ম্যানগ্রোভ বাঁচাতে সুন্দরবনে টহল মহিলা বাহিনীর, নয়া উদ্যোগে আশা দেখছেন স্থানীয়রা

BSF Special Women Force in Sundarban : ইতিমধ্যেই ২০ জন মহিলার বিশেষ একটি দলকে এই কাজে নিয়োগ করা হয়েছে।

সুন্দরবন, বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো ম্যানগ্রোভ অরণ্য। কেবল গাছ নয়, রয়েছে জলে কুমির এবং ডাঙায় বাঘ। স্থানীয় মানুষ এবং পর্যটকদের আনাগোনার পাশাপাশি এখানে চলে অন্য ‘কারবার’। সুন্দরবন কেবল পশ্চিমবঙ্গে নয়, রয়েছে বাংলাদেশেও। স্থলের পাশাপাশি জলপথেও আন্তর্জাতিক সীমানা নির্ধারিত রয়েছে। সে সব অস্বীকার করেই চলে চোরা কারবারের কাজ।

যেমন বসিরহাটের স্বরূপনগর থেকে হেমনগরের সামসের নগর। এই দীর্ঘ জায়গায় মোট সীমান্ত ৯৩ কিলোমিটার। তার মধ্যে ৫৩ কিলোমিটারে রয়েছে কাঁটাতারের দেওয়াল। বাকি ৪০ কিলোমিটার জল সীমান্ত। সেখানে কাঁটাতার নেই, কেবল রয়েছে বিএসএফের নজরদারি। কিন্তু সেই নজরদারির মধ্যে যে বিস্তর গলদ থেকে গিয়েছে, তার প্রমাণ বিভিন্নভাবে পাওয়া গিয়েছে।

এই গলদের সুযোগ নিয়েই নিজেদের ‘কাজ সেরে’ পালিয়ে যেত চোরা কারবারি এবং জলদস্যুরা। বিএসএফের নজরদারি এড়িয়ে জলপথে তারা সীমানা পেরত। দরিদ্র মৎস্যজীবীদের নৌকা, মাছ, কাঁকড়া ও অন্যান্য সামগ্রী লুঠ করে চলে যেত ওপারে। সেইসঙ্গে রয়েছে বিশালাকার ম্যানগ্রোভ। জঙ্গলে ঢুকে কখনও গাছ কেটে, কখনও মধু চুরি করে নিয়ে পাচার করত এই অসাধু ব্যক্তিরা। নজরদারি বাড়ালেও বারবার এই ঘটনায় মুখ পুড়ছিল বিএসএফের। জল সীমান্ত অরক্ষিত কেন, এই প্রশ্নের মুখে পড়ছিল তারা।

অবশেষে এই পাচার কাজ বন্ধ এবং সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ রক্ষায় নতুন উদ্যোগ নিল সীমান্তরক্ষা বাহিনী। আর এই কাজে মহিলাদের নিয়োগ করলো তারা। বিএসএফের স্পেশাল মহিলা বাহিনী জলপথে স্পিডবোটের মাধ্যমে এই নজরদারির কাজ করবে বলেজানা গিয়েছে। ইতিমধ্যেই ২০ জন মহিলার বিশেষ একটি দলকে এই কাজে নিয়োগ করা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, র‍্যাডার এবং অস্ত্রও। বঙ্গোপসাগরে ভারত বাংলাদেশ টি জংশনে এই টহলদারি নিয়মিত চলবে। শুক্রবার সন্দেশখালির বিহারী খালে তার মহড়াও করা হল। আপাতত সেখান দিয়েই লাগাতার চলবে নজরদারি।

ভারত বাংলাদেশের জলও সীমান্ত, বিশেষ করে সুন্দরবনের দিকে বাড়তি নজর দিচ্ছে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। জলদস্যু, চোরাচালানের মতো ঘটনা সেখানে যাতে আর না হয়, তার জন্য ভবিষ্যতে আরও বেশকিছু পদক্ষেপ নিতে পারে প্রশাসন। তবে বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত বিএসএফের এই স্পেশাল মহিলা ফোর্সের দিকেই এখন সবার নজর। লাগাতার নজরদারি চালালে কমতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা। ফলে সুন্দরবনের মানুষ, পশু এবং ম্যানগ্রোভও সুরক্ষিত থাকতে পারবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

More Articles