসূচি বলেই অভিহিত করেছেন। অভিমুক্তেশ্বরানন্দর কথা অনুযায়ী, মন্দিরের কাজ এখনও শেষ হয়নি। একটি রাজনৈতিক দল একটি অসম্পূর্ণ মন্দিরে রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠার কাজ করেছে। সাধারণত প্রাণ প্রতিষ্ঠা মন্দির সম্পূর্ণ তৈরি হওয়ার পরেই হয়। যারা অযোধ্যাবাসীদের বিজেপিকে হারানোর জন্য দায়ী করে অপমান করছেন, প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস তাঁদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন, “তারা স্পষ্টতই ভগবান রামের ভক্তি বোঝে না। এই ধরনের লোকেরা, যারা রামকে শুধুমাত্র নির্বাচনী ইস্যু হিসাবে দেখেন তারা তুচ্ছ এবং ঘৃণ্য।”
আরও পড়ুন- অযোধ্যা কেন বিজেপিকে তাড়াল? কী বলছেন রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত?
শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ বলছেন, "মন্দিরটি পুরোপুরি তৈরি হতে প্রায় আড়াই থেকে তিন বছর সময় লাগবে। সনাতন ধর্মের ভক্ত এবং রাম ভক্তদের আকাঙ্খা এবং ঈশ্বরের কৃপায় যখন মন্দিরটি নির্মিত হবে, তখনই অভিষেক অনুষ্ঠান শুরু হবে।" একবার উদ্বোধন হয়ে যাওয়ার পরে তবে আবার নতুন করে হবে উদ্বোধন? প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর আবার মন্দির উদ্বোধনের অর্থই বা কী!
২০২৪ সালের ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় তৈরি হওয়া অসম্পূর্ণ রাম মন্দিরেই রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেন নরেন্দ্র মোদি। এখন, প্রায় পাঁচ মাস পর রাম মন্দিরের পবিত্রতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। উত্তরাখণ্ডের মঠের শঙ্করাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ এর আগে রাম মন্দিরের উদ্বোধনের সময় বলেছিলেন, রাম মন্দির নির্মাণ কোনওভাবেই সনাতন ধর্ম বা হিন্দু ধর্মের 'বিজয়' নয়। বিজেপি যা দাবি করছে তা ঠিক নয়। অভিমুক্তেশ্বরানন্দ তখন বলেন, "অযোধ্যায় আগেও রামমন্দির ছিল। এই মন্দিরটি ধর্মকে 'উপহার' দেওয়া নয় বা ধর্মের 'জয়' নয়।" রাম মন্দিরের উদ্বোধনে নয়, অভিমুক্তেশ্বরানন্দ ঘোষণা করেছিলেন, "যখন দেশে গোহত্যা বন্ধ হবে, আমি তখন উদযাপন করব।"
আরও পড়ুন- চরম ব্যর্থ রাম মন্দিরের ম্যাজিক! কেন একে একে বন্ধ হচ্ছে অযোধ্যার বিমান?
অযোধ্যায় সমাজবাদী পার্টির দলিত নেতা জয়ী হয়েছেন বিজেপিকে হারিয়ে। রামের নামে ভোট করেও সফল হলো না বিজেপি। অযোধ্যায় মন্দির গড়ে উন্নয়ন তো দূর অস্ত, ভক্তের ঢলও ক্রমেই কমে আসছে সেখানে। সেই আঁচ পেতেই বিজেপির নতুন 'রাজনৈতিক বন্ধু' এখন জগন্নাথ। ওড়িশায় সরকার গড়েছে বিজেপি, ২৪ বছরের নবীন পট্টনায়েকের সরকার ফেলে দিয়ে। ১৪৭ টি বিধানসভার মধ্যে ৭৮ টিই জিতেছে বিজেপি। অন্যদিকে ২১ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২০ টিই বিজেপির দখলে। মদির তাঁর জয়ের পরে ভাষণ শুরুই করেন জয় জগন্নাথ বলে। জয় শ্রী রাম তবে অতীত? রাম মন্দিরের নামে বিপুর অর্থ ব্যয়, বিপুল প্রচার, সাধারণ মানুষের বসতি ভাঙা, সবই ছিল ভোটের খেল! যেখানে রামের প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয় জনতার ঘর ভেঙে। সেই মন্দিরে সত্যিই কি দেবতা থাকেন?