গোটা শাড়ির গন্ধ: ঋভু চট্টোপাধ্যায়
Bengali Short Story: মদনদাকেও দেখেছে ঠিক কীভাবে ঝোপ বুঝে নিজেদের কথাগুলো বলতে হয়, ‘বেশি মাইনে নয়, কিছু টাকা দিলে ভালো হয়, আমাদের তো এই লিখেই সংসার।’
ফেলু বিড়িটা একবার লম্বা করে টেনে জানলার দিকে তাকিয়ে চুপ করে বসে থাকে। একটু আগেই ওদিক থেকে মদনদা ধ্যাতানি দিয়ে উঠেছিল, ‘তুই খুব বকিস, একেই সকাল থেকে মটকা গরম।’
ফেলু ভয় পেয়ে একটা বিড়িও খুঁজতে পারেনি। ভোরের দিকে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছিল। সেই যে কাল রাতে একটা যা ঢুকল, সেটাই শেষ, তাও একটা ছোট চাদর ছাড়া আর কিছু পায়নি। ফেলু এক্কেবারে চুল্লিঘরের মুখ পর্যন্ত গিয়েছিল, অনেক সময় গাড়ি থেকে লাশ নামানোর লোকও থাকে না, একটু ধরে নামিয়ে দিলে বা চুল্লিঘর পর্যন্ত পৌঁছে দিলে কিছু বখশিস পাওয়া যায়। এদিকে কিছু দিলে মদনদাদের চোখ চলে যায়, জিজ্ঞেস করে, ‘কত ম্যানেজ করলি?’ ফেলু মুখ ফুটে বলতে পারে না, ‘তোমাদের কী, তোমরাও তো সরকারি লোক হয়ে পার্টির কাছে কাঁদুনি গেয়ে দুশো-পাঁচশো ঝেড়ে নাও।’ তাও মদনদা থাকলে চলে যায়, কিন্তু সুকুমারদার এক্কেবারে শকুনের চোখ। কিছু তো বলা যায় না, এই অসময়ে যা আসছে, সবই তো এই জায়গার কল্যাণে।
-মদনদা, কি খবর গো, বেলা বারোটা তো হতে যাচ্ছে, এখনও তো একটাও এল না।
–তোর এই কথাগুলো শুনতে পেলে পেঁদিয়ে তোকেই এখান ঢুকিয়ে দেবে। লোকে বলে বাঁচুন, আর তুই শালা শুধু মানুষের মৃত্যুকামনা করিস।
-আমি একাই করি, তুমি করো না, সুকুমারদা, দানুবামুন, চুল্লিঘরের গণা আর মেঘা, সবাই করে। আমি বলি, তোমরা বলো না। এই তো গেল সপ্তাহে, রাতের দিকে একটা কমবয়সি বউ এল, ওদের কাছে জল নেওয়ার দুটো পেতলের ঘটি ছিল, বামুন সমানে আমাকে বলে যাচ্ছিল, ‘কী চকচকে দ্যাখ!’ তাও পার্টিটা বুড়োকে তিনশোএকান্ন টাকা দিল।
–তোকেও তো দিয়েছিল।
–আমি লাশটাকে কাঁধে করে চুল্লিঘর পর্যন্ত নিয়ে গেলাম, কেউ ছিল না তো।
আরও পড়ুন: নসু মোড়লের বাদা: হামিরউদ্দিন মিদ্যা
ফেলুর এই বিষয়গুলো খুব অদ্ভুত লাগে। গাঁয়ে থাকতে বাবাকে দেখেছে। ডাকলেই রাতের অন্ধকারেও বেরিয়ে পড়ত। কোনও দিন কেউ টাকা দিয়েছিল বলে তো শোনেনি। এটা মনে হয় শহরের ব্যাপার। অবশ্য তাতে ফেলুর কী, টাকা নিয়ে কথা, জানতে পারলে বাড়ি থেকে কাঁধে করে নিয়ে আসবে।
–ভালো পয়সাওয়ালা লোক ছিল, একবার বলতেই পাঁচশো টাকা দিয়ে দিল। মদনদা বলে।
-মন ভালো নয়, শ্মশানের জামাকাপড়গুলো নদীতে ডুবিয়ে বাড়ি নিয়ে গেল। আমাকেই বলল, ‘এই দিকের ঘাটটা ভাঙা, তুমি এই প্যান্ট-শার্টটা জলে ডুবিয়ে প্যাকেটে ভরে দাও।’ হয়তো ছেলেটার মা কিনে দিয়েছিল, তা হলেও। ওদের সঙ্গে একটা মোটামতো বুড়ো এসেছিল, ও ব্যাটা ফেলে দেওয়ার জন্য বলছিল, ছেলেটাই শুনল না, নিয়ে চলে গেল। লোকগুলো বোঝে না, কত টাকা কতদিকে খরচা হয়ে যাচ্ছে, আর এই সামান্য প্যান্ট-শার্ট।
–তোর তো জিভে লাল পড়ছিল।
-সে আর বলতে, গঙ্গার জলে ডোবানোর সময় এক্কেবারে নিশপিশ করছিল। তাও একটা চাদর ঝেঁপেছি।
–হ্যাঁরে ফেলু, তোর পাপের ভয় লাগে না ?
ফেলু মদনাদার কথাগুলো শুনে একটু থমকে যায়, বলে, ‘পেটের কি পাপের ভয় থাকে মদনদা? তাছাড়া আমি তো কোনও দোষ করি না, যে কাপড়জামাগুলো সবাই শ্মশানে ফেলে দেয়, সেগুলোই আমি কুড়িয়ে নিয়ে যাই। কত মানুষ এই জামাকাপড় পরে তুমি জানো? বাদ দাও, কিছু খেয়ে আসিগে! হেভি খিদে লেগেছে।’
–আজ পাঁচমাথার মোড়ের কালীবাড়িতে খিচুড়ি খাওয়াবে।
–আজ! কেন?
–তিথি পুজো মনে হয়, আমাকে দানুবামুন জানাল।
-তাহলে বেলার দিকে যাব।
ফেলু কীভাবে যে এই শ্মশানের জামাকাপড়ের ব্যবসাতে এল, তার কথা খুব পুরনো। গাঁয়ে থাকতেই মা একজনের সঙ্গে পালিয়ে গেল, ফেলু তখন খুব ছোট, তারপর বাবার কাছে থাকত। বাবা চাষের কাজ করত আর লোকের ফাইফরমাশ খাটত। গাঁয়ের কেউ মরলে বাবার ডাক পড়ত, তিন-চারদিন মরা বাড়িতে ভোজ থাকত। ফেলুর এইসব কথা স্পষ্ট মনে আছে। বাবা শহর থেকে ফেরার সময় ধানের গাড়ির ধাক্কায় একটা নদীতে সেই যে পড়ল, লাশটাও কেউ খুঁজে পেল না। কয়েক বছর পরে ফেলু একটা মরার গাড়িতেই গাঁ ছাড়ে। গাড়ি এসে নামে একটা শ্মশানে, সেখানেই হঠাৎ করে আলাপ হয়ে যায় কাতুকাকার সঙ্গে। নামটা অবশ্য পরে পরে জেনেছিল। শ্মশানে যখন মরা পুড়ছিল, কাতুকাকা তখন এদিক-ওদিক থেকে ফেলে দেওয়া জামাকাপড় কুড়িয়ে নিজের বস্তাতে জমা করছিল।ফেলু বেশ কিছুক্ষণ সেইসব হাঁ করে দেখছিল। সেই সময়েই মরার গাড়িটা তাকে না নিয়ে পালায়। ফেলু থেকে যায় কাতুকাকার সঙ্গে।
কাতুকাকার সংসার ছিল না, বিভিন্ন শ্মশানে ফেলে দেওয়া জামাকাপড় লেপ, তোষক, বালিশ কুড়িয়ে বড় বড় বস্তাতে জমা রাখত। প্রতি সপ্তাহে কামরুল চাচা নামে একজন একটা বড় গাড়ি নিয়ে আসত। ফেলু সেই লোকটাকে প্রথম প্রথম খুব ভয় পেত, ঠিক যেমন প্রথম দিকে বস্তার ভেতর থাকা জামাকাপড়ের দিকে তাকাতে ভয় লাগত। মনে হতো, এরা বুঝি হাত নেড়ে নেড়ে ডাকছে। কাতুকাকা কথাগুলো শুনে হেসে উঠত, ‘দুর খ্যাপা, মরা মানুষ কি কোনও দিন ফিরে আসে, এরাই তো আমাদের বাঁচিয়ে রাখে।’
বড় হতে ফেলু বুঝেছিল কামরুল চাচা এই জামাকাপড়গুলো নিয়ে গিয়ে ভালো করে কাচে, ইস্ত্রি করে, ছোট-বড় সেলাই থাকলে করে, তারপর আবার কাচে। এই জামাকাপড়ই পরে ফুটের দোকানে, ছোট ছোট কারখানার গেটে বিক্রি হয়। কম দাম, লোকজন কেনে। কামরুল চাচাদের ব্যবসা বাড়ে।
ফেলু কাতুকাকার সঙ্গে কামরুল চাচার আলাপ শোনে। ‘যত কারখানা বন্ধ হবে, আমাদের তত সুবিধা, লোকে এই সব জামা-প্যান্ট পরবে।’
কামরুল চাচার মুখেই শুনেছে, ‘এইসব জামা-প্যান্ট, শাড়ি বড় বড় দোকানেও বিক্রি হয়, লোকে দিব্যি কেনে।’
কাতুকাকা এমনিতে ভালো, তবে পেটে মদ পড়লে কেমন যেন পাল্টে যায়, বাখান করে, মারতে আসে। ফেলুও এখন মদ খায়, তবে ইদানীং অনেক কমিয়ে দিয়েছে। মুখে মদের গন্ধ পেলে সোহাগী রেগে যায়, মুখ ফিরিয়ে নেয়, আদর করতে দেয় না। ফেলুও রেগে উঠে বলে, ‘এমন করছিস যেন তোর ঘরে সব বোষ্টম আসে, মদ-মাংস ছোঁয় না।’
সোহাগী তখনই ফেলুর সঙ্গে সোহাগ করে বলে, ‘তুমি কি ওদের দলে?’
তাও রাত ছাড়া সোহাগী ঘরে আসতে মানা করে, বলে, ‘কাস্টমার আছে।’
ফেলু যে সোহাগীর আর পাঁচটা কাস্টমারের মতো নয়, সেটা ভেবে একটু বল পায়, মনটা কেমন যেন বাগান বাগান হয়ে ওঠে। কয়েক দিনের মধ্যেই সোহাগীর জন্য একটা নতুন শাড়ি নিয়ে আসে। তাও ফেলু সোহাগীকে নিজের ব্যবসার কথা বলে না। তবে একদিন নতুন শাড়িতে ধূপের গন্ধ পেয়ে সোহাগী কেমন যেন সন্দেহের চোখে তাকায়, জিজ্ঞেস করে, ‘এত ধূপের গন্ধ কেন, নতুন গন্ধটাই কেমন যেন উবে গেছে।’
ফেলুর চোখ দুটো বড় হয়ে যায়। কোনও রকমে সামলে নিয়ে বলে, ‘দোকানে ধূপধুনো দিচ্ছিল।’ সোহাগীর জন্য কিছু আনলে ফেলু আগে নিজের বাড়িতে কয়েক দিন রেখে তারপর দিত।
লাশে নতুন শাড়ি, জামাকাপড়, চাদর চাপানো থাকলে ফেলুর খুব মজা লাগে। ও তখন আর পার্টির পিছন ছাড়ে না। সেই চুল্লিঘরে ওঠার আগে পর্যন্ত তাদের সঙ্গে সঙ্গে যায়, সুযোগ বুঝে বলে, ‘এগুলো আমি নেব? মানে শ্মশানের জিনিস, একটা পাওনা থাকে তো।’
ফেলু জানে, সেই সময় এদের মনের অবস্থা ভালো থাকে না। এটা কাতুকাকা শিখিয়েছে, পরে মদনদাকেও দেখেছে ঠিক কীভাবে ঝোপ বুঝে নিজেদের কথাগুলো বলতে হয়, ‘বেশি মাইনে নয়, কিছু টাকা দিলে ভালো হয়, আমাদের তো এই লিখেই সংসার।’
আশপাশে এই একটাই চুল্লি, ভিড় থাকে, তাও ফেলুর কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা মনে হয়। বড় শহরের শ্মশানে খুব ফের, মারামারিও হয়ে যায়। কাতুকাকা এই ফেরের জন্যই এইখানে চলে এসেছিল, ঠিক এইখানে বললে ভুল হবে, গঙ্গার ওপারে, ওদিকে চুল্লিতে পোড়াতে কেমন যেন চুলকানি আছে। অনেকেই নিজের নিজের গাঁয়ের শ্মশানেই পুড়িয়ে দেয়, ফেলু তাও ওদিকে বেশ কয়েক বছর ছিল। বড় হতে এখানেই বাসা বেঁধেছে। একটা ঘর থাকলেও দিনরাত শ্মশানেই পড়ে থাকে, খাওয়া, হাগা-মোতা সব এখানেই।
অনেকদিন পরে ফেলু আজ চারটে কচুরি খেল। শঙ্করের দোকানের কচুরি আর আলুর তরকারি মুখে লেগে থাকে। কিন্তু শ্মশান ছেড়ে অনেকটা আসতে হয়, সেই জন্যই সবদিন আসতে পারে না। তাও আবার কয়েক দিন আগে যেভাবে মড়ক লেগেছিল, তাতে শ্বাস নেওয়ার পর্যন্ত সময় পায়নি। আজকের দিনটাই কেমন যেন পানসে। ফেলু শ্মশানের সামনে বঙ্কার চায়ের দোকানে চা খাওয়ার জন্য দাঁড়াতেই বঙ্কা বলে ওঠে, ‘একটা গাড়ি ঢুকল, ওটা দেখে এসে খাবে, না কি এখনই…?'
-কতক্ষণ আগে গেল?
–মিনিট দশ।
-না দেরি হয়ে যাবে, আমি চুল্লিতে ঢোকানোর পর আসব।
কথাগুলো বলেই ফেলু তাড়াতাড়ি করে শ্মশানে পৌঁছয়। ততক্ষণে ওদের লোক মদনদার জানলার ধারে সবকিছু লেখালিখি করাতে আরম্ভ করে দিয়েছে।লোকজন খুব বেশি নেই। গাড়িটা ফুলের মালা দিয়ে সাজানো, দু’দিকে রজনীগন্ধার স্টিক লাগানো। ফেলু কাচের গাড়ির কাছে দাঁড়িয়ে লাশটাকে একবার দেখে নেয়। ওপরে একটা ভালো শাড়ি চাপানো আছে, মাথার নিচে বালিশ, একটা চাদরও পাতা আছে। তার মানে পয়সা আছে। ফেলু এক-পা, এক-পা করে মদনদার জানলার কাছে যায়। ততক্ষণে ডাক্তারি সার্টিফিকেট দেখে নাম ধাম, গাড়ির নম্বর সব লেখা হয়ে গেছে। মদনদা প্রতিবারের মত এবারেও পার্টিকে নাম-ঠিকানাসহ সবকিছু ভালো করে দেখে নিতে বলে। উল্টোদিকের স্টিলের বেঞ্চে একটা কমবয়সি ছেলে খুব কাঁদছে আর একজন মাঝবয়সি লোক তার কাছে বসে কীসব বোঝাচ্ছে। ফেলু অনুমান করে, যে খুব কাঁদছে ওটা ছেলে, পাশে ওর বাবা। দু'জনের মুখের খুব মিল।দু'জনেরই জামা-প্যান্টগুলো বেশ দামি।
হঠাৎ ফেলুর তার নিজের মায়ের কথা মনে পড়ে যায়।তারপরই মদনদার দর-কষাকষি কানে আসে। সব মিলিয়ে পাঁচজন লোক, সবাই লাশে হাত দেবে না। ফেলু আবার লাশটার কাছে যায়, ভালো করে দেখে, এঁরও বয়স বেশি নয়, খুব সুন্দর দেখতে, মনে হচ্ছে কোন বড়বাড়ির বউ এখন ঘুমোচ্ছে। চোখের সোনালি চশমাটা এখনও খোলেনি। কিন্তু লোকজন এত কম? যাক গে, ভালোই হয়েছে।
দু'জন লোক গাড়ির কাছে এসে ফেলুর দিকে তাকিয়ে স্ট্রেচারটা একটু ধরতে বলে। ফেলু একরকম লাফিয়ে স্ট্রেচারটা টেনে ধরে ধরে মন্দিরের কাছে নিয়ে যায়।তার চোখদুটো গায়ে চাপানো শাড়িটার দিকে চলে যায়।আঙুল লাগিয়ে শাড়িটা ছোঁয়ার চেষ্টা করে, বেশ দামি, এক্কেবারে নতুন মনে হচ্ছে। ফেলু গন্ধটাও খোঁজার চেষ্টা করে। তারপরেই একটা ছক কষে, এটা কাকে দেওয়া ঠিক হবে, কামরুল চাচা নাকি সোহাগী? সোহাগীকে বেশ মানাবে, তাও নখরা করে ধূপের গন্ধ খুঁজবে, কামরুল চাচাকে দিলে ভালো পয়সা পাবে।
দানুবামুনও গন্ধ পেয়ে গেছে, এবার প্রায়শ্চিত্ত করবে, তারপর মুখে আগুন। ওই সময় ফেলু চুল্লিঘরের দরজা থেকে একবার ঘুরে আসে।এই জায়গাটা সবসময় গরম থাকে। তারপর আবার লাশটাকে ধরে ঘরের নিচটাতে শেষবারের মতো নামিয়ে রেখে ছেলেটা কেঁদে ওঠে।ফেলু ওদের একজনের সঙ্গে লাশের সঙ্গে থাকা বালিশ, চাদর ও গায়ে চাপানো শাড়িটার কথা বলে রাখে। সেই মতো লাশটা গণা ও মেঘাদের হাতে তুলে দেওয়ার আগে ফেলু আস্তে আস্তে নতুন শাড়িটা নিতে যায়।ছেলেটা কান্না থামিয়ে চিৎকার করে, ‘ওটা নেবে না, আমি এই এক সপ্তাহ আগে মায়ের জন্য পাঠিয়ে ছিলাম, ওটা মায়ের সঙ্গে পুড়ুক, মায়ের আত্মা শাড়ির আত্মা পরবে।’
ফেলু আচমকা এই চিৎকারে ঘাবড়ে যায়। লাশ ছেড়ে একটু দূরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে পড়ে। গণা ও মেঘাদের চোখে চোখ পড়ে যায়। চোখের সামনে লাশটা ভেতরে ঢোকানোর জন্য তাকে ডাকলেও সে যায় না। ছেলেটা একাই দুদিকটা ধরে, লাশের ওপর নতুন শাড়িটা কেমন যেন উড়তে থাকে। ফেলুর কানে আসে, 'বল হরি, হরিবোল।'