নড্ডার পরে কে? বিজেপির জাতীয় সভাপতি পদে কাকে বাছবে সঙ্ঘ?

Next BJP President: ইতিমধ্যেই এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। যতদূর জানা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ইটালিসফর সেরে ফেরার পরই দলের কার্যনির্বাহী সভাপতি নির্বাচন করা হবে।

প্রায় চার বছর ধরে বিজেপি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব সামলে এসেছেন জগৎ প্রকাশ নাড্ডা। এবং বলাই বাহুল্য দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন। তবে এবার সেই জে পি নড্ডা অংশ হয়েছেন মোদি মন্ত্রিসভায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দায়িত্ব এবার তাঁর কাঁধে। রবিবার রাতে রাষ্ট্রপতি ভবনে বাকি ৭০ জন সাংসদের সঙ্গেই শপথ নিয়েছেন তিনিও। ফলে আপাতত ফাঁকা বিজেপির জাতীয় সভাপতির পদ। কে বসতে চলেছেন সেই চেয়ারে? আপাতত সেটাই সবচেয়ে বড় চর্চার বিষয়।

ভোট মিটতে না মিটতেই মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা শিবরাজ সিংহ চৌহানকে ডেকে পাঠিয়েছিল বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। তিনি এসে দেখা করেন জেপি নড্ডার সঙ্গে। সেখান থেকেই জল্পনা শুরু হতে থাকে, এবার কি তবে বিজেপি সভাপতির দায়িত্ব যেতে চলেছে শিবরাজের কাছেই। তবে সেই জল্পনার অবসান ঘটে মোদির মন্ত্রিসভা ঘোষণার পরেও। এবার মন্ত্রিসভায় মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন তিনিও। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। স্বাভাবিক ভাবেই বিজেপির জাতীয় সভাপতির পদ ফাঁকাই থেকে গিয়েছে। যা এখন বিজেপি ও সঙ্ঘের সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ।

আরও পড়ুন: স্পিকারকে ডাল ছুঁড়েছিলেন! ওড়িশার নতুন মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝি আসলে কে?

ইতিমধ্যেই এ নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করে দিয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। যতদূর জানা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী তাঁর ইটালিসফর সেরে ফেরার পরই দলের কার্যনির্বাহী সভাপতি নির্বাচন করা হবে। দলের সংসদীয় কমিটি আপাতত একজন কার্যনির্বাহী সভাপতি নির্বাচন করবে। স্থায়ী জাতীয় সভাপতি না হওয়া পর্যন্ত তিনিই ওই দায়িত্ব সামলাবেন। সূত্রের খবর, দলের সংসদীয় কমিটি আপাতত নাড্ডাকেও সেই দায়িত্ব সামলাতে বলতে পারেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বের পাশাপাশি সেক্ষেত্রে দলের কার্যনির্বাহী সভাপতির দায়িত্বও পালন করতে হতে পারে নড্ডাকে। তবে সেক্ষেত্রে বিজেপির নিজস্ব নিয়মকানুনের লঙ্ঘন হতে পারে। কারণ দলের নিয়ম অনুযায়ী, এক সময় কোনও একজন একটিই পদের দায়িত্ব সামলাতে পারেন। কার্যনির্বাহী সভাপতি ততদিনই ওই দায়িত্ব সামলাবেন, যতদিন না সাংগঠনিক নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হচ্ছে।

বিজেপির সংবিধান অনুযায়ী, ৫০ শতাংশ রাজ্যে সাংগঠনিক নির্বাচন সম্পন্ন হলেই জাতীয় সভাপতি নির্বাচন করা হয়। মেম্বারশিপ ক্যাম্পেন শুরু হচ্ছে আগামী জুলাই মাসে। যা চলবে আগামী ৬ মাস। তার পরে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে নির্বাচিত হবে বিজেপির জাতীয় সভাপতি। নির্বাচিত জাতীয় সভাপতির টার্ম শুরু হবে ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে। এমনটাও হতে পারে, কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট যিনি হবেন, তিনিই পূর্ণ সময়ের সভাপতি নির্বাচিত হবেন। যেমনটা হয়েছিল জে পি নড্ডার সঙ্গে। ২০১৯ সালে দলের কার্যনির্বাহী সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন নড্ডা। পরে ২০২০ সালে দলের স্থায়ী জাতীয় সভাপতির দায়িত্ব পান তিনিই। এর আগে সেই দায়িত্বে ছিলেন অমিত শাহ। মোদির দ্বিতীয় দফায় স্বরাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব পান তিনি। ২০১৯ সালের ১৭ জুন সংসদীয় বোর্ড নড্ডাকে কার্যনির্বাহী সভাপতি নির্বাচন করে। তারপর ২০২০ সালের ২০ জানুয়ারি তিনি পূর্ণ সময়ের জাতীয় সভাপতি নির্বাচিত হয়। তার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে এই বছর জানুয়ারিতেই। তবে লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে সেই মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় দল। জুন মাস পর্যন্ত জাতীয় সভাপতি পদে রয়েছেন নড্ডা।

নতুন সভাপতি কে হবেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে দলের মধ্যে। তিনি যে সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ হবেন, সে কথাও পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে আরএসএস-এর তরফে। সূত্রের খবর, বিজেপির জাতীয় সভাপতি খোঁজার কাজ শুরু হতে চলেছে শীঘ্রই। সেক্ষেত্রে প্রাথমিক কাজ হতে চলেছে মেম্বারশিপ ক্যাম্পেন। তারপর জেলা, রাজ্যস্তরে দলের পদগঠন সারা হলে জাতীয় স্তরের সভাপতি নির্বাচনের কাজ শুরু হবে। তবে এবার জাতীয় সভাপতি পদপ্রার্থী যে শুধুমাত্র জাতীয় নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন না, তা পরিষ্কার। সেক্ষেত্রে বড় ভূমিকা থাকতে চলেছে আরএসএসের।

আরও পড়ুন:মোদির মন্ত্রিসভা ৩.০ তৈরি! মন্ত্রিত্বে কারা? পদ খোয়ালেন কারা?

এরই মধ্যে চর্চা শুরু হয়েছে, এই প্রথম মহিলা জাতীয় সভাপতি পেতে চলেছে বিজেপি। অনেকেই সেক্ষেত্রে স্মৃতি ইরানির নাম করছেন। অমেঠি থেকে লোকসভা ভোটে হেরে গেলেও দলের বিশ্বস্ত সদস্য বলে খ্যাতি রয়েছে স্মৃতির। সূত্রের খবর, আরএসএসের তরফে দলে মহিলা সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ এসেছে। সেক্ষেত্রে দলের সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রেও কি সেই ব্যাপারটাই নজরে রাখা হবে? উঠেছে প্রশ্ন। সূত্রের খবর, দলের জাতীয় সভাপতি হওয়ার লড়াইয়ে থাকতে চলেছেন অনুরাগ ঠাকুর, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিনোদ তাওড়ে, কে লক্ষ্মণ, সুনীল বনসাল, দেবেন্দ্র ফড়নবীস, ওম মাথুর এমনকী ওম বিড়লার মতো বিজেপি নেতারাও। এখন দেখার, দলের জাতীয় সভাপতি হিসেবে কার উপরে ভরসা রাখে আরএসএস ও বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব।

More Articles