গণনা শুরু হতেই খেই হারাল কংগ্রেস, হরিয়ানাতে তৃতীয় বারেও ফুটতে চলেছে পদ্মই?
Haryana Assembly Election Result 2024: কিন্তু মঙ্গলবার ভোটগণনা শুরু হতেই সব হিসেবে গণ্ডগোল শুরু হয়ে যায়। ইভিএম খুলতেই ক্রমশ এগিয়ে যেতে থাকে গেরুয়া শিবির।
কিছুদিন আগেই হরিয়ানা ও জম্মু-কাশ্মীরে হয়ে গিয়েছে বিধানসভা ভোট। সেই ভোটের ফলপ্রকাশ মঙ্গলবার। হরিয়ানায় নির্বাচনের পর সাতটি বুথ ফেরত সমীক্ষায় কংগ্রেসের এগিয়ে থাকার কথা জানা গেলেও ভোটগণনা শুরু হতেই গোলমাল হয়ে গেল হিসেবে। লোকসভা ভোটের ক্ষেত্রেও দেখা গিয়েছিল, এক্সিট পোলের সঙ্গে আসল ফলাফলের বিস্তর গড়মিল। হরিয়ানার ক্ষেত্রেও হল তেমনটাই। ভোট গণনা শুরু হতেই কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেল বিজেপি। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, ৫১টির বেশি আসনে এগিয়ে গেরুয়া শিবির। কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ৩৮টি আসনে। আইএনএলডি এবং বিএসপি এগিয়ে রয়েছে একটি করে আসনে। অন্যেরা এগিয়ে রয়েছে তিনটি আসনে।
গত ৪ অক্টোবর ছিল বিধানসভা নির্বাচন। এক দফাতেই হরিয়ানার ৯০টি বিধানসভা আসনে ভোট হয়েছে ওই দিন। ভোটগণনার দিন কাছে আসতে না আসতেই একের পর এক এক্সিট পোল প্রকাশিত হতে শুরু করে। সাতটি বুথ ফেরত সমীক্ষাতেই দেখা যায়, হরিয়ানায় কম বেশি ৪৯ থেকে ৬৪টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে পারে কংগ্রেস। কার্যত সেই হিসেবে দশ বছর পর হরিয়ানায় ফের ক্ষমতা দখল করতে চলেছে হাত শিবির। স্বাভাবিক ভাবেই এক্সিট পোলে জয়ের ইঙ্গিত মিলতেই কংগ্রেস কর্মীরা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে। কোনও কোনও জায়গায় শুরু হয়ে যায় উদযাপনও।
আরও পড়ুন:‘এক দেশ-এক ভোট’ নীতি: যুক্তরাষ্ট্র কাঠামো ধ্বংসের দিকে আরও এক ধাপ?
কিন্তু মঙ্গলবার ভোটগণনা শুরু হতেই সব হিসেবে গণ্ডগোল শুরু হয়ে যায়। ইভিএম খুলতেই ক্রমশ এগিয়ে যেতে থাকে গেরুয়া শিবির। মাত্র ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই ম্যাজিক ফিগার অর্থাৎ ৪৬টি আসনে এগিয়ে যায় বিজেপি। হরিয়ানাতে গত কয়েক বছর ধরেই ক্ষমতায় বিজেপি। তবে গত বিধানসভা ভোটে সেখানে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পায়নি বিজেপি। সরকার গড়ার জন্য তাঁদের দরকার হয়েছিল জেজেপির সমর্থন। তবে এবার আর তেমন সঙ্কটে পড়তে হচ্ছে না বিজেপিকে। এবার একাই ম্যাজিক ফিগার গড়ার পথে ক্রমশ এগিয়ে যাচ্ছে পদ্মশিবির। মুখ্যমন্ত্রী নয়াব সিং সাইনি এ প্রসঙ্গে জানান, “গত ১০ বছরে অনেক কাজ করেছে বিজেপি সরকার। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মনোহরলাল খট্টর যে সিস্টেম তৈরি করেছেন তাতে উপকৃত হয়েছেন হরিয়ানাবাসী। তৃতীয়বার সরকার গড়ে সেই কাজকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব।”
অন্যদিকে ৩৭০ ধারা বাতিলের পরে জম্মু কাশ্মীরে এ বছর ছিল প্রথম ভোট। কার্যত দশ বছর পর ভোট হয়েছে উপত্যকায়। হরিয়ানায় গেরুয়া ঝড় বইলেও উপত্যকায় কিন্তু তেমন আশার দেখতে পাচ্ছে না বিজেপি। বরং সেখানে প্রায় ৪৯টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: কুস্তির পর রাজনীতির ময়দানে! মহিলারা ভোট দেবেন ভিনেশ ফোগাটকে?
হরিয়ানায় যে বিধানসভা জিতে ক্ষমতায় আসতে চলেছে বিজেপি, তা একরকম পরিষ্কার। হরিয়ানায় হাওয়া বদলাতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে মিমের। নেটিজেনরা বলতে শুরু করেছেন, ‘ওয়াক্ত বদল গয়া, জসবাদ বদল গয়া।’ আবার যাঁরা সকালে বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে মিম পোস্ট করেছিলেন, তাঁরা ব্যাকফুটে পড়ে গিয়েছেন। আর প্রথমে যাঁরা ব্যাকফুটে ছিলেন, তাঁরা এখন ফ্রন্টফুটে এসে পালটা কংগ্রেসকে খোঁচা দিচ্ছেন। গণনা শুরু হতেই দিল্লিতে কংগ্রেসের দফতরে গত রাতের উৎসব থেমেছে। যদিও এখনই হাল ছাড়ছে না হাত শিবির। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিং হুডা অবশ্য এখনও বলে চলেছেন, “হরিয়ানায় একাই সরকার গড়তে চলেছে কংগ্রেস। আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাব।” যদিও তেমনটা আদতে হচ্ছে না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। তবে জম্মু-কাশ্মীরে শেষপর্যন্ত কী দাঁড়ায় বিধানসভা ভোটের ফলাফল, সেদিকেই তাকিয়ে গোটা দেশ।