কর্মীদের মাইনে দেওয়ার টাকা নেই! বাড়ি বন্ধক রাখছেন খোদ বাইজু'স প্রতিষ্ঠাতা?

Byju's : পাবলিক স্টার্টআপ বাইজু'স নিজের কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো অবস্থাতেও নেই।

জনপ্রিয়তা ছিলই, তবে রমরমিয়ে ব্যবসা শুরু হয় কোভিড লকডাউনের পর্বে। বাড়ি থেকেই পড়াশোনা শুরু হতেই ব্যবসা বাড়ে বাইজু'স-এর। কিন্তু ২০২৩ এর প্রেক্ষিতে বাইজু'স-এর অবস্থা ঠিক কী? সংস্থার কর্মীদের মাইনে দিতে হিমশিম খাচ্ছেন এর মালিক। অবস্থা এমনই যে ঋণ নিয়ে মাইনে দিতে হচ্ছে কর্মীদের। বাইজুস-এর প্রতিষ্ঠাতা বাইজু রবীন্দ্রন, তাঁর নিজের বাড়ি এমনকী তাঁর পরিবারের সদস্যদের মালিকানাধীন বাড়িঘর বন্ধক রেখে কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার জন্য টাকা তুলছেন! বাইজুস একসময়ের সবচেয়ে মূল্যবান টেক স্টার্টআপ ছিল। কিন্তু ব্যাপক ক্ষতির পরে সংকটে পড়ে সংস্থা। এই বছরের মে মাসে, বিনিয়োগ সংস্থা BlackRock জানায়, ২০২২ সালের মার্চ মাসে বাইজু'স-এর মূল্য ছিল ২২ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে কমে তা এসে দাঁড়িয়েছে ৮.৪ বিলিয়ন ডলারে। গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ প্রসাস জুন মাসে জানায়, বাইজু'স-এর বর্তমান বাজার মূল্য ৫.১ বিলিয়ন ডলার।

বেঙ্গালুরুতে প্রাক্তন বিলিয়নিয়ার বাইজু রবীন্দ্রনের পরিবারের মালিকানাধীন দু'টি বাড়ি রয়েছে। এপসিলনে বাইজুর নিজস্ব একটি ভিলা তৈরি হচ্ছে। এপসিলন হচ্ছে মূল শহরের অভিজাত এক আবাসন। সূত্রের খবর, এই ভিলা ও দু'টি বাড়ি বন্ধক রেখেছেন রবীন্দ্রন। বিনিময়ে ১২ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছেন তিনি। এই ১২ মিলিয়ন ডলার নিয়ে বাইজু কী করবেন? পাবলিক স্টার্টআপ বাইজু'স নিজের কর্মীদের বেতন দেওয়ার মতো অবস্থাতেও নেই। বাইজু'স-এর মূল সংস্থা থিঙ্ক অ্যান্ড লার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের ১৫,০০০ কর্মচারীকে বেতন দেওয়ার জন্যই বাড়ি বন্ধক রেখে নেওয়া টাকা ব্যবহার করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন- স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা হবে ডিজিটাল! কেন আজ ভেঙে পড়ছে তিলে তিলে গড়া বাইজুস সাম্রাজ্য

বাইজু রবীন্দ্রন নিজে কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। সংস্থাকে সচল রাখতে এবং এর আর্থিক চাপ কমানোর জন্য নিজের সমস্তটা দিয়েই ঝাঁপিয়ে পড়েছেন তিনি। কিছুকাল আগেও ভারতের সবচেয়ে মূল্যবান টেক স্টার্টআপ ফার্ম ছিল বাইজু'স। প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারে বাচ্চাদের এই ডিজিটাল রিডিং প্ল্যাটফর্ম বিক্রি করার প্রক্রিয়াও চলছে। ১.২ বিলিয়ন ডলার ঋণের সুদ শোধ না করতে পারার জন্য ঋণদাতাদের সঙ্গে আইনি লড়াইও চলছে বাইজু-র।

রবীন্দ্রনের সম্পত্তির পরিমাণ একসময় ছিল প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলার। ব্যক্তিগত স্তরে প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়েছেন তিনি। গত কয়েক বছরে শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে যে ৮০০ মিলিয়ন ডলার তুলেছিলেন রবীন্দ্রন তা তিনি আবার কোম্পানিই ঢেলে দেন তিনি। যার ফলে নগদ অর্থের সংকটে পড়ে যান ভারতের এই বিখ্যাত ব্যবসায়ী।

গত মাসেই বাইজু একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন বলছে, মহামারীর সময়েই রমরমিয়ে ওঠে বাইজু'স-এর ব্যবসা। থিঙ্ক অ্যান্ড লার্ন-এর লোকসানের পরিমাণ কিছুটা কমে যায় তাতে। একটি ভারতীয় ফেডারেল এজেন্সিও বাইজু'স স্টার্টআপের বিদেশি অনুদানের বিষয়ে এবং জরিমানার বিষয়ে একটি তদন্ত চালায়। গত সপ্তাহে একটি বিবৃতিতে বাইজু'স জানায়, যদি কোনও অনুদান থেকেও থাকে তা নামমাত্র।

More Articles